ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে শাকিব খানের ‘তুফান’ সিনেমা। রায়হান রাফী নির্মিত এই ছবি ইতোমধ্যেই ব্লকবাস্টার তকমা পেতে চলেছে। ফলে গেল তিনটি ঈদেই পরপর তিনটি সফল সিনেমা উপহার দিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের মেগাস্টার শাকিব খান।
তুফানের দারুণ সফলতার পর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শাকিব। যেখানে ক্যারিয়ার, ভক্ত-অুনরাগী, ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
বাংলাদেশের সুপারস্টার হওয়ার কোনও সুবিধা বা অসুবিধা আছে কি না, এমন প্রশ্নে নায়ক বলেন — ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, বড় পজিশন লিড করার সুবিধা-অসুবিধা সব জায়গায় আছে। বড় পজিশনে যিনি থাকেন, তিনি এটা অনুধাবন করতে পারেন। তার আশপাশের কাছের মানুষরা অনুভব করতে পারেন। এখন আমাদের ইন্ডাস্ট্রি আবার নতুন করে ভালো স্থানে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে গ্লোবালি আমাদের অবস্থান মজবুত হচ্ছে। করোনা পরবর্তী আমরা দারুণ এক সুসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এ কারণে অনেক রকম বাঁধার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, ইদানিং সেটা একটু বেশি অনুভব করছি। আশা করব, অদূর ভবিষ্যতে মানুষের ভালোবাসায় সব বাঁধা অতিক্রম করে আমি আমার গন্তব্যের দিকে যাবো।’
শাকিব বলেন, ‘‘আমার কাঁধে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি বা কোনও কিছুর ভর আছে এটা অনুভব করিনা। আমার অনুভবটা ভালোবাসার, ফ্যানদের জন্য। যতদিন বেঁচে থাকবো এই ভালোবাসার মানুষদের জন্য কাজ করে যাবো। তবে আমি দীর্ঘদিন, অনেকবছর আগে থেকে স্বপ্ন দেখেছি, বাংলাদেশের সিনেমাকে গ্লোবালি দেখতে চাই। প্রথমে অনেকেই ভাবতো এগুলো আমি কথার কথা বলছি, এগুলো সম্ভব নয়। কিন্তু যেটা আমি স্বপ্ন দেখতাম সেটাই এখন হচ্ছে। গ্লোবালি অফিসিয়ালি আমাদের সিনেমা রিলিজ হচ্ছে। গতবছর ‘প্রিয়তমা’’সিনেমায় গ্লোবালি অনেক বড় সাফল্য এসেছে। সেই নিউইয়র্ক, টরেন্টো, লন্ডন, ডাবলিন, ভেনিস, সিডনি, প্যারিস, মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিখ্যাত সব স্থানে গ্লোবাল মার্কেটে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। নিকট ভবিষ্যতে আমরা আরও ভালো করবো। আমার বিশ্বাস, গ্লোবালি বাংলা সিনেমা অনেক বড়স্থানে প্রতিষ্ঠা পেতে যাচ্ছে। আমার স্বপ্নগুলো একে একে পূরণ হচ্ছে, দেখতে দেখতে আমি এগিয়ে যাচ্ছি। আমার স্বপ্নের পরিধি আরও বড় হচ্ছে।’’
একটা লম্বা সময় ধরে ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রির সেরা নায়ক শাকিব খান। এত বছরেও আপনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী কেন, এমন প্রশ্নের নায়কের সাফ উত্তর- ‘এখানে আমি প্রতিযোগিতা করতে আসিনি। যে যার অবস্থান থেকে ভালো কাজের চেষ্টা করছে। আমার সিনেমা মানুষ দেখছে, অন্যদের সিনেমাও তো দেখছে। আমি এটাকে প্রতিযোগিতার জায়গা হিসেবে কোনোদিন দেখিনি। শুরু থেকে আমি আমার কাজটি সঠিকভাবে করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি-সহ আমাদের এখানকার আরিফিন শুভ ওপার বাংলার বুম্বাদা অর্থাৎ প্রজেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, জিৎ, দেব প্রত্যেকে বাংলা সিনেমার নায়ক। বাংলা সিনেমার কারণে আমরা মানুষের ভালোবাসা পাই। আমার বিশ্বাস তারা প্রত্যেকে এটাই মনে করেন, নিজেদের সেরাটা দিয়ে বাংলা সিনেমাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে।’
ক্যারিয়ারে একের পর এক সাফল্যে থাকলেও শাকিবকে নিয়ে ব্যক্তিজীবনে বিতর্কের শেষ নেই। এতসব বিতর্ক সামলান কীভাবে? শাকিব বললেন, ‘কিছু মন্দ মানুষ আলোর মাঝেও কালো খোঁজে। আমি এসবে ঘুরে তাকিয়ে সময় নষ্ট করিনা। অজ্ঞরা অনেক সময় মহাপন্ডিতের মতো কথা বলে, যেগুলো ভিত্তিহীন। এগুলো দেখলে জীবন থেকে সময়গুলো বৃথা যাবে। আমার ধারণা, কোনো বিবেকবান ও জ্ঞানী মানুষও এসব কেয়ার করেন না।’
সবশেষ শাকিবিয়ানদের নিয়ে নায়ক বলেন, ‘শাকিবিয়ানদের ভালোবাসার কাছে আমি সবসময় নতজানু হই। তাদের ভালোবাসা আমি অনুভব করি, কিন্তু সবকিছু ভাষায় বা কোনো শব্দে প্রকাশ করা যায় না। পৃথিবীর আনাচে-কানাচে যে প্রান্তে আমি গিয়েছি সেখান থেকে ভালোবাসা পেয়েছি। তাদের এই ভালোবাসার কারণে আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি। এই ভালোবাসায় আমি অনন্তকাল বেঁচে থাকতে চাই।’