করোনা মহামারী শ্রেণীক্ষে পাঠদানের কার্যকরী বিকল্পের নাম অনলাইন ক্লাস। অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে অনায়াসে যেকোন পরিস্হিতিতে যেকোন স্হান থেকে সহজে শ্রেণী পাঠদানে অংশগ্রহণ সম্ভব। কিন্তু অনলাইন ক্লাসের অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো অনলাইন ক্লাসে মনোযোগ ধরে রাখা।
ক্লাসে মনোযোগী হওয়ার ৫ টি উপায়ঃ
১. ক্লাসের আগের প্রস্তুতিঃ
মনোযোগ বিষয়টি সবসময় প্রস্তুতির উপর নির্ভর করে। অনলাইল ক্লাস শুরু আগে একটি মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে শিক্ষক ক্লাসে কি কি পাঠদান করতে পারেন। প্রয়োজনে পূববর্তী ক্লাসের পাঠ সম্পর্কে পুনরায় চোখ বুলিয়ে নিতে হবে।
অনলাইন ক্লাসের প্রধান শর্ত ভালো ইন্টারনেট সংযোগ। এক্ষেত্রে ক্লাস শুরুর পূর্বে ইন্টারনেট সংযোগ চেক করে নিতে হবে। প্রয়োজনে ভালো নেটওয়ার্কের জন্য আর্দশ স্হানে বসতে হবে।
সব সময় অনলাইন ক্লাসের সময় টেবিলে বসে ক্লাস করার চেষ্টা করতে হবে। মার্জিত ভাবে ক্যামেরা ঠিক করে ভিডিও অন রাখতে হবে। প্রয়োজনে অডিও অন করে শিক্ষকের সাথে কথা বলতে হবে।
এমন জায়গা চিহ্নিত করতে হবে যেখানে বাইরের পরিবেশের ঝামেলা নেই এবং ভালো ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যায়। মনে রাখতে হবে মুক্ত পরিবেশ বাহ্যিক চিন্তাকে মন্হর করে এবং পড়াশোনায় মনোযোগী হতে সহায়তা করে।
২. নোট তৈরি করাঃ
শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক যা পড়াচ্ছে সেটি খাতা রাফ নোট করে রাখতে পারো। তাহলে অনলাইন ক্লাসে মনোযোগ ধরে রাখতে যেমন সহজ হবে তেমনি পরবর্তী সময়ে পাঠ আয়ত্তে সহজ হবে।
সরাসরি শ্রেণীক্ষের মতে শিক্ষকের আলোচ্য যেসব বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় সেগুলো রাফ নোটে টুকে রাখতে হবে। এতে পরবর্তী সময়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিকে আরো বেশি মনোযোগী হতে সহায়তা করবে।
অনলাইনে যখন দীর্ঘক্ষণ মনোযোগী থাকার পর সব কিছু মনে রাখা কষ্টকর হবে তখন এই ক্লাস নোটই সবচেয়ে বেশি সহায়তা করবে।
অনলাইন ক্লাস রের্কড করে পরবর্তী সময়ের জন্য সেটি ডাউনলোড করে সেইভ করেও ক্লাস ভিডিও নোট তৈরি করা সম্ভব। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ভিডিও ফাইল গুলো নিদিষ্ট তারিখ ও টপিকের নাম অনুসারে সেইভ করে রাখতে পারো।
৩. সময়ের দিকে মনোযোগী হওয়াঃ
অনলাইন ক্লাসের মনোযোগ ধরে রাখার আরেকটি সেরা উপায় হলো সময়ের প্রতি মনোযোগী হবে। প্রতিটি ক্লাসের একটি নিদিষ্ট ব্যপ্তিকাল আছে। সে অনুযায়ী ক্লাস শুরুর পূর্বে মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে।
দীর্ঘক্ষণ ক্লাসের ক্ষেত্রে শিক্ষকের সাথে আলোচনা করে ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিতে হবে। কিন্তু কোন ভাবে এসময় মোবাইল বা পিসি চালানো যাবে না। এসময় ধীরস্হির হয়ে বিশ্রাম নিতে হবে।
একটানা কোন টপিকে আলোচনা শুনতে শুনতে একসময় মনোযোগ একসময় ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে। মাঝখানের এই বিরতি অনলাইন ক্লাসের একগয়েমিকে প্রতিহত করে এবং অনলাইন ক্লাসকে সহনীয় করে তোলে।
৪. শিক্ষকের সাথে কথা বলাঃ
অনলাইন ক্লাসে চুপচাপ বসে থাকলে একসময় আলসেমি এবং ঘুম পেতে পারে। তাই শিক্ষক আলোচনা করার সময় কথা বলতে হবে। কোন প্রশ্ন করলে সাথে সাথে রেসপন্স করতে হবে।
এছাড়া ক্লাসের পড়ার বিষয়ের সাথে সামজ্ঞস্য থাকলে পূবর্বতী ক্লাসের যেকোন সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করতে পারো। শিক্ষকের সাথে নিয়মিত অনলাইনে যোগাযোগ ব্যাপারটি অনলাইনে মনেযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
কোন টপিক বুঝতে না পারলে সাথে সাথে শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে বিনয়ের সাথে প্রশ্ন করতে হবে। এতে শুধুমাত্র প্রশ্নকর্তারই নয় বরং সমগ্র ক্লাসের সবার মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।
৫. রুটিন তৈরি করাঃ
অনলাইন ক্লাসে মনোযোগী না হওয়ার অভ্যাস শিক্ষা জীবনে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পেলতে পারে। সেজন্য যখন তুমি বুঝতে পারবে তোমার অনলাইন ক্লাসে সবার মতো মনোযোগের অভাব রয়েছে তখন মনোযোগী হওয়ার জন্য ভালো একটি রুটিনই পারে তেমার মনোযোগ রক্ষায় সহায়তা করতে।
অনলাইন ক্লাসের পাঠ্যক্রম পুনরায় ভিডিও বা নোট থেকে রিভিশন দিতে হবে। যেই সময় তোমার মনেযোগ সব চেয়ে বেশি থাকে এমন একটি সময় নির্ধারণ করতে হবে।
এক্ষেত্রে তুৃমি অনলাইন রুটিন তৈরি করতে পারো। বর্তমানে অনেক মোবাইল এপস রয়েছে। যেগুলো দিয়ে অনায়াসে রুটিন তৈরি করতে পারবে।
রুটিনটি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে সেখানে সময়ের সুষম বন্টন নিশ্চিত হয়। রুটিনে পড়ালেখার পাশাপাশি কো-কারিকুলাম এক্টিভিটির জন্য সময় রাখতে হবে।
মনোযোগ বিষয়টি মূল মনস্ত্বিক। মানব মস্তিষ্ক কে ভালোভাবে কাজে লাগাতে হলে আগেই মস্তিষ্কে জানাতে হবে, সেটি নিয়ে চিন্তা করতে হবে; যে কাজটি তুমি করতে চাও।
এজন্য মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য, যতবারই মনোযোগী হতে চাও তত বারই প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে সে বিষয়ে চিন্তা করতে হবে। এতে মস্তিষ্ক অনায়াসে অনলাইন ক্লাস সহ যাবতীয় বিষয়ে মনোযোগী হতে সহায়তা করবে।