দেশে ইলেকট্রনিক পণ্যের বাজার ক্রমসম্প্রসারমাণ। প্রতি বছর রমজান ও ঈদের আগে চাহিদা বেড়ে যায় ইলেকট্রনিক পণ্যের। যেহেতু ইলেকট্রনিক পণ্য কিনতে হয় দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করার জন্য, তাই কেনার আগে গুণমান যাচাই করে নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। ইলেকট্রনিক পণ্য কেনার আগে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর দিকে অবশ্যই নজর দেয়া উচিত:
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র
১. পরিচিত ব্র্যান্ডের এসি কিনুন।
২. বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মানচিহ্ন আছে কিনা, তা নিশ্চিত হয়ে নিন।
৩. ঘরের আকার অনুযায়ী এসি কিনুন। টাকা বাঁচাতে বড় কক্ষের জন্য কম ক্ষমতার এসি কিনবেন না।
৪. বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তির এসি কিনুন। এতে বিদ্যুৎ খরচ কমবে।
মনে রাখতে হবে, এসি একটি যন্ত্র। এ যন্ত্রেরও যত্নের প্রয়োজন। তাই নিয়মিত পরিষ্কার করে রাখাসহ রক্ষণাবেক্ষণের দিকে নজর বাড়াতে হবে।
মাইক্রোওয়েভ ওভেন
১. মাইক্রোওয়েভ ওভেন কেনার আগে সবার আগে জানা দরকার কত বড় দরকার। পরিবার বড় হলে বড় মাইক্রোয়েভ ওভেন কেনাই ভালো।
২. সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক হাজার ওয়াটের ওভেনে খাবার দ্রুত ও সহজে গরম হবে। অন্যদিকে ৭০০ বা তার কম ওয়াটের মাইক্রোওয়েভে খাবার ধীরে গরম হবে। এক্ষেত্রে দামের ক্ষেত্রেও হবে কমবেশি।
৩. যত দিন যাচ্ছে, মাইক্রওয়েভ ওভেন ব্যবহারের নতুন ফিচার যুক্ত হচ্ছে। অটোমেটিক ডিফ্রস্ট, টাইমিং ইত্যাদি নতুন ধরনের ফিচার আছে। কিছু মাইক্রোওয়েভ ওভেনে কনভেকশন ওভেন, টোস্টার, গ্রিল এমন কয়েকটি যন্ত্রের কাজ একসঙ্গে করা যায়। এছাড়া বাড়িতে শিশু থাকলে চাইল্ড লক আছে, এমন ওভেন কেনা যেতে পারে।
৪. একটা মাইক্রোওয়েভ ওভেনে মোটামুটি ১০ বছর চলে যায়। তার বেশি দিনও ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই পুরনো হয়ে গেছে বলেই একটি মাইক্রোওয়েভ ওভেন বাদ দিয়ে নতুন কেনার দরকার নেই।
রাইস কুকার
১. রাইস কুকার কেনার আগেও অবশ্যই পরিবারের সদস্যদের কথা মাথায় রাখতে হবে। সদস্য সংখ্যা পাঁচ-ছয় হলে তিন-পাঁচ লিটারের রাইস কুকার কিনতে পারেন।
২. রাইস কুকার ব্যবহার করা সহজ হওয়া দরকার। বাজারে আবার অনেক অ্যাডভান্স রাইস কুকার পাওয়া যায়, এগুলোয় ডিজিটাল কন্ট্রোল দেয়া থাকে। আবার সেল্ফ টাইমার বা ডিলে স্টার্ট, অটোমেটিক কিপ ওয়ার্ম, স্লো কুকিং, ভাপে সেদ্ধ করা ইত্যাদির ব্যবস্থাও থাকে।
৩. কিছু কিছু রাইস কুকারের ঢাকনা গ্লাসের হয়। এগুলোর মাধ্যমে ভেতরে দেখাও যায়। আবার কোনো কোনো রাইস কুকারে স্টেইনলেস স্টিলের ঢাকনা দেয়া থাকে। এক্ষেত্রে নিজের সুবিধা অনুযায়ী ঢাকনা দেয়া রাইস কুকার কিনুন।
৪. এখন মাল্টিপারপাস রাইস কুকারও পাওয়া যায়। একান্নবর্তী পরিবার হলে এ রাইস কুকারে একসঙ্গে অনেক কিছু রান্না করতে পারবেন। এমন অনেক রাইস কুকার আছে, যাতে একসঙ্গে ভাত রান্না ও সবজি, মাছ, মাংস স্টিম করতে পারবেন। আবার কোনো কোনো রাইস কুকারে স্যুপ গরম করা যাবে।
ব্লেন্ডিং মেশিন
১. কাজের সুবিধা অনুযায়ী মোটর ক্যাপাসিটি দেখে ব্লেন্ডার কিনতে হবে। অল্প কাজের ক্ষেত্রে ২০০ বা ৩০০ ওয়াটের ব্লেন্ডার মেশিন ব্যবহার করা যেতে পারে। কমপক্ষে ৫০০ ওয়াটের মোটর দেখে কিনলে সব ধরনের কাজ করা যাবে।
২. ব্লেন্ডারের ব্লেড অবশ্যই স্টেইনলেস স্টিলের দেখে কিনতে হবে। বেশির ভাগ সময়ে পানির সাহায্যে ব্লেন্ডারে কাজ করতে হয়। পানিতে কাজ করার ফলে মরিচা পড়ে। কেনার সময় স্টেইনলেস স্টিলের ব্লেড দেখে কিনলে মেশিনে মরিচা ধরবে না।
৩. ব্লেন্ডারে মোটর পরিচালনা করার জন্য অপশন সংখ্যা থাকে। অপশনের সংখ্যা বেশি থাকলে ব্লেন্ডারের দাম বেশি ও বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। সুতরাং অপশন নির্বাচন করার আগে পরিবারের প্রয়োজনীতার কথা মাথায় রাখতে হবে।
৪. চতুর্থ যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে তা হচ্ছে মোটর সেফটি। অর্থাৎ ওভারলোড বা থার্মাল প্রোটেকশন রয়েছে কিনা। বর্তমান সময়ে থার্মাল প্রোটেকশন বিভিন্ন যন্ত্রাংশে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে মেশিনে অতিরিক্ত চাপ পড়লে আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যাবে।