হিমাগারে পাটাতনে বেরিয়ে আছে শবনম বুবলীর লাশ, তার দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে বসে আছেন শরিফুল রাজ। এমন করুণ প্রেক্ষাপট ফুটে উঠেছিল ‘দেয়ালের দেশ’ ছবির ফার্স্ট লুক পোস্টারে। গত বছরের শেষাংশে প্রকাশ করা সেই পোস্টার দারুণ দাগ কাটে সিনেমা প্রেমিদের হৃদয়ে। কবে মুক্তি পাবে সিনেমাটি এমন প্রশ্ন আসতে থাকে। কিন্তু ছবিটির নির্মাতা নিরব থেকেছেন। দর্শক জানতে পারেনি মুক্তির তারিখ। এবার ছবিটির আনুষ্ঠানিক মুক্তির তারিখ ঘোষণা দিলেন নির্মাতা। জানালেন আগামী ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাবে ছবিটি।
শুক্রবার দ্বিতীয় পোস্টার প্রকাশের মাধ্যমে নতুন মুক্তির তারিখ জানানো হয়। নতুন এই পোস্টারেও খানিকটা রহস্য রেখেছেন নির্মাতা। ঠিক সন্ধ্যে নামার মুখে শবনম বুবলী ও শরিফুল রাজ বসে আছে সমান্তরালে। যাতে পুরোপুরি নয়, অর্ধেক শরীর দেখানো হয়েছে। পড়নে লাল টকটকে শাড়ি, খোপায় ঝুলে আছে বেলী ফুলের মালা, হইল চেয়ারে বসে আছেন বুবলী। অপরপ্রান্তে রাজ। কিছুটা বিভাগী সে। চোখে মুখে হাহাকার আর উদানিসতা স্পষ্ট।
ইতোমধ্যে সেন্সরবোর্ডের সদস্যদের ভূয়সী প্রশংসা নিয়ে সেন্সরছাড়পত্র হাতে নিয়েছে ‘দেয়ালের দেশ’। বাংলাদেশ পরিচালক ও প্রদর্শক সমিতিতে ঈদুল ফিতরে মুক্তির জন্য নিবন্ধনও করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সমিতির অফিস সচিব সৌমেন রায় বাবু।
‘দেয়ালের দেশ’ ছবির মাধ্যমে প্রথমবার জুটিবদ্ধ হয়েছেন শরিফুল রাজ ও বুবলী। পরিচালনার পাশাপাশি ছবিটির কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন মিশুক মনি। সিনেমাটির সহ-প্রযোজকও তিনি। নির্মাতা জানান, অনুদানের ছবি নিয়ে এক ধরনের গৎবাঁধা চিন্তা আছে, সেসবের বাইরে দুর্দান্ত গল্প বলার চেষ্টা আমরা করেছি ‘দেয়ালের দেশ’ চলচ্চিত্রে। আশা করি, একটা ভাল টিম ওয়ার্কের ছাপ পুরো ছবি জুড়ে দেখতে পাবেন দর্শকরা।
সরকারি অনুদানে নির্মিত ছবিটির গল্প নিয়ে একরাশ মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন রাজ। সেই মুগ্ধতা নিয়ে সিনেমাটিতে অভিনয়ের কথাও জানালেন তিনি। রাজের ভাষ্য, পেশাগত কারণে অনেক স্ক্রিপ্টই তো পড়তে হয় কিন্তু ‘দেয়ালের দেশ’ এর স্ক্রিপ্টে এত ডিটেইলস এত যত্ন স্পষ্ট যে আমি এই ছবির অংশ হতে বাধ্য হয়েছি। পর্দায় আমাদের কেমিস্ট্রি ফুটিয়ে তোলার জন্য আমি, বুবলী সহ টিমের সবাই মিলে শুটিংয়ে যাওয়ার আগে রিহার্সেল করেছি। চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নিতে চুল, দাড়ি বড় করার সঙ্গে সঙ্গে অনেকটা ওজনও আমাকে কমাতে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমাদের এই চেষ্টার ফসল দর্শকের জন্য উপভোগ্য হবে।
বুবলী বলেন, গল্প পড়েই ভীষণ ভালো লেগেছিল। আমরা প্রায়ই বলি ভিন্ন রকম গল্প, ভিন্ন ধরনের চরিত্র। কিন্তু অনেক সময় পর্দায় সে বিষয়টা পরিষ্কার বোঝা যায় না। এ সিনেমাটি ব্যতিক্রম। এর গল্পটা আসলেই ভিন্ন আঙ্গিকের। এ ধরনের চরিত্রে এর আগে আমার কাজ করা হয়নি। বিশেষ করে আমার জন্য এই ছবিতে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল। কারণ তখনও অবধি আমি ফুল কমার্শিয়াল ছবির নায়িকা। আর এই ছবিতে আমাকে নায়িকা নয় চরিত্র হয়ে উঠতে হবে এবং সেটাকে বিশ্বাসযোগ্য করতে হবে। সে ব্যাপারে বিশেষ করে আমার পরিচালক এবং আমার সহশিল্পীরাও দারুণভাবে হেল্প করেছে। সব অভিনয়শিল্পী দারুণ অভিনয় করেছেন এই সিনেমায়। নির্মাতাও পূর্ণ সততা নিয়ে বানিয়েছেন সিনেমাটি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, অনুদানের সিনেমা নিয়ে যে ট্যাবু সৃষ্টি হয়েছে, সেটা ভেঙে দেবে দেয়ালের দেশ।