Close Menu
  • Technology
  • Entertainment
  • Lifestyle
  • Travel
  • Sports
  • Exclusive
  • Funny
  • Recipe
Facebook X (Twitter) Instagram
Believe No Border Bangla
  • Technology
  • Entertainment
  • Lifestyle
  • Travel
  • Sports
  • Exclusive
  • Funny
  • Recipe
Believe No Border Bangla
Home » ক্লাইমেট চেঞ্জ মোকাবেলায় টেকনোলজির ভূমিকা
Technology News

ক্লাইমেট চেঞ্জ মোকাবেলায় টেকনোলজির ভূমিকা

December 30, 202311 Mins Read

জলবায়ু পরিবর্তন: ক্লাইমেট চেঞ্জ কী? কীভাবে এবং কেন ঘটছে? সে বিষয়গুলো আমাদের বুঝতে হবে। চলুন বুঝে নেই। কোনও একটি জায়গায় বছরের পর বছর ধরে আবহাওয়ার যে গড়-পড়তা ধরন, তাকেই বলা হয় জলবায়ু। আবহাওয়ার সেই চেনাজানা ধরন বদলে যাওয়াকেই বলা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। পৃথিবী গরম হয়ে পড়ছে এবং তার ফলে দ্রুত বদলে যাচ্ছে আবহাওয়ার বহুদিনের চেনাজানা আচরণ।

ক্লাইমেট চেঞ্জ

জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি কী?
মানুষ – প্রথমে মানুষ অর্থাৎ আমাদের জন্য এই পরিবর্তনের অর্থ কী? বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ুর এই পরিবর্তনে বদলে যাবে আমাদের জীবন যাপন। পানির সঙ্কট তৈরি হবে। খাদ্য উৎপাদন কঠিন হয়ে পড়বে।

কোনো কোনো অঞ্চল বিপজ্জনক মাত্রায় গরম হয়ে পড়বে, এবং সেই সাথে সমুদ্রের পানি বেড়ে বহু এলাকা প্লাবিত হবে। ফলে সে সব জায়গা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।

চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়া – অতিরিক্ত গরমের পাশাপাশি ভারি বৃষ্টি এবং ঝড়ের প্রকোপ অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকবে। ফলে জীবন এবং জীবিকা হুমকিতে পড়বে। গরীব দেশগুলোতে এসব বিপদ মোকাবেলার সক্ষমতা কম বলে তাদের ওপর এই চরম আবহাওয়ার ধাক্কা পড়বে সবচেয়ে বেশি।

পরিবেশ – তাপমাত্রা বাড়ায় উত্তর মেরুর জমাট বাধা বরফ এবং হিমবাহগুলো দ্রুত গলে যাচ্ছে। ফলে সাগরের উচ্চতা বেড়ে উপকুলের নিচু এলাকাগুলো ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।

এছাড়া সাইবেরিয়ার মত অঞ্চলে মাটিতে জমে থাকা বরফ গলতে থাকায় বরফের নিচে আটকে থাকা মিথেন গ্যাস বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়বে। ফলে, মিথেনের মত আরেকটি গ্রিনহাউজ গ্যাস জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। পৃথিবীর উষ্ণতা তাতে আরো বাড়বে, এবং বন-জঙ্গলে আগুন লাগার ঝুঁকি বাড়বে।

ভূমি ও মহাসাগরের তাপমাত্রা বাড়ছে
প্রকৃতি- তাদের চির চেনা বসতির আবহাওয়া বদলের জেরে অনেক প্রাণী নতুন জায়গায় চলে যাবে বা যাওয়ার চেষ্টা করবে।

কিন্তু জলবায়ুর এই পরিবর্তন এত দ্রুত হারে এখন ঘটছে যে অনেক প্রজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। যেমন, বরফ গলতে থাকায় পোলার বিয়ার বা উত্তর মেরুর শ্বেত ভালুকের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে।

পাশাপাশি, আটলান্টিক মহাসাগরের স্যামন মাছ বিপন্ন হবে, কারণ যেসব নদীতে ঢুকে তারা ডিম পেড়ে বাচ্চার জন্ম দেয়, সেগুলোর পানি গরম হয়ে যাচ্ছে।

ট্রপিক্যাল অঞ্চলের কোরাল রিফ বা প্রবাল-প্রাচীর উধাও হয়ে যেতে পারে, কারণ বায়ুমণ্ডলের অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড সাগরের পানিতে মিশে পানির অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে।

ট্রপিক্যাল অঞ্চলের কোরাল রিফ বা প্রবাল-প্রাচীর উধাও হয়ে যেতে পারে কারণ বায়ুমণ্ডলের অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড সাগরের পানিতে মিশে পানির অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে

কেন এই জলবায়ু পরিবর্তন
প্রাকৃতিক কারণে জলবায়ুতে স্বাভাবিকভাবেই কিছু পরিবর্তন হয়। কিন্তু যে মাত্রায় এখন তাপমাত্রা বাড়ছে তার মানুষের কর্মকাণ্ডেই প্রধানত দায়ী।

মানুষ যখন থেকে কল-কারখানা এবং যানবাহন চালাতে বা শীতে ঘর গরম রাখতে তেল, গ্যাস এবং কয়লা পোড়াতে শুরু করলো সেই সময়ের তুলনায় পৃথিবীর তাপমাত্রা এখন ১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে।

বায়ুমণ্ডলে অন্যতম একটি গ্রিন হাউজ গ্যাস কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ উনবিংশ শতকের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।। গত দুই দশকে বেড়েছে ১২ শতাংশ।

বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণেও বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন বাড়ছে। গাছপালা কার্বন ধরে রাখে। ফলে, সেই গাছ যখন কাটা হয় বা পোড়ানো হয়, সঞ্চিত সেই কার্বন বায়ুমণ্ডলে নিঃসরিত হয়।

যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করে
কী ঘটবে ভবিষ্যতে?
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, শিল্প বিপ্লব শুরুর আগে বিশ্বের যে তাপমাত্রা ছিল তার থেকে বৃদ্ধির মাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা গেলে বড় ধরণের বিপদ এড়ানো যাবে। তা না পারলে বিপজ্জনক হয়ে পড়বে প্রকৃতি, পরিবেশ এবং মানুষের জীবন।

অনেক বিজ্ঞানীর আশঙ্কা যে ভয়ঙ্কর এই পরিণতি ঠেকানোর আর কোনো উপায় নেই এবং চলতি শতকের শেষে গিয়ে বিশ্বের তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। তা হলে এর প্রভাব বিশ্বের একেক জায়গায় একেক রকম হবে:

ব্রিটেনে বৃষ্টিপাতের মাত্রা প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গিয়ে ঘনঘন বন্যা হবে।
সাগরের উচ্চতা বেড়ে প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের ছোট অনেক দ্বীপ বা দ্বীপরাষ্ট্র বিলীন হয়ে যেতে পারে।
আফ্রিকার অনেক দেশে খরার প্রকোপ বাড়তে পারে এবং পরিণতিতে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ায় অতিরিক্ত গরম পড়তে পারে এবং খরার প্রকোপ দেখা দিতে পারে।

বিজ্ঞানীরা কী করছেন?
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে এবং বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞান বাড়ছে।

কোনও একটি জায়গায় আবহাওয়ার চরম আচরণ যেমন অতিবৃষ্টি বা অতিরিক্ত গরমের সাথে জলবায়ু পরিবর্তনের যোগাযোগ খুঁজে পেতে বিজ্ঞানীরা এখন সমর্থ হচ্ছেন। ফলে, এধরনের চরম আবহাওয়ার পূর্বাভাস ভবিষ্যতে সহজতর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সমাধান
জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস
জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে তা থেকে অধিক মাত্রায় কার্বন-ডাই গ্যাস নির্গত হয়। প্রতিনিয়ত আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবে তেল, গ্যাস বিশেষ করে কয়লা ব্যবহার করি। বায়ুমণ্ডলে নিঃসরিত কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস সূর্য থেকে আগত তাপ আটকে রেখে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে জীবাশ্ম জ্বালানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ই্স্যু। তাপমাত্র বৃদ্ধি রোধে অবশ্যই দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করতে হবে। তবে জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনে প্রথম সারির দেশগুলো (অস্ট্রোলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত) এই জ্বালানি ব্যবহার হ্রাসের বিপক্ষে এবং কপ ২৬ সম্মেলনে তারা এই সম্মতিতে স্বাক্ষর করেনি।

মিথেন গ্যাস নিগর্মন হ্রাস করা
জাতিসংঘের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মিথেন গ্যাসের নির্গমন হ্রাস করা গেলে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন বহুলাংশে রোধ করা সম্ভব। মিথেন গ্যাস তাপমাত্র বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করে। তেল নিষ্কাশনের সময় প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানো হয় যা থেকে ব্যাপক মাত্রায় মিথেন গ্যাস নির্গত হয়। অবশ্যই প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানোর বিকল্প হিসেবে ভিন্ন পরিবেশ বান্ধব উপায় বের করতে হবে। এর মাধ্যমে মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ হ্রাস পাবে। পাশাপাশি বর্জ্য পদার্থ বিনষ্টকরণের জন্য পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। কারণ স্তুপীকৃত বর্জ্য পদার্থ থেকে প্রচুর পরিমাণ মিথেন গ্যাস নির্গত হয়।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে জ্বালানি খাত ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বৈশ্বিক অর্থনীতির যে কোনো খাতের তুলনায় বিদ্যুৎ ও তাপশক্তি উৎপাদন খাত জলবায়ু পরিবর্তনকে প্রভাবিত করে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে সমগ্র বিশ্বের নেতাদের একযোগে কাজ করতে হবে। সভ্যতার উন্নতির ধারায় প্রতিয়িনত বিদ্যুৎ ও তাপের ব্যবহার বাড়বে কিন্তু নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে একদিকে বিদ্যুৎ বা তাপের চাহিদা পূরণ হবে, অন্যদিকে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে না। এর ফলে আমাদের বিদ্যুৎ ও তাপ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি নির্ভরতার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। তবে পুরোপুরি জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা থেকে ক্লিন এনার্জি তথা ডিকার্বোনাইজেশন প্রযুক্তি নির্ভরতার দিকে ঝুঁকতে হতে পারে। তবে সাম্প্রতিক বৈশ্বিক লক্ষ্য ও চাহিদা বিবেচনায় এমন পদক্ষেপ কঠিন হবে।

অন্যদিকে বায়ু ও সৌরশক্তির ব্যবহারের ফলে জ্বালানি চাহিদা মিটতে পারে। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্ব নেতাদের প্রস্তাবিত নিট জিরো বাস্তবায়নে নবায়নযোগ্য তথা বায়ু ও সৌরশক্তির ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। তবে এই পথ এতটা সহজ নয়। কারণ বাতাসের গতিবেগ কম হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হবে। এক্ষেত্রে আমাদের উন্নত ব্যাটারি উদ্ভাবনের পথে হাঁটতে হবে যেন প্রয়োজনীয় শক্তি তথা বিদ্যুৎ সঞ্চয় এবং প্রয়োজন মাফিক তার ব্যবহার করা যায়।

পেট্রোল ও ডিজেলের ব্যবহার
সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সমৃদ্ধ হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রতিনিয়ত সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে নতুন নতুন বাহনের ব্যবহার বাড়ছে। আর জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে পেট্রোল, ডিজেল, অকটনেরে মতো জ্বালানি। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে অবশ্যই যানবাহনে ডিজেল ও পেট্রোলের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে। এসকল জ্বালানি ব্যবহার কমিয়ে ইলেক্ট্রিক যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি হতে পারে একটি সমাধান। তবে ইলেক্ট্রিক যানবাহনের ব্যবহার বৃদ্ধি যথেষ্ট জটিল কাজ। এক্ষেত্রে হাইড্রোজেন জ্বালানি হতে পারে যানবাহনের উৎকৃষ্ট জ্বালানি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদিত হাইড্রোজেন জ্বালানি আগামীতে পরিবেশবান্ধব পরিবহন খাতের স্বপ্ন দেখাতে পারে। পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা বিমানের জন্য নতুন, বিশুদ্ধ জ্বালানি উৎপাদনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। যদিও পরিবেশবাদীরা মনে করেন, আকাশপথে দূষণ কমাতে দেশগুলোর বিমানের সংখ্যা কমাতে হবে।

বৃক্ষরোপণের হার বৃদ্ধি
জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বৃক্ষরোপণের কোনো বিকল্প নেই। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধে বৃক্ষরোপনের চেয়ে উৎকৃষ্ট পদ্ধতি আর হতে পারে না। প্রয়োজনের তাগিদে গাছ কাটা হলেও দেশগুলোকে বৃক্ষ রোপণের হার বাড়াতে হবে। ২০১৮ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ জানায়, “বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে হলে বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস দূর করতে হবে”। বায়ু থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড দূর করতে গাছের বিকল্প নেই। গাছ সারোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদন করতে বায়ুমন্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস গ্রহণ করে। পরিবেশবাদী এবং বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে বৃক্ষনিধন বন্ধ করার দাবির পিছনে এটি একটি বড় যুক্তি।

বায়ু থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস দূরীকরণ
গ্রিন হাউস গ্যাস সূর্য থেকে আগত তাপ পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রতিফলিত হওয়ার পর মহাশূণ্যে বিলীন হওয়ার পথে বাধা। এর ফলে পৃথিবী উষ্ম থাকে। তবে গ্রিন হাউস গ্যাসের মাত্রা অধিক হলে পৃথিবী অনেক বেশি উত্তপ্ত হয়। ফলে পৃথিবীর স্বাভাবিক জীবন ধারণ ব্যহত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিনিয়ত বায়ুমণ্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বায়ুমণ্ডল থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস দূর করতে হবে। বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা অন্য কোনো গ্রিন হাউস গ্যাস কৃত্রিমভাবে দূর করা গেলে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অথবা গ্রিন হাউস গ্যাস উৎপন্ন হওয়ার পর এর উৎস থেকে অন্য স্থানে সম্প্রসারণ রোধ করা গেলে পরিবেশে এসকল গ্যাসের প্রভাব অনেকাংশে রোধ করা যায়। ইতিমথ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বায়ুমণ্ডল থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস দূর করার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে টেক্সাসের ‘কার্বন ইঞ্জিনিয়ারিং’ এবং সুইজারল্যান্ডের ‘ক্লাইমওয়ার্কস’ অন্যতম। তারা একটি রাসায়নিক পদার্থের ফিল্টারের ভিতর দিয়ে বিশাল ফ্যানের সাহায্যে বায়ুমণ্ডলে বাতাস নির্গত করে বায়ুমণ্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। অন্য একটি পদ্ধতি হলো, কার্বন বন্দী ও সংরক্ষণ (capture and storage)। এই পদ্ধতিতে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের উৎস যেমন কয়লার জ্বালানি প্লান্ট থেকে বিশেষ যন্ত্র গ্যাস শোষণ করে এবং শোষণকৃত গ্যাস ভূগর্ভের অভ্যন্তরে পতিত করা হয়। তবে এ সকল প্রযুক্তি বেশ জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ।
সমাধান
জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস
জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে তা থেকে অধিক মাত্রায় কার্বন-ডাই গ্যাস নির্গত হয়। প্রতিনিয়ত আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবে তেল, গ্যাস বিশেষ করে কয়লা ব্যবহার করি। বায়ুমণ্ডলে নিঃসরিত কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস সূর্য থেকে আগত তাপ আটকে রেখে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে জীবাশ্ম জ্বালানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ই্স্যু। তাপমাত্র বৃদ্ধি রোধে অবশ্যই দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করতে হবে। তবে জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনে প্রথম সারির দেশগুলো (অস্ট্রোলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত) এই জ্বালানি ব্যবহার হ্রাসের বিপক্ষে এবং কপ ২৬ সম্মেলনে তারা এই সম্মতিতে স্বাক্ষর করেনি।

মিথেন গ্যাস নিগর্মন হ্রাস করা
জাতিসংঘের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মিথেন গ্যাসের নির্গমন হ্রাস করা গেলে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন বহুলাংশে রোধ করা সম্ভব। মিথেন গ্যাস তাপমাত্র বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করে। তেল নিষ্কাশনের সময় প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানো হয় যা থেকে ব্যাপক মাত্রায় মিথেন গ্যাস নির্গত হয়। অবশ্যই প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানোর বিকল্প হিসেবে ভিন্ন পরিবেশ বান্ধব উপায় বের করতে হবে। এর মাধ্যমে মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ হ্রাস পাবে। পাশাপাশি বর্জ্য পদার্থ বিনষ্টকরণের জন্য পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। কারণ স্তুপীকৃত বর্জ্য পদার্থ থেকে প্রচুর পরিমাণ মিথেন গ্যাস নির্গত হয়।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি
বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে জ্বালানি খাত ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বৈশ্বিক অর্থনীতির যে কোনো খাতের তুলনায় বিদ্যুৎ ও তাপশক্তি উৎপাদন খাত জলবায়ু পরিবর্তনকে প্রভাবিত করে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে সমগ্র বিশ্বের নেতাদের একযোগে কাজ করতে হবে। সভ্যতার উন্নতির ধারায় প্রতিয়িনত বিদ্যুৎ ও তাপের ব্যবহার বাড়বে কিন্তু নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে একদিকে বিদ্যুৎ বা তাপের চাহিদা পূরণ হবে, অন্যদিকে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে না। এর ফলে আমাদের বিদ্যুৎ ও তাপ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি নির্ভরতার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। তবে পুরোপুরি জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা থেকে ক্লিন এনার্জি তথা ডিকার্বোনাইজেশন প্রযুক্তি নির্ভরতার দিকে ঝুঁকতে হতে পারে। তবে সাম্প্রতিক বৈশ্বিক লক্ষ্য ও চাহিদা বিবেচনায় এমন পদক্ষেপ কঠিন হবে।

অন্যদিকে বায়ু ও সৌরশক্তির ব্যবহারের ফলে জ্বালানি চাহিদা মিটতে পারে। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্ব নেতাদের প্রস্তাবিত নিট জিরো বাস্তবায়নে নবায়নযোগ্য তথা বায়ু ও সৌরশক্তির ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। তবে এই পথ এতটা সহজ নয়। কারণ বাতাসের গতিবেগ কম হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হবে। এক্ষেত্রে আমাদের উন্নত ব্যাটারি উদ্ভাবনের পথে হাঁটতে হবে যেন প্রয়োজনীয় শক্তি তথা বিদ্যুৎ সঞ্চয় এবং প্রয়োজন মাফিক তার ব্যবহার করা যায়।

বৃক্ষরোপণের হার বৃদ্ধি
জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বৃক্ষরোপণের কোনো বিকল্প নেই। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধে বৃক্ষরোপনের চেয়ে উৎকৃষ্ট পদ্ধতি আর হতে পারে না। প্রয়োজনের তাগিদে গাছ কাটা হলেও দেশগুলোকে বৃক্ষ রোপণের হার বাড়াতে হবে। ২০১৮ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ জানায়, “বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে হলে বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস দূর করতে হবে”। বায়ু থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড দূর করতে গাছের বিকল্প নেই। গাছ সারোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদন করতে বায়ুমন্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস গ্রহণ করে। পরিবেশবাদী এবং বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে বৃক্ষনিধন বন্ধ করার দাবির পিছনে এটি একটি বড় যুক্তি।

https://bangla-bnb.saturnwp.link/%e0%a6%8f%e0%a6%86%e0%a6%87-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%a4-%e0%a6%89%e0%a6%a8%e0%a7%8d/

বায়ু থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস দূরীকরণ
গ্রিন হাউস গ্যাস সূর্য থেকে আগত তাপ পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রতিফলিত হওয়ার পর মহাশূণ্যে বিলীন হওয়ার পথে বাধা। এর ফলে পৃথিবী উষ্ম থাকে। তবে গ্রিন হাউস গ্যাসের মাত্রা অধিক হলে পৃথিবী অনেক বেশি উত্তপ্ত হয়। ফলে পৃথিবীর স্বাভাবিক জীবন ধারণ ব্যহত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিনিয়ত বায়ুমণ্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বায়ুমণ্ডল থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস দূর করতে হবে। বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বা অন্য কোনো গ্রিন হাউস গ্যাস কৃত্রিমভাবে দূর করা গেলে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অথবা গ্রিন হাউস গ্যাস উৎপন্ন হওয়ার পর এর উৎস থেকে অন্য স্থানে সম্প্রসারণ রোধ করা গেলে পরিবেশে এসকল গ্যাসের প্রভাব অনেকাংশে রোধ করা যায়। ইতিমথ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বায়ুমণ্ডল থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস দূর করার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে টেক্সাসের ‘কার্বন ইঞ্জিনিয়ারিং’ এবং সুইজারল্যান্ডের ‘ক্লাইমওয়ার্কস’ অন্যতম। তারা একটি রাসায়নিক পদার্থের ফিল্টারের ভিতর দিয়ে বিশাল ফ্যানের সাহায্যে বায়ুমণ্ডলে বাতাস নির্গত করে বায়ুমণ্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। অন্য একটি পদ্ধতি হলো, কার্বন বন্দী ও সংরক্ষণ (capture and storage)। এই পদ্ধতিতে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের উৎস যেমন কয়লার জ্বালানি প্লান্ট থেকে বিশেষ যন্ত্র গ্যাস শোষণ করে এবং শোষণকৃত গ্যাস ভূগর্ভের অভ্যন্তরে পতিত করা হয়। তবে এ সকল প্রযুক্তি বেশ জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ।

Share this:

  • Share
  • Click to share on Facebook (Opens in new window)
  • Click to share on X (Opens in new window)
  • Click to share on LinkedIn (Opens in new window)
  • Click to share on Reddit (Opens in new window)
  • Click to share on Tumblr (Opens in new window)
  • Click to share on Pinterest (Opens in new window)
  • Click to share on Pocket (Opens in new window)
  • Click to share on Telegram (Opens in new window)
  • Click to share on WhatsApp (Opens in new window)
  • Click to print (Opens in new window)
  • Click to email a link to a friend (Opens in new window)
news technology ক্লাইমেট ক্লাইমেট-চেঞ্জ- চেঞ্জ জলবায়ু পরিবর্তন টেকনোলজির ভূমিকা মোকাবেলায়

Related Posts

ইউটিউব

ইউটিউবের নতুন পদক্ষেপ : রুখবে ভুয়া ভিডিও

April 6, 2025
ফোন খুঁজে দেবে গুগল

হারিয়ে যাওয়া ফোন যেভাবে খুঁজে দেবে গুগল

March 28, 2025
হোয়াটসঅ্যাপের ‘মেসেজ থ্রেডস’

হোয়াটসঅ্যাপের ‘মেসেজ থ্রেডস’ যেভাবে কাজে আসবে

March 20, 2025
Latest post
ডালিমের পুষ্টিগুণ

ডালিমের পুষ্টিগুণ জেনে নিন

May 24, 2025
উর্দু লাহোর কালান্দার্সকে - সাকিব

অনর্গল উর্দু বলে লাহোর কালান্দার্সকে মুগ্ধ করলেন সাকিব

May 24, 2025
লাল গালিচায় - আলিয়া ভাট

বিদেশি পোশাকে লাল গালিচায় রুপের মুগ্ধতা ছড়ালেন আলিয়া ভাট

May 24, 2025
অভিনেত্রী সায়ামি খের-কাজ

কাজ পাওয়ার জন্য ঘ.নি.ষ্ঠ হওয়ার প্রস্তাব অভিনেত্রীকে

May 23, 2025
রিয়াল -মদ্রিচ

১৩ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে রিয়াল অধ্যায়ের ইতি টানছেন মদ্রিচ

May 23, 2025
About us | DMCA | Privacy Policy | Contact

© 2025 BelieveNoBorder. All Rights Reserved

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.