চলতি বছর মৌসুমের শুরু থেকেই তীব্র গরমে পুড়ছে সারাদেশ। বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় মানুষের প্রাণ যেন ওষ্ঠাগত। তীব্র এই গরমে তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি শরীর সুস্থ রাখতে পানি পানের বিকল্প নেই।
আর তাই পানিশূন্যতা এড়াতে ও প্রশান্তি পেতে কমবেশি সবাই লেবুর শরবত, ডাবের পানি কিংবা আখের রস পান করছেন। গরমের এ সময় আখের রস ও ডাবের পানি অনেকের পছন্দ। এ দুটি উপকরণ শরীরের জন্য বেশ উপকারী।
তবে এই দুই পানীয়ের মধ্যে কোনটিতে পুষ্টির পরিমাণ বেশি তা, কি জানেন? চলুন জেনে নেই এই দুই পানীয়র পুষ্টির পরিমাণ।
আখের রস
আমাদের দেশে গরমের সময় আখের রস খুব সহজপ্রাপ্য একটি পানীয়। এতে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ়, পটাশিয়াম, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং সহজপাচ্য ফাইবার। যা শরীরের অনেক উপকার করে থাকে।
১. আখের রসে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি রয়েছে যা তাৎক্ষণিকভাবে শরীরকে চাঙ্গা করতে তুলতে পারে। যাঁরা দুর্বল বা ক্লান্ত থাকেন, তাঁরা খেলে উপকার পাবেন।
২. বিশেষ করে যাঁরা শরীরচর্চা করেন, তাঁদের জন্য আখের রস অনেক উপকারি। আখের রস চিবিয়ে খেলে মুখের ব্যায়াম হয়।
৩. জন্ডিস কমাতে আখের রস অনেক উপকারি বলে মনে করা হয়। যে কারণে অনেক আগে থেকেই আমাদের দেশে জন্ডিস রোগীদের আখের রস খাওয়ানোর প্রচলন রয়েছে।
৪. খাওয়ার রুচি কম এমন মানুষ আখের রস খেতে পারে। এর ফলে তাদের রুচি বাড়বে।
৫. তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশি আখের রস খাওয়া ক্ষতিকর। কারণ এই রসে চিনি বা শর্করার মাত্রা বেশি থাকে। এছাড়া বেশি আখের রস খেলে শর্করার কারণে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
৬. রাস্তার ধারে বা বাহিরে অপরিস্কার স্থানে মেশিনে ভাঙানো আখের রস খাওয়া উচিত নয়। এতে উপকারের বদলের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে বেশি।
৭. গর্ভবতী নারীদেরও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আখের রস পান না করাই ভালো।
ডাবের পানি
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অপরিহার্য ডাবের পানি। এতে থাকা রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও পাইরিডোক্সিনের মতো উপকারী উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর ফলে জীবাণুরা সহজে সংক্রমণ ঘটাতে পারে না।
১. ডাবের পানি লো-ফ্যাটযুক্ত স্বাস্থ্যকর পানীয় এবং পটাশিয়ামের উৎস, যা শরীরের ফ্যাট বার্ন করে পেশি গঠনে সহায়তা করে।
২. পানিশূন্যতা রোধ করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এই পানীয়। শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হলে কিংবা পানির ঘাটতি দেখা দিলে পুষ্টিবিদরা ডাবের পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৩. অতিরিক্ত গরমের সময় ডাবের পানি খেলে হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এছাড়া তীব্র রোদে বের হওয়ার আগে ডাবের পানি খেলে মাইগ্রেন ব্যথার আশঙ্কা কমে যায়।
৪. ডায়রিয়া, হিট স্ট্রোক, অতিরিক্ত ক্লান্তি কিংবা দুর্বলতা কাটাতে এই পানি অতুলনীয়।
৫. ডাবের পানিতে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে যাদের রক্তচাপ এমনিতেই কম তাদের এই পানীয় বেশি না পান করাই ভালো।
৬. কিডনি রোগীদের ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া উচিত।
৭. ডাবের পানি বেশিক্ষণ বাইরে রাখা উচিৎ না। ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা খোলা রাখার পর ফেলে দেওয়া উচিত।
৮. শক্তির জোগান বা এনার্জি দেওয়ার ক্ষেত্রে ডাবের পানির চেয়ে আখের রস বেশি কার্যকরি।