স্বর্ণ বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বীকৃত সম্পদের মধ্যে অন্যতম। স্বর্ণের প্রতি মানুষের আগ্রহ সবসময় ছিল এবং আছে। অনেকে ব্যক্তিগত ব্যবহার, সঞ্চয় কিংবা আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বর্ণ কিনতে পছন্দ করেন। তাই ‘গোল্ড কিনেন’ এই প্রথম বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে অ্যাপের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বর্ণ ক্রয়, বিক্রয়, সংরক্ষণ এবং ঘরে বসে সংগ্রহের সুযোগ। এটি স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক।
‘গোল্ড কিনেন’ পরিচিতি
গোল্ড কিনেন মুলত একটি বাংলাদেশি অনলাইন গোল্ড শপ যেখানে অ্যাপের মাধ্যমে যে কেউ তাদের নিজস্ব স্মার্টফোন ব্যবহার করে স্বর্ণ ক্রয়, সঞ্চয়, উত্তোলন এবং বিক্রয় করতে পারেন। অ্যাপটির মাধ্যমে গ্রাহকেরা ২২ ক্যারেট (৯১.৬% খাঁটি) হলমার্কযুক্ত এবং প্রত্যায়িত স্বর্ণ ভগ্নাংশ পরিমাণে কিনে ১, ৫, বা ১০ গ্রাম বার ও ২, ৪ গ্রাম কয়েন রূপে উত্তোলন করতে পারবেন। অ্যাপটি বাংলাদেশ জুয়েলারি এসোসিয়েশন (বাজুস) কর্তৃক নির্ধারিত প্রতিদিনের বাজারমূল্য অনুসরণ করে থাকে।
গোল্ড কিনেন-এর প্রতিষ্ঠাতাদের লক্ষ্য স্বর্ণ ক্রয় ও সঞ্চয়কে দেশের প্রত্যেকের জন্য সহজলভ্য, সাশ্রয়ী ও সুবিধাজনক করে দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক প্রবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করা। তারই উদ্দেশে গোল্ড কিনেন অ্যাপ সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ভগ্নাংশ পরিমানে স্বর্ণ কিনে সঞ্চয়ের সুযোগ করে দিয়েছে। অ্যাপ-এর সকল ব্যাবহারকারীরা ক্রয়কৃত স্বর্ণ ১ গ্রাম থেকে উত্তোলন করতে পারবেন। একটি স্বনামধন্য গোল্ড সার্টিফিকেশন এজেন্সী দ্বারা গোল্ড কিনেন-এর সকল পণ্য ২২ ক্যারেট হলমার্কযুক্ত এবং প্রত্যায়িত। কাস্টমার স্বর্ণ উত্তোলনের সময় তাদের স্বর্ণের উক্ত সনদপত্র বুঝে পাবেন। গোল্ড কিনেন-এর সকল স্বর্ণ সিকিউরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত ‘ব্যাংক-গ্রেড’ ভল্টে সংরক্ষিত থাকবে এবং এই ভল্টটি শীর্ষস্থানীয় বীমা কোম্পানি গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড দ্বারা বীমাকৃত। এছাড়া, অ্যাপ-এর ব্যবহারকারীরা তাদের প্রিয়জনদের স্বর্ণ উপহার করতে পারবেন, যেখানে প্রাপক সরাসরি তাদের গোল্ড কিনেন অ্যাকাউন্টে স্বর্ণ পেয়ে যাবেন। গ্রাহকের প্রয়োজনে তাদের সঞ্চিত স্বর্ণ যে কোনো পরিমানে অ্যাপ-এই বিক্রি করে মোবাইল ওয়ালেট বা ব্যাংক একাউন্ট এর মাধ্যমে টাকা বুঝে পাওয়ার সুবিধাও রয়েছে।
‘গোল্ড কিনেন’ প্রতিষ্ঠাতাদের পরিচিতি
গোল্ড কিনেন-এর প্রতিষ্ঠাতা কামরান সাঞ্জয় রহমান, রাফাতুল বারী লাবিব এবং আতেফ হাসান। তাদের বিভিন্ন পেশাগত ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে। কামরান সাঞ্জয় রহমান এর ইনভেস্টমেন্ট, ক্রেডিট ও কনসিউমার ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে দেশ ও বিদেশের বিশদ ১৮ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক সংস্থা স্পেশাল অলিম্পিক, বাংলাদেশ (এসওবিডি) এর একজন পরিচালক, যা বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য খেলাধুলা নিয়ে কাজ করে।
রাফাতুল বারী লাবিব, একজন সেলস ও মার্কেটিং পেশাদার যিনি গ্রামীণফোন, ফিলিপ মরিস ইন্টারন্যাশনাল এবং বিকাশ-এর মতো বহুজাতিক এবং স্থানীয় কর্পোরেটদের সঙ্গে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন। গোল্ড কিনেন শুরু করার আগে তার শেষ কর্মস্থল ছিল বিকাশ-এর কমার্শিয়াল ডিভিশনে।
আতেফ হাসানেরও রয়েছে বহুমুখী সফল কর্মজীবন। তার কর্মজীবনের যাত্রা একসেনচার-এ শুরু হয়। তারপরে তিনি আইফার্মার-এ একজন ফিনান্সিয়াল কনসালটেন্ট ছিলেন। গোল্ড কিনেন শুরু করার আগে তিনি বিকাশ-এর ট্রেজারি বিভাগে ফাইনান্সিয়াল এনালিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গোল্ড কিনেন তিনজন প্রতিষ্ঠাতা দ্বারা অর্থায়িত এবং কোম্পানিটির এঞ্জেল ইনভেস্টরদের সহায়তাও রয়েছে। আমাদের অনুসন্ধানে কোম্পানির ব্যবসা পরিচালনার জন্য যথাযথ সকল সরকারি সংস্থার অনুমোদন যেমন গোল্ড ডিলিং লাইসেন্স, ডিবিআইডি, ইত্যাদির বৈধতা রয়েছে। এর পাশাপাশি গোল্ড কিনেন-এর ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), এবং বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এর সদস্যপদ সমূহ-ও রয়েছে।
তথ্য নিরাপত্তা
গোল্ড কিনেন-এর অ্যাপ ব্যবহারকারীদের আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারীর ডাটার আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা নিশ্চিত করে। সুতরাং, গ্রাহকদের তথ্য রক্ষা করার জন্য যথাযথ শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গোল্ড কিনেন স্বর্ণকে করে দিয়েছে সবার জন্য সহজলভ্য এবং সুভিধাজনক। এই অ্যাপ ব্যাবহার করে আপনিও স্বর্ণ সঞ্চয় করতে পারবেন এবং গড়তে পারবেন স্বর্ণালী আগামী।