নাফাখুম জলপ্রপাতটি (Nafakhum Waterfall), বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলায় অবস্থিত। বান্দরবন হতে ৭৯ কিমি. দুরে অবস্থিত থানচি। এটি একটি উপজেলা। সাঙ্গু নদীর পাড়ে অবস্থিত থানচি বাজার। এই সাঙ্গু নদী ধরে রেমাক্রীর দিকে ধীরে ধীরে উপরে উঠতে হয় নৌকা বেঁয়ে।
প্রকৃতি এখানে এত সুন্দর আর নির্মল হতে পারে ভাবাই যায় না। নদীর দুপাশে উচু উচু পাহাড়। সবুজে মোড়ানো প্রতিটি পাহাড় যেন মেঘের কোলে শুয়ে আছে অবলিলায়। কোন কোন পাহাড় এতই উচু যে তার চূড়া ঢেকে আছে মেঘের আস্তরে। থানচি উপজেলার রেমাক্রি স্থানটি সাঙ্গু নদীর উজানে একটি মারমা বসতী। মারমা ভাষায় ‘খুম’ মানে হচ্ছে জলপ্রপাত। রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় এই নাফাখুম জলপ্রপাতে।
রেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুম এ এসে বাঁক খেয়ে হঠাৎ করেই নেমে গেছে প্রায় ২৫-৩০ ফুট, প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত! সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে বর্ণিল রংধনু! ভরা বর্ষায় রেমাক্রি খালের জলপ্রবাহ নিতান্ত কম নয়। প্রায় যেন উজানের সাঙ্গু নদীর মতই।
ভ্রমণে দুর্ঘটনা নতুন কোনো ব্যাপার নয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় সর্তকতা না নেয়া হলে পুরো যাত্রাটাই অশুভ হয়ে যেতে পারে। তাই ভ্রমণের পূর্বে দুর্ঘটনাগুলোর কারণ ও নিরাপদ পাহাড় ভ্রমণে করণীয় জেনে নেয়া যাক
টিপস ও সতর্কতা
❖ কম খরচে নাফাখুম ঘোরার উত্তম উপায় ছুটির দিন পরিহার করে মোটামুটি বড় দল নিয়ে যাওয়া। এতে করে নিরাপত্তার দিকটাও অটুট থাকে।
❖ বর্ষার সময় গেলে লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নেওয়া আবশ্যক। পাহাড় ট্রেকিং-এর জন্যে ভালো গ্রিপের জুতা নিতে হবে। সেই সঙ্গে বাঁশের লাঠিও সঙ্গে রাখতে হবে। এরপরেও হাটার সময় যথেষ্ট সাবধান থাকতে হবে। জলপ্রপাতের নিচের জলাশয় বেশ গভীর এবং তাতে পাথরও আছে। তাই উপর থেকে লাফ দেওয়াটা একদমই উচিৎ হবে না।
❖ রেমাক্রি খাল পার হওয়ার সময় গাইডকে বলে সঙ্গে দড়ি নিয়ে নিতে হবে।
❖ থানচির পর বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক একদমি কাজ করে না। তাই আগে থেকেই ক্যামেরা ও মোবাইল ১০০ ভাগ চার্জ দিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে সঙ্গে পাওয়ার ব্যাংক রাখা উত্তম।
❖ এধরনের ভ্রমণে সঙ্গে অবশ্যই ফার্স্ট এইড কিট বক্স এবং বিশুদ্ধ খাবার পানি রাখা উচিৎ।
❖ স্থানীয় নিয়ম-কানুন মেনে চলার জন্য সময়ের দিকে সর্বদা খেয়াল রাখা জরুরি।
❖ একা একা রাস্তা খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন, তাই কোনো ভাবে দলচ্যুত হওয়া যাবে না।
❖ ছোট বাচ্চা, অসুস্থ ও বয়স্কদের এই ধরনের ভ্রমণে রাখা উচিৎ নয়।
❖ এমন কোনো কাজ করা যাবে না যাতে, পরিবেশ, প্রকৃতি ও স্থানীয় মানুষদের ক্ষতি হয়।
❖ ময়লা আবর্জনা নির্ধারিত জায়গা মত ফেলতে হবে, অথবা কোনো জায়গা না পাওয়া গেলে, সব একসঙ্গে করে পুড়িয়ে দিতে হবে।
❖ ঝিরি বা পাহাড়ি পথ অনেক ক্লান্তিকর তাই ব্যাকপ্যাক যত হাল্কা হয় ততই ভালো।