আইফোন বিক্রির ধীরগতির সঙ্গে লড়াই করা অ্যাপল, ২০২১ সালের জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো সবচেয়ে মূল্যবান মার্কিন কোম্পানি হিসাবে নিজের জায়গা হারিয়েছে মাইক্রোসফটের কাছে।
বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান দ্বিতীয় কোম্পানির দৌড়ে অ্যাপলকে প্রায় ধরে ফেলেছে চিপ নির্মাতা কোম্পানি এনভিডিয়া। এর অন্যতম প্রধান কারণ, এআই টুলের চালিকা শক্তি হিসাবে কাজ করা চিপ তৈরি করে এই কোম্পানিটি। ফলে এর শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের রয়েছে আস্থা ও এসেছে উপচে পড়া বিনিয়োগ।
বর্তমানে চলা এআই শোরগোলের মধ্যেই কোম্পানির বাজারমূল্য এক লাখ কোটি ডলার থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে এনভিডিয়ার মূল্য। এ মাইলফলক অর্জনে লেগেছে কেবল নয় মাস, আর সে সময়ে কোম্পানিটি পেছনে ফেলেছে জেফ বেজোসের ‘অ্যামাজন’, গুগলের মালিক ‘অ্যালফাবেট’, ও বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী কোম্পানি ‘সৌদি আরামকো’র মতো জায়ান্ট কোম্পানিগুলোকে।
এনভিডিয়ার বাজারমূল্য বর্তমানে প্রায় দুই লাখ ৩৮ হাজার কোটি ডলার। কোম্পানিটি অ্যাপল থেকে ২৩ হাজার কোটি ডলার ও মাইক্রোসফট থেকে প্রায় ৬৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার পিছিয়ে রয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
উন্নত চিপ বাজারের ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করা এনভিডিয়ার শেয়ারের উত্থান, এ বছর ওয়াল স্ট্রিটকেই রেকর্ড অবস্থানে ঠেলে দেওয়ার ক্ষেত্রে কাজ করেছে। পাশপাশি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ৫০০ কোম্পানির বেঞ্চমার্ক সূচক ‘এসঅ্যান্ডপি ৫০০’-এ একাই ৫ শতাংশ গুরুত্ব অর্জন করেছে কোম্পানিটি।
এ বছরে এনভিডিয়া, ও মেটা প্ল্যাটফর্মস বিশ্বের শীর্ষ সাত টেক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ‘ম্যাগনিফিসেন্ট ৭’ এর অন্যান্য সদস্যদের শেয়ারকেও ছাড়িয়ে গেছে, যা এআইয়ের জন্য বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণকেই তুলে ধরে বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
“এনভিডিয়ার উত্থান কোম্পানিটির বর্তমান ব্যবসায়িক মডেলের ভেতরের অবিশ্বাস্য শক্তিশালী মৌলিক বিভিন্ন বিষয়কে প্রতিফলিত করে,” – বলেছেন নিউ জার্সির শহর নিউ ভার্ননের এক পারিবারিক বিনিয়োগ কোম্পানি ‘চেরি লেন ইনভেস্টমেন্টে’র অংশীদার রিচার্ড মেকলার৷
এদিকে, আইফোন বিক্রির ধীরগতির সঙ্গে লড়াই করা অ্যাপল, ২০২১ সালের জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো সবচেয়ে মূল্যবান মার্কিন কোম্পানি হিসাবে নিজের জায়গা হারিয়েছে মাইক্রোসফটের কাছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয়, ওয়াল স্ট্রিটে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া স্টক হিসাবে টেসলাকেও পেছনে ফেলেছে এনভিডিয়া।
“এনভিডিয়া হচ্ছে এআই সংশ্লিষ্ট শেয়ারের মধ্যে সবচেয়ে সস্তার।” – বলেছেন অপটাস ক্যাপিটাল অ্যাডভাইসরসের পোর্টফোলিও ম্যানেজার ডেভিড ওয়্যাগনার।
“আমরা বিশ্বাস করি পাঁচ বছর বা ১০ বছরের মধ্যে আমরা সবাই এমন এক খাত সম্পর্কে কথা বলব যা আজকের সংখ্যার চেয়ে অনেক বড় হবে।”
তবে, এনভিডিয়ার শেয়ারে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ মূল্য পৌঁছানোর কাছাকাছি রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লখ করেছে রয়টার্স।
ওয়াল স্ট্রিট বিশ্লেষকদের টার্গেট মূল্য অনুসারে, আগামী ১২ মাসে এনভিডিয়া শেয়ার প্রতি ৮৫০ ডলারে লেনদেন করবে। আর এলএসইজি’র তথ্য অনুসারে এটি কোম্পানির সর্বশেষ সমাপনী মূল্য ৯২৬ ডলারের নিচে।
“অবশ্যই, যেকোন মেগা-ক্যাপ শেয়ারের জন্য এ গতিতে বাড়তে থাকা খুব কঠিন কারণ ‘বড় সংখ্যার আইন’ শেষ পর্যন্ত কার্যকর হয়৷ তবে, শেয়ার মূল্য এ স্তরে থাকতে পারে যদি কোম্পানিটি বিশ্লেষকদের উচ্চ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে বা ছাড়িয়ে যেতে পারে,” – বলেছেন চেরি লেনের মেকলার।