মানবশরীরের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বিকাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কথা বলা ও চলাফেরা থেকে শুরু করে প্রতিটি কাজের নির্দেশ আসে এখান থেকে। তাই মস্তিষ্ক ভালো থাকলে সবকিছু ঠিকঠাকমতো চলে। এ জন্য মস্তিষ্কের কর্মদক্ষতা বাড়াতে বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খাদ্যের তালিকাও প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
এ তালিকায় রয়েছে-
ডার্ক চকোলেট: প্রতিদিন এক টুকরো ডার্ক চকোলেট খেলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অল্প পরিমাণে ডার্ক চকোলেট খাওয়ার অভ্যাস স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
আখরোট: মস্তিষ্কের জন্য আখরোট খুবই উপকারী। এতে বাদামের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এটি মস্তিষ্ককে যে কোনো রোগ থেকে রক্ষা করে।
ওটস খেতে হবে নিয়মিত: ওটসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। এটি পেটের নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়াতে পারে এই ওট্স। তাই বাচ্চা-বুড়ো সবারই প্রতিদিন ওটস খাওয়া উচিত। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে। ওটস খেতে ভালো না লাগলে ওটসের কুকিজ, কেক, বিস্কুট খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
বাদাম এবং বীজ: বাদাম এবং বীজ ভিটামিন ই-এর ভালো উৎস। সঠিক মাত্রার ভিটামিন ই আমাদের মস্তিষ্কের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে তাই প্রতিদিনের ডায়েটে শুকনো ফল যেমন- আখরোট, কাজু, পেস্তা, চিনা বাদাম এবং কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, তিল বীজ রাখতে পারেন।
টমেটো: আমাদের দেশে একটি সহজলভ্য সবজি টমেটো। এই সবজি এখন বাংলাদেশে প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। এটি মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। টমেটোতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই উপাদানটি মস্তিষ্কের কোষগুলোকে ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচায়। এ ছাড়া স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে টমেটো।
স্যামন ও সামুদ্রিক মাছ: মানুষের মস্তিষ্কের ৬০ শতাংশ চর্বি দিয়ে তৈরি। তাই এটিকে সক্রিয় রাখতে প্রয়োজন ফ্যাটি অ্যাসিড। সামুদ্রিক মাছ- যেমন স্যামন, টুনাসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ মস্তিষ্কের খাবার হিসেবে বেশ উপকারী। কারণ এই খাবারগুলোতে আছে ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপাদানটি আলজইমার রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
পালংশাক: পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে। এই উপাদানটি মস্তিষ্কের সংযোগশক্তি বৃদ্ধি করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও রয়েছে।
তৈলাক্ত মাছ: তৈলাক্ত মাছ খেলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এই ধরনের মাছ মস্তিষ্কের জন্য বিশেষ উপকারী। যে সব মাছে তেল বেশি থাকে, তেমন কিছু বড় মাছ নিয়মিত খেলে বুদ্ধি বাড়বে দ্রুত।
গ্রিন টি: গ্রিন টি এখন বাংলাদেশের সর্বত্রই পাওয়া যায়। গবেষকরা বলছেন, গ্রিন টি মস্তিষ্কের সংযোগ ক্ষমতা বাড়ায়। তা ছাড়া এটি পারকিনসনের হাত থেকে রক্ষা করে। চিনি ছাড়া দিনে তিন কাপ সবুজ চা মস্তিষ্কের জন্য ভীষণ উপকারী।
ব্লু বেরি: বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা বাড়াতে ব্লু বেরির জুড়ি নেই। এতে আছে ফ্ল্যাভোনয়েডস। এ ছাড়া এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকেও রক্ষা করে এটি। পারকিনসনস বা আলজইমার থেকেও রক্ষা করে ব্লু বেরি।