শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। এ মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা রোজা পালন করেন। ফজরের আগ মুহূর্তে সেহরি খেয়ে সন্ধ্যায় মাগরিব পর্যন্ত না খেয়ে থাকেন। সারাদিন না খেয়ে থাকা স্বাভাবিকভাবে কষ্টকর। তবে এ জন্য সেহরিতে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি। এরপরও সেহরিতে খাবার খাওয়ার পর দিনে পানি পিপাসা পাবে ভেবে অধিকাংশ মানুষই সেহরির শেষ মুহূর্তে বেশি করে পানি পান করেন।
সেহরির শেষ মুহূর্ত যতটা ঘনিয়ে আসে, পানি পানের পরিমাণ ততই যেন বেড়ে যায়। কিন্তু এটা কী ঠিক? সম্প্রতি এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. রোজানা রউফ ও আজিমপুরের গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান। এবার তাহলে তাদের ভাষ্য অনুযায়ী এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
সাধারণত বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, অতিরিক্ত পানি পান করা উঠিত নয়। খাবার খাওয়ার পরই পানি পান ঠিক নয়। সেহরিতে শেষ মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠার পর খাবার খাওয়ার পর বেশি পরিমাণ পানি পান করা যাবে না। এতে পেটে অস্বস্তি হয়ে থাকে। আবার হজমেরও সমস্যা হতে পারে।
ডা. রোজানা রউফের মতে, সেহরিতে তিন গ্লাস তরল পান করা যেতে পারে। তবে সেটি একসঙ্গে বা একেবারে নয়। ধাপে ধাপে পান করতে হবে। সেই তরল হতে পারে পানি বা কোনো ফলের রস। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে তিন গ্লাস পরিমাণ হতে পারে। তবে যারা দিনে রোদে বা চুলার কাছে কাজ করে থাকেন, তাদের আবার পানির চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি থাকে। তাদের ক্ষেত্রে সব ধরনের তরলের সম্মিলিত পরিমাণ হতে পারে ২ লিটার।
এছাড়া কারও যদি সেহরিতে চা বা কফি পানের অভ্যাস থাকে, সেটি বাদ দিতে হবে। এ সময় ফলমূল খেতে পারেন। আপেল, বাঙ্গি, তরমুজ ও কলার মতো ফল খাওয়া যেতে পারে। এসব ফল শরীরে পানির জোগান মিটিয়ে থাকে।
অধ্যাপক শম্পা শারমিন খানের ভাষ্যমতে, সেহরিতে মূল খাবার খাওয়ার অন্তত ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে পানি পান করা যাবে। খাবার খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে পানি করা উচিত নয়। একইভাবে খাবার খাওয়া শেষ হলে অন্তত ১৫-২০ মিনিট পর পানি পান করতে হবে। আর খাবার খাওয়া, পানি পান শেষে ফজরের নামাজ আদায়ের পর কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি ভালো।
আবার সারাদিনে পানির চাহিদা মেটানোর জন্য ধাপে ধাপে তরল খাবার খাওয়া যেতে পারে। এর জন্য অবশ্য আগেভাগে ঘুম থেকে উঠা প্রয়োজন। খাবার খাওয়ার আগে ও পরে যথেষ্ট সময়ের ব্যবধান রেখে তবেই পানি বা তরল খাবার খেতে হবে। এতে দিনের বেলায় আবহাওয়া উষ্ণ হলেও সহজেই পানিশূন্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। একই সঙ্গে পেটের কোনো সমস্যা হওয়ারও ঝুঁকি থাকবে না।