জিওফ মার্শ, ডেভিড বুন, বব সিম্পসন, মার্ক টেইলর, মাইকেল সস্ন্যাটার, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, ম্যাথু হেইডেন- প্রত্যেকেই বিশ্ব ক্রিকেটের বাঘা ব্যাটসম্যান। তাদের সবার মধ্যে মিল যে জায়গাটায় তা হলো- এরা প্রত্যেকেই অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্টে ইনিংস উদ্বোধন করতেন। তাদের রেশ ধরে ২০১১ সাল থেকে ওই দায়িত্ব কৃতিত্বের সঙ্গে সামলেছেন ডেভিড ওয়ার্নার। সিডনিতে ঘরের মাঠে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলে ব্যাগি গ্রিনটি শোকেসে তুলে রেখেছেন। উইন্ডিজের বিপক্ষে ফ্র্যাঙ্ক—ওরেল ট্রফি সিরিজে তার জায়গায় আসছেন স্টিভেন স্মিথ। অজি জার্সিতে ১০৫ টেস্ট খেলার পর এ তারকাকে এবার দেখা যাবে ইনিংস উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায়।
আগামী বুধবার অ্যাডিলেডে শুরু হবে অস্ট্রেলিয়া—ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম টেস্ট। এক সপ্তাহ আগেই সেই টেস্টের দল ঘোষণা করল স্বাগতিকরা। দলে আছেন অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন। প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি নিশ্চিত করেছেন, অ্যাডিলেডে স্মিথের চার নম্বর পজিশনে ব্যাট করবেন গ্রিন আর স্মিথ উঠে যাবেন ওপেনিংয়ে।
স্মিথকে উদ্বোধনী ব্যাটারের ভূমিকায় দেখার আকাক্সক্ষা সবার আগে প্রকাশ করেন দেশটির সাবেক তারকা অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন। তার আগে এই ভূমিকার জন্য ক্যামেরন ব্যানক্রফট, মার্কাস হ্যারিস, ম্যাথিউ র্যানশ—দের মতো অভিজ্ঞদের নাম ভেসে আসছিল। কোচ ম্যাকডোনাল্ডের আভাসের পর আলোচনা উঠেছিল ক্যামেরন গ্রিনকে নিয়ে। এমনকি মারনাস লাবুশেনকে ওপেনিং পজিশনে আনার কথা ভাবছিল ম্যানেজমেন্ট। ওয়াটসনের ওই ইচ্ছা প্রকাশের পর স্মিথ নিজেই আগ্রহ দেখান ক্যারিয়ারে নতুন এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে। দেশটির বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক আরও এক ধাপ এগিয়ে বাজি ধরেন স্মিথের পক্ষে। বলেন, ‘ওপেনিং পজিশনে স্মিথি যদি ব্রায়ান লারার ৪০০ রানের রেকর্ড ভাঙে, তাতেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।’ এমনকি অজিদের নাম্বার থ্রি পজিশনের স্থায়ী ব্যাটার মারনাস লাবুশেন বলেন, ‘ওপেনার স্মিথের গড় হবে ষাটের ওপরে।’ যদিও প্যাট কামিন্স স্মিথকে ওপেনিংয়ে তুলে ব্যাটিং অর্ডার এলোমেলো করতে চাচ্ছিলেন না।
তবে শেষ পর্যন্ত জর্জ বেইলি স্মিথকেই বেছে নিয়েছেন, ‘কোচ অ্যান্ড্রু ও অধিনায়ক প্যাটির সঙ্গে মিলেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শূন্যস্থান পূরণ নয় বরং লম্বা সময়ের জন্যই ওপেনার হিসেবে ভাবা হয়েছে স্মিথকে। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চার নম্বরে সফল গ্রিনকে ওই পজিশনের জন্য বিবেচনা করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, স্মিথের ক্যারিয়ারের বড় এক ঘটনা হতে যাচ্ছে ব্যাটিংক্রমের এই পরিবর্তন, ‘আমি তো বলব, সবকিছুই পরীক্ষা—নিরীক্ষার অংশ। স্টিভের সঙ্গে এ নিয়ে কথাও হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, ওর ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে যাচ্ছে এটি।’ গত দুই বছর ধরে ব্যাটিং ফর্মটা ঠিক স্মিথময় নেই তার। নতুন ভূমিকায় নতুন চ্যালেঞ্জ ৩৪ বছর বয়সী স্মিথকে অনুপ্রাণিত করবে বলেই মনে করছেন দেশটির ক্রিকেটবোদ্ধারা। বেইলি মনে করেন এতে প্রলম্বিত হবে তার টেস্ট ক্যারিয়ার।
অস্ট্রেলিয়া দলে ৬ জন নির্দিষ্ট ব্যাটার নিশ্চিত করতে গ্রিনকে অন্তভুর্ক্ত করা হয়েছে। গত অ্যাশেজের পর মিচেল মার্শের কাছে জায়গা হারান গ্রিন। ওয়ার্নারের ফাঁকা জায়গায় আবার সুযোগ পেলেন গ্রিন। ১৩ সদস্যের দলে নেওয়া হয়েছে আরেক ওপেনার ম্যাট রেনশও। তবে খাজা—স্মিথের ব্যাকআপ হিসেবেই রাখা হয়েছে তাকে। ১৩ জনের দলে সুযোগ মেলেনি ওয়ার্নারের বিকল্প হিসেবে নাম আসা ক্যামেরন ব্যানক্রফট ও মার্কাস হ্যারিসের। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ টেস্টে খেলা অস্ট্রেলিয়ার একাদশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের একাদশে পরিবর্তন বলতে শুধু খাজার জায়গায় গ্রিনের দলে ঢোকা। রেনশ ছাড়াও পেসার স্কট বোল্যান্ডও ১৩ জনের দলে থাকলেও জায়গা পাবেন না একাদশে।
টেস্টে ব্যাটিং ওপেনের পর উইন্ডিজের বিপক্ষে স্মিথের নেতৃত্বেই ওয়ানডে সিরিজ খেলবে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। ট্রাভিস হেড সামলাবেন ডেপুটির দায়িত্ব। ২০১৮ সালে বল টেম্পারিং—কাণ্ডে অধিনায়কত্ব হারানোর পর গত বছর ভারত সফরেও ওয়ানডে সিরিজে অধিনায়ক ছিলেন স্মিথ। মায়ের মৃত্যুতে কামিন্স দেশে ফিরে যাওয়ার পর দায়িত্বটা পেয়েছিলেন স্মিথ। শুধু কামিন্সই নন, মিচেল মার্শ, মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজেলউডও ছুটি পেয়েছেন ওয়ানডে সিরিজ থেকে।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%ae%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%9a%e0%a7%80%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%aa%e0%a7%8d/
একই দিনে ঘোষিত ওয়ানডে দলে একেবারে নতুন মুখ হিসেবে ফাস্ট বোলার ল্যান্স মরিসকে ডেকেছে অস্ট্রেলিয়া। সম্ভাবনা রয়েছে এ সিরিজ দিয়ে তার অভিষেক হওয়ার। তবে রাখা হয়নি অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিসকে। ২০২২ সালের পর প্রথমবার ওয়ানডে দলে ঢুকেছেন ঝাই রিচার্ডসন। এ ছাড়া সুযোগ পেয়েছেন অ্যারন হার্ডি, ম্যাথিউ শর্ট ও নাথান অ্যালিস।