গত আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলার সুযোগ পেয়েও খেলেননি টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সদ্য সমাপ্ত নিলাম থেকেও নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি। অবশ্য গেল ডিসেম্বরের মিনি নিলামে আরেক সাকিবকে দলে ভিড়িয়েছে কেকেআর। নিলামে দলে টানার পর ‘সাকিব হুসাইন ইজ নাইট’—ফেসবুকে এভাবেই অখ্যাত এক ক্রিকেটারকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল কলকাতা।
অবশ্য কলকাতা দলে সাকিব নাম দেখে অনেকেই প্রথমে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। ধারণা করেছিলেন হয়তো বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার। অবশ্য ভুল ভাঙতেও সময় লাগেনি। অন্যদিকে, ভারতের বিহারের গোপালগঞ্জ জেলায় ততক্ষণে উচ্ছ্বাসের বন্যা বইতে শুরু করে। কারণ তাদের ঘরের ছেলে ১৯ বছর বয়সী সাকিবকে ২০ লাখ রুপিতে দলে নিয়েছে শাহরুখ খানের দল।
কে এই সাকিব হুসাইন?
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রমতে, বিহারের গোপালগঞ্জে বেড়ে উঠেছেন সাকিব হুসাইন। তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে যায় ২০২১ সালে। পাটনায় অনুষ্ঠিত ক্রিকেট লিগে সবার নজর কাড়েন। দুরন্ত সুইংয়ের পাশাপাশি চমৎকার গতি ও লাইন-লেন্থ তার দিকে নজর দিতে বাধ্য করে। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
অনূর্ধ্ব ১৯ বিহার টিমে সুযোগ পেয়ে যান সাকিব। সেখানে পারফর্ম করে বেঙ্গালুরু জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে নিজেকে ঘষামাজা করার সুযোগ পেয়ে যান। ২০২২ সালে আবার মুস্তাক আলি ট্রফিতে বিহারের হয়ে খেলার সুযোগ পান সাকিব। সেখানেও পারফর্ম করেন। গুজরাটের বিপক্ষে ২০ রান দিয়ে নেন চারটি উইকেট।
মুস্তাক আলিতে ভালো পারফর্ম করার পরই আইপিএল টিমগুলোর নজরে পড়ে যান সাকিব। অনেকেই তাকে নেট বোলার হিসেবে যোগ দিতে প্রস্তাব করেছিল বলে জানা যায়। সাকিব বেছে নেন মহেন্দ্র সিং ধোনির টিম চেন্নাই সুপার কিংস। ২০২৩ আইপিএলে চেন্নাইয়ের নেটে বল ঘুরিয়েছেন। ভুল যে করেননি, তার প্রমাণতো পেলেন হাতেনাতে। নেটে সাকিবের প্রতিভা দেখে প্রশংসাও করেছিলেন ধোনি।
চলতি কেকেআরে সুযোগ পাওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলছিলেন, ‘আইপিএলের পুরো টাকাটাই পরিবারের হাতে তুলে দেব। ওরা যা খুশি তাই করতে পারে। আমি শুধু বল করার নির্দিষ্ট জুতা এবং বেশ কিছু ক্রিকেটীয় সরঞ্জাম কিনব।’ কেকেআরের হয়ে খেলবেন ভেবেই উত্তেজিত সাকিব। প্রথম একাদশে সুযোগ পাবেন কি না তা অবশ্য জানেন না। সাকিব বলেন, ‘আমার পছন্দের ক্রিকেটার এমএস ধোনি।’
তিনি আরও জানান, ‘ক্রিকেট খেলা শুরু করার পর কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবিনি এমন দিন দেখতে পাব। নিলাম চলার সময় বাড়িতে বসে টিভিতে দেখছিলাম। প্রথমবার অবিক্রীত থাকার পর কোচ রবিন স্যারকে ফোন করে বলেও দিই, এবার আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে; কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডেই বিক্রি হয়ে যাই। সবাই খুশিতে ফেটে পড়েছিল তখন।’