পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ সব মুসলিমরা রোজা রাখেন। এ কারণে রমজানে খাদ্যাভ্যাস ও খাওয়ার সময়ে পরিবর্তন আসে। সেহরিতে খাবার খাওয়ার পর সারাদিন না খেয়ে থেকে সন্ধ্যায় মাগরিবের সময় ইফতার করা হয়। ইফতারের পর সেহরি পর্যন্ত নানা খাবার খাওয়া হয়। আর এই খাদ্যতালিকায় কিঞ্চিৎ ভুলের কারণে হজমজনিত সমস্যা, গ্যাসট্রিক-অ্যাসিডিটি, বমি হওয়ার মতো সমস্যা হয়ে থাকে।
এসব সমস্যা থেকে নিজেকে সুস্থ রাখতে রোজায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া এবং তা সঠিক সময়ে খেতে হবে। এখন প্রশ্নে হচ্ছে, তাহলে ইফতারের ঠিক কতক্ষণ পর রাতের খাবার খাওয়া ভালো এবং সেহরির খাবার কখন খাওয়া উচিত? সম্প্রতি এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল পুষ্টিবিদ মাহফুজা নাসরীন শম্পা। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
এ পুষ্টিবিদ বলেন, রাতের খাবার ইফতারের কতক্ষণ পর খেতে হবে তা নির্ভর করছে ইফতারে কেমন খাবার ও কী পরিমাণ খাওয়া হচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে। ইফতারে যদি হালকা খাবার খাওয়া হয় যেমন এক গ্লাস শরবত, দুটি খেজুর ও যেকোনো একটি ফল, তাহলে সন্ধ্যায় ইফতার বা নামাজের এক ঘণ্টা পর রাতের খাবার খাওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাতের খাবারে ভাত বা রুটি, ডাল, মাছ-মাংস ও সবজি রাখতে পারেন।
আবার ইফতারে যদি কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন জাতীয় খাবার এবং অন্যান্য নানা ধরনের খাবার একসঙ্গে রাখা হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবে ভারী বা বেশি খাবার খাওয়া হয়। ইফতারে যদি ভারী খাবার থাকে তাহলে রাতের খাবার হালকা রাখতে পারেন। কারণ, ইফতারে যদি ভারী খাবার রাখা হয় তাহলে সেসব হজমের জন্য সময়ের প্রয়োজন হয়। এ জন্য ইফতার করার কমপক্ষে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা পর রাতের খাবার খাওয়া উচিত। আর ইফতারের পর সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে না পড়ে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
ইফতারে খাবারের পরিমাণ বেশি হলে তখন রাতে খুবই হালকা খাবার খেতে পারেন। যেমন এক গ্লাস দুধ, একটি কলা, সেদ্ধ ডিম, এক বাটি স্যুপ বা সবজি খেতে পারেন। এতে খাবার গ্রহণের পরিমাণ সমতায় থাকবে এবং খাবারও সহজেই হজম হবে।
এদিকে সেহরির খাবার রাতের শেষ সময় খাওয়া ভালো। অনেকেই মনে করেন রাত ১টা বা ২টার সময় একেবারে খাবার খেয়ে ঘুময়ে পড়া ভালো। এটা উচিত নয় না। সেহরির সময় শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা বা এক ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে উঠে খাবার খাওয়া উচিত। এ সময় খাদ্যতালিকায় সুষম খাবার রাখতে হবে। তাহলে সারাদিন যথেষ্ট পরিমাণ শক্তি পাবে শরীর। আর যতটা সম্ভব তেল-মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এ সময় নরম ভাত, সবজি, মাছ বা মুরগির পাতলা তরকারি, দই-চিড়া, ওটস বা এক গ্লাস দুধের সঙ্গে কলা বা খেজুর খেতে পারেন। এতে সারাদিন বেশ ভালো থাকবে শরীর।