এই যুগে এসে চাকুরীজীবী হওয়ার চেয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য বেশী অনুপ্রাণিত হচ্ছে মানুষ। কারণ অনেকেরই নিজ থেকে কিছু করার স্বপ্ন থাকে। নিজে হয়ে উঠতে চান উদ্যোক্তা। এর পেছনে রয়েছে অনেক কারন।
আমরা দেখবো যে আসলে কি করলে আপনি ও একজন সফল উদ্যাক্তা হতে পারবেন। এমন ৯ টি উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় এখানে শেয়ার করা হচ্ছে, যা অনুসরণ করে আপনি ও নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন।
১। নিজের স্কিলকে আপগ্রেড করতে হবে
আপনার যে স্কিলই থাকুক, সেটাকে আপগ্রেড করতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার ফিল্ডে যদি আপনি খুব এক্সপার্ট না হন, তাহলে আপনাকে কম্পিটিশনে ঠিকে থাকতে অনেক স্ট্রাগল করতে হবে। তাই শুরুতে সবার আগে, নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্টের দিকে মনযোগ দিতে হবে। এর জন্য আপনাকে প্রচুর বই পড়তে হবে। সিমিলার বিজনেসের সাথে কাজ করতে হবে কিংবা সম-মানসিকতার মানুষের সাথে আড্ডা দিতে হবে।
আপনি যদি নিজের স্কিলকে খুব ভালো একটা জায়গায় নিয়ে যান এবং এর পরে ওই স্কিল অনুযায়ী একটা উদ্যোগ নেন, তাহলে আপনার কনফিডেন্স লেভেল অনেক বেশী হাই থাকবে, কারন আপনি জানবেন যে আপনি কি করতেছেন এবং আপনার নেক্সট স্টেপ কি।
২। একটা সমস্যা খুজে বের করতে হবে, যা আপনি নিজের সলভ করতে পারবেন
আপনাকে এমন একটা সমস্যা খুজে বের করতে হবে, যা সমাধানের জন্য কেউই কাজ করছে না বা খুব বেশী লোক কাজ করছে না। এবং ওই সমস্যা যেন আপনি নিজে সলভ করতে পারেন। ওই সমস্যাটাই হতে পারে আপনার ব্যবসা বা উদ্যোগের হাতিয়ার। শুরুতে আপনাকে ওই সমস্যাটা নিয়ে পর্যবেক্ষন করতে হবে এবং বুঝতে হবে যে সেটা সল্ভ করতে আপনার কেমন সময় লাগবে এবং কেমন এফোর্ট দিতে হবে।
আপনার সময় এবং এফোর্টের পরিমান অনুযায়ী আপনাকে ওইটার একটা দাম ফিক্সড করতে হবে। এবং ফাইলানি আপনার আশেপাশে যারা এই সমস্যাটা ফেস করতেছে তাদেরকে আপনি আপনার সার্ভিস অফার করবেন। এভাবেই মুলত একজন উদ্যোক্তা তার ইনিশিয়েটিভ শুরু করে।
৩। যে টপিক নিয়ে কাজ করবেন, সেটায় আপনাকে প্যাশনেট হতে হবে
আপনি যে বিষয় নিয়েই কাজ করুন না কেন, সেই বিষয়ে আপনাকে প্যাশনেট হতে হবে। মানে, ওই ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার আগ্রহ থাকা লাগবে। তা না হলে, আপনি কিছুদিন পরেই সেটায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। আর আগ্রহ হারিয়ে ফেললে আপনার উদ্যোগ ও আলোর মুখ দেখবে না।
৪। রিস্ক নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে
বড় ধরনের রিস্ক নিতে হয় উদ্যোক্তাদের। আপনার মাঝে ও রিস্ক নেওয়ার মত মানসিকতা থাকতে হবে। কারন রিস্ক না নিলে এখানে গ্রো করা কোন ভাবেই সম্ভব নাহ। রিস্ক নেয়া বলতে অনেক টাকা স্পেন্ড করাকে বুঝানো হচ্ছে না। রিস্ক নেওয়া মানে হচ্ছে আপনার স্কিল এবং আপনার কাজের উপর বিশ্বাস রেখে ওইটায় নিজেকে ধরে রাখা।এই মানসিকতা থাকলে আপনি খুব সহজেই আপনার উদ্যোগকে অনেক ভালো একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
৫। কম্পিটিশন এনালাইজ এবং ফিন্যান্স এনালাইজ করতে হবে
যে সার্ভিস বা প্রোডাক্ট নিয়ে আপনি কাজ করবেন, সেটার ইতোমধ্যে যে মার্কেট আছে সেখানে কম্পিটিশন কেমন সেটা আপনাকে বুঝতে হবে এবং খুজে বের করতে হবে। তারা কেমনে খরচে ওই প্রোডাক্ট প্রডিউস করছে এবং কেমন খরচে সেটা সেল করছে, এটা বুঝতে হবে।
সেই অনুযায়ী আপনার নিজস্ব ফিন্যান্স প্ল্যান করতে হবে। মনে রাখবেন, শুরুতেই খুব বেশী ইনভেস্ট করা যাবে না বা খুব বড় ফিন্যান্স প্ল্যান করা যাবে না। উদ্যোগ যদি ইউনিক হয়, তাহলে সেখানে আস্তে আস্তে ইনভেস্ট করাটাই বেটার হবে। আপনি যদি সঠিকভাবে ফিন্যান্স প্ল্যান করতে পারেন, তাহলে আপনার লাভ-লস কি হবে, কিভাবে হবে সব আগেই বুঝে ফেলতে পারবেন।
৬। নিজেই নিজেকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে এবং আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে
সব সময় নিজের কাজ এবং নিজের এবিলিটির উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আপনার নিজেকে এটা বিশ্বাস করাতে হবে যে, আপনি এটা পারবেন। এটা করার জন্যই আপনার জন্ম হয়েছে এবং এটাই আপনার সেক্টর। এই বিশ্বাসটা যখন আপনার মনের মধ্যে অটুট ভাবে চলে আসবে, তখন আপনি খুব ভালো ভাবেই গ্রো করতে পারবেন।
৭। গোল সেট করতে হবে এবং সেটা ভিজুয়ালাইজ করতে হবে
আপনার কাজের জন্য নির্দিষ্ট কিছু গোল সেট করতে হবে এবং ওই গোলকে ভিজুয়ালাইজ করতে হবে। আমরা যেমন একটা বই পড়ার সময় ওইটার কাহিনী আমাদের মনের মধ্যে ভিজুয়ালাইজ করি, ঠিক ওই ভাবে আপনার গোলকে ভিজুয়ালাইজ করতে হবে। এর ফলে আপনি আত্মবিশ্বাস পাবেন এবং নিজের উপর কনফিডেন্স বাড়তে থাকবে। ছোট ছোট গোল সেট করবেন, এবং সেসব গোলে সঠিক সময়ে নিজেকে নিয়ে যাবেন
৮। সম-মানসিকতার, স্কিলড এমপ্লয়ী হায়ার করতে হবে
একটা সময় আপনার কোম্পানির জন্য এমপ্লয়ীর দরকার হবে এবং ওই অবস্থায় আপনাকে স্কিলড কিছু মানুষ খুজে নিতে হবে, যাদের সাথে আপনার মেন্টালিটি এবং চিন্তাধারার মিল আছে। একই সাথে তারা যেন আপনার প্ল্যান এবং প্ল্যাশনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে এটা এনসিউর করতে হবে। স্কিলড মানুষ ছাড়া কোনভাবেই আপনি আপনার বিজনেসকে গ্রো করতে পারবেন না।
৯। টার্গেটেড কাস্টমার খুজে বের করতে হবে
আপনার সার্ভিস এবং প্রোডাক্ট যখন প্রস্তুত হবে, তখন আপনাকে খুজতে হবে টার্গেটেড কাস্টমার। এর জন্য আপনাকে করতে হবে মার্কেটিং। এই ধাপটাই মুলত সবচেয়ে কঠিন ধাপ। আপনি যদি সঠিক একটা মার্কেটিং প্ল্যান রেডি করে ফেলতে পারেন, তাহলে আপনার জন্য কাস্টমার খুজে বের করা ও অনেক সহজ হয়ে যাবে।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/it-skill/
১০। নিজেকে এবং নিজের বিজনেসকে ব্র্যান্ডিং করতে হবে
আপনার নিজেকে একটা ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আপনার উদ্যোগের কথা উঠলেই যেন মানুষ আপনার নাম মনে করতে পারে, এমন ভাবে নিজেকে ব্র্যান্ডিং করতে হবে। আপনি যদি নিজেকে এবং নিজের কোম্পানিকে সঠিকভাবে ব্র্যান্ডিং করতে পারেন, তাহলে আপনি অনেক লং রান বিজনেসে এগিয়ে যেতে পারবেন।