এআই, এআর থেকে শুরু করে ডিজিটাল প্রযুক্তির নানা প্রয়োগ চলতি বছরেও একাধিক চমক সৃষ্টি করছে৷ প্রথমদিকে উচ্চ মূল্য অন্তরায় হলেও ধীরে ধীরে এমন প্রযুক্তি আরো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারে৷
২০২৪ সালে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বেশ কিছু উদ্ভাবনের সম্ভাবনা রয়েছে৷ যেমন সুপারম্যানের মতো দৃষ্টিশক্তি, উড়ন্ত গাড়ি বা এআই-এর মাধ্যমে আমাদের আবেগের পূর্বাভাস৷ কিন্তু কোন প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠবে? অবশ্যই ২০২৩ সালে যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে, সেই এআই-এর উল্লেখ করতে হয়৷ পার্সোনালাইজড এআই-এর প্রবণতা বাড়ছে৷
অর্থাৎ, আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের ভিত্তিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মডেল আপনার জীবনযাত্রা ও প্রয়োজন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট উত্তর দেবে৷ সেই সবই আরো বেশি মানুষের নাগালে চলে আসছে৷ বর্তমানে বেশিরভাগ অ্যাপ্লিকেশন ক্লাউড পরিষেবা হিসেবে পাওয়া যায়৷ তবে কোম্পানিগুলি এবার আপনার ব্যক্তিগত ডিভাইসে অফলাইন মডেল হিসেবে এআই কাজে লাগানোর সুযোগ করে দিতে চায়৷ সেটা সম্ভব করতে আপনার স্মার্টফোন বা ল্যাপটপে এমন এআই ক্ষমতাসম্পন্ন এক শক্তিশালী চিপ থাকতে হবে৷ ইন্টেল ও কোয়ালকমের মতো কোম্পানি ইতোমধ্যেই সেই লক্ষ্যে কাজ করছে৷ গত বছর জেনারেটিভ এআই-এর সূচনা ঘটেছিল৷ এবার তথাকথিত ইমোশন এআই-এর উদয় হতে পারে৷
অর্থাৎ এআই আপনার আবেগ বিশ্লেষণ করে সেই অনুযায়ী উত্তর দিতে পারবে৷ শুনতে গা ছমছমে মনে হলেও এই প্রযুক্তি ডিভাইসগুলির সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে বিপ্লব আনতে পারে৷ যেমন, এআই গাড়ি চালকের আবেগ বিশ্লেষণ করে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সতর্কতা ও যাত্রাপথ বাতলে দেবে৷ সে ক্ষেত্রে গাড়ি চালানো আরো নিরাপদ হয়ে উঠবে৷ গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে সেটাই চলতি বছরের একমাত্র পরিবর্তন নয়৷ অটোনোমাস ড্রাইভিং প্রযুক্তি চলতি বছর আরো উন্নত হয়ে উঠতে পারে৷
লস এঞ্জেলেস বা সান ফ্রানসিস্কোর মতো শহরে অটোনোমাস ট্যাক্সি পরিষেবা ইতোমধ্যেই চালু হয়ে গেছে বটে, কিন্তু সাম্প্রতিক দুর্ঘটনাগুলি দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলছে৷ ফলে জনপ্রতিনিধিরা হয়তো লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে আরো দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন৷ ২০২৪ সালে কি উড়ন্ত গাড়ি দেখা যাবে? উত্তরটা হ্যাঁ এবং না৷
একাধিক কোম্পানি চলতি বছরে প্রথম বাণিজ্যিক মডেল ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে চায়৷ কিন্তু প্রায় পাঁচ লাখ ইউরো মূল্যের সেই যান অত্যন্ত কম মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে থাকবে৷ তার চেয়ে বরং এয়ার ট্যাক্সি চড়া সস্তার হতে পারে৷ যেমন, জার্মানির এক কোম্পানি এ বছর প্যারিস অলিম্পিক্সে এমন পরিষেবা চালু করতে চায়৷ তবে সেই পরিষেবার লাইসেন্সের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে অ্যাপেল কোম্পানি ভিশন প্রো নামের হেডসেট তুলে ধরেছে৷ চলতি বছরের শুরুতে সেটির বাজারে আসছে৷ ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ও বাস্তব জগতের সংমিশ্রণকে এআর বা অগমেন্টেড রিয়্যালিটি বলা হয়৷ সে ক্ষেত্রে ব্যবহারকারী হাতের ইঙ্গিতের সাহায্যে বাস্তব পরিবেশে ডিজিটাল অ্যাপ ফুটিয়ে তুলতে পারে৷ তবে প্রায় তিন হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার মূল্যের সেই ডিভাইস খুব বেশি মানুষের পকেটের নাগালে থাকবে না৷
কমপক্ষে শুরুর দিকে উচ্চ মূল্যই অন্তরায় থেকে যাবে৷ এআই ও এআর সমন্বয় করলে আরো আকর্ষণীয় কিছু উঠে আসতে পারে৷ এআই প্রযুক্তি সম্বলিত এআর হেডসেট ব্যবহারকারীদের আশেপাশের পরিবেশ সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে সাহায্য করতে পারে৷ যেমন শহরের মাঝে হাঁটার সময়ে কোন রেস্তোরাঁয় খাওয়া যায়, মনে এমন ভাবনা এলে রেস্তোরাঁর পাশেই গ্রাহকদের রিভিউ ফুটে উঠবে৷