এবার একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিনটি যেন ভোলাহাট উপজেলার মানুষের জন্য একটু ভিন্ন ভাবেই এসেছে। কেননা তাদের উপজেলার জিয়াউল হক পেয়েছেন রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানজনক একুশে পদক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে সে পদক গ্রহণের পর গ্রামে ফিরেছেন জিয়াউল হক।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই তাই জিয়াউল হকের বাড়িতে তার ছোট্ট পাঠাগারে ছিল গ্রামের মানুষের ভিড়। একুশে প্রদকপ্রাপ্ত জিয়াউল হককে নিয়েই একুশের প্রভাত ফেরি করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে জিয়াউল হকের সঙ্গে বেশ কিছুসময় ধরে কথোপকথন হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তাই বুধবার জিয়াউলের বাড়িতে অভিনন্দন জানাতে আসা অনেকেরই আগ্রহ ছিলো কি কথা হয়েছিলো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে, কি বলছিলেন সাদাসিধে জিয়াউল হক।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়ে জিয়াউল হক বলেন, আমি আমার পাঠাগারের স্থায়ী ভবন ও বই চেয়েছিলাম, সেই সঙ্গে আমার এলাকার স্কুলটি সরকারিকরণের বিষয়ে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী আমার কথা শুনেছেন ও দাবিগুলো মেনে নিয়েছেন।
অনেকে দিন থেকেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ইচ্ছা ছিলো সাদা মনের মানুষ জিয়াউল হকের। অনেকের কাছেই বলেছিলেন সেই আকাঙ্ক্ষার কথা। তার সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুশি ৯১ বছর বয়সী জিয়াউল হক।
আনন্দাশ্রুতে এ প্রতিবেদকের কাছে তিনি বলেন, এখন মরেও শান্তি পাব।
জিয়াউল হক পাঠাগারের বই পড়ে আজ অনেকেই শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন। জিয়াউল হকের একুশের পদক প্রাপ্তির পর তারাও জানিয়েছেন জিয়াউল হকের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও নিজেদের আনন্দের অনুভূতি। একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের জন্য কিছুই চাননি সাদা মনের মানুষ জিয়াউল হক হক। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাদাসিধে মানুষটির আবদার ছিলো, তার পাঠাগারের উন্নয়ন ও তার গ্রামে তারই সহযোগিতায় গড়ে উঠা স্কুলটি সরকারিকরণের। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যেই জিয়াউল হকের সেই দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে বেশ খুশি স্থানীয়রা।
এ দিকে দুপুরে জিয়াউল হককে শুভেচ্ছা জানাতে তার বাড়িতে যান চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান ও পুলিশ সুপার ছাইদুল হাসান। এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি সকল বিষয় অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে।
এ সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জিয়াউল হকের পাঠাগারের জন্য বই উপহার দেন জেলা প্রশাসক।