চালের কথা ভাবলে সাধারণত সাদা কিংবা বাদামি রঙের চালের ছবিই চোখে ভাসে। কিন্তু চালের একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর জাত রয়েছে। বলছি কালো চালের কথা। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে ভরপুর কালো চাল একটি সুপারফুড যা আমাদের সামগ্রিক সুস্থতাকে উন্নত করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক খাদ্যতালিকায় কালো চাল যুক্ত করার স্বাস্থ্য উপকারিতা-
১. হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
কালো চালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য সুবিধাগুলোর মধ্যে একটি হলো হার্টের স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব। গবেষণায় দেখা গেছে যে, কালো চাল অ্যান্থোসায়ানিন সমৃদ্ধ। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চালকে গাঢ় বেগুনি-কালো রঙ দেয়। এই অ্যান্থোসায়ানিন মুক্ত র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে, প্রদাহ হ্রাস করে এবং ধমনীতে ক্ষতিকারক প্লেক তৈরি রোধ করে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে। কালো চালের উচ্চ ফাইবার উপাদান কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। কালো চালের নিয়মিত খেলে তা হৃদপিণ্ড ভালো রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
২. রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে
যারা ডায়াবেটিস রক্তে শর্করার বৃদ্ধি রোধ করতে চান তাদের জন্য কালো চাল একটি চমৎকার পছন্দ হতে পারে। সাদা সাদা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারে। এদিকে ওয়েবএমডি অনুসারে, কালো চালের গ্লাইসেমিক সূচক কম। এর মানে এটি রক্তের প্রবাহে গ্লুকোজকে আরও ধীরে ধীরে ছেড়ে দেয় এবং রক্তে শর্করার আকস্মিক স্পাইক প্রতিরোধ করে। কালো চালে থাকা ফাইবার চিনির শোষণকে কমিয়ে দিতেও সাহায্য করে, এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য আদর্শ খাবার।
৩. বার্ধক্যের লক্ষণ কমায়
আপনি যদি তারুণ্যে বজায় রাখার জন্য প্রাকৃতিক উপায় খোঁজেন তবে কালো চাল আপনার গোপন অস্ত্র হতে পারে। কালো চালের উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সামগ্রী, বিশেষ করে অ্যান্থোসায়ানিন এবং ভিটামিন ই অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে, যা ত্বকের বার্ধক্যের অন্যতম প্রধান কারণ। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ফ্রি র্যাডিক্যালের কারণে হওয়া ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, যা বলিরেখা, সূক্ষ্ম রেখা এবং বার্ধক্যজনিত অন্যান্য লক্ষণের কারণ হতে পারে। কালো চালে অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা ত্বককে হাইড্রেটেড এবং পুষ্ট রাখে। ফলে ত্বক হয় স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল।
৪. হজমের স্বাস্থ্য বাড়ায়
ভালো হজম সামগ্রিক স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি। কালো চাল স্বাস্থ্যকর পাচনতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কালো চালে থাকা ফাইবার নিয়মিত মলত্যাগে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে, যা একটি সুষম পাচনতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। হজমের উন্নতি করে কালো চাল নিশ্চিত করতে সাহায্য করে যে আপনার শরীর কার্যকরভাবে পুষ্টি শোষণ করছে। যার ফলে সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো হয়।