প্রবাদে বলে, ইতালির নেপলস শহরে নাকি দেবতা দুজন। একজন যীশু খ্রিস্ট। অন্যজন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। আশির দশকে ধুঁকতে থাকা এই নেপলস শহরের ক্লাব নাপোলিতে রীতিমত বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। আর্জেন্টাইন এই জাদুকরের অবদান এতই বেশি তার মৃত্যুর পর নাপোলি নিজেদের স্টেডিয়ামের নামই বদলে ফেলে ‘ডিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা স্টেডিয়াম’ নামে।
সেই নাপোলিতে দুই বছর আগে এসেছিলেন আনকোরা এক তরুণ। বামপ্রান্তে তিনি এতই সৃষ্টিশীল নাপোলির ভক্তরা তাকে ভালোবেসে ডেকে ফেলে নতুন ম্যারাডোনা। জর্জিয়ার সেই তরুণের নাম কাভিচা কাভারাৎসখেলিয়া। নাপোলিকে গেল মৌসুমে ৩৩ বছর পর ইতালিয়ান লিগ শিরোপা এনে দিয়েছিলেন তিনি। ভালোবেসে তার নামটা এরপর থেকে হয়ে যায় কাভারোডোনা।
নতুন দিনের এই ম্যারাডোনাকেই এবার পাখির চোখ করেছে ম্যারাডোনারই আরেক স্মৃতি বিজড়িত ক্লাব এফসি বার্সেলোনা। লিওনেল মেসি পরবর্তী যুগে এসে স্প্যানিশ এই ক্লাবটি এখন পর্যন্ত নিজেদের খুঁজে পায়নি। চলতি মৌসুম শেষ করতে হয়েছে কোনোপ্রকার শিরোপা ছাড়া। পারফরম্যান্সের দিক থেকেও ধারাবাহিকতা দেখা যায়নি দলের খেলোয়াড়দের মাঝে।
দলের পারফরম্যান্সের সেই ঘাটতি পূরণ করতে এবার কাভারাৎসখেলিয়ার দিকে নজর বার্সেলোনার। গত মৌসুমে নাপোলিকে শিরোপা এনে দেয়া কোচ লুসিয়ানো স্প্যালেত্তি বর্তমানে আছেন ইতালির দায়িত্বে। নতুন কোচের অধীনে চলতি মৌসুমে মোটেই ভাল করেনি নাপোলি। উলটো একাধিক খেলোয়াড়ের ক্লাব ছাড়ার গুঞ্জন রয়েছে। সেই তালিকায় বড় নাম কাভারাৎসখেলিয়া।
তবে নাপোলিও এখনই হাল ছাড়তে চায় না জর্জিয়ার এই তারকাকে নিয়ে। দল ছন্দে নেই, এমন অবস্থায় নির্ভরযোগ্য এক পারফর্মারকে হারাতে নারাজ ইতালিয়ান ক্লাবটি। বিশেষ করে আরেক বড় তারকা এবং আফ্রিকার বর্ষসেরা ফুটবলার ভিক্টর ওসিমেনের ক্লাব ছাড়া যেহেতু নিশ্চিত, তাই নতুন করে আর ঝুঁকি নিতে চায় না নাপোলি।
অবশ্য দলবদলের পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে কাভারাৎসখেলিয়ার এজেন্ট মামুকা জুগেলির ওপর। এই মুহূর্তে তিনি নেপলসেই আছেন। সেখান থেকেই দেখভাল করছেন দলবদলের বিষয়ে। নাপোলির কাছে কাভারাৎসখেলিয়াকে ধরে রাখতে বেশকিছু প্রস্তাবও নেয়া হয়েছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী এই কাভারাৎসখেলিয়ার এজেন্টকে বাৎসরিক ৫ মিলিয়ন ইউরো এবং অন্যান্য বোনাস দিতে হবে। যদিও নাপোলি প্রেসিডেন্ট এই প্রস্তাবে রাজি নন বলেই জানিয়েছে ইতালির গণমাধ্যম। শেষ পর্যন্ত নতুন মৌসুমে তাই কোথায় দেখা যাবে নতুন ম্যারাডোনাকে তা জানতে অপেক্ষাই করতে হচ্ছে।