বলিউডে খুব বেশি ছবি করেননি তিনি। তবে তাঁর ভক্ত সংখ্যা নেহাত কম নয়। রুপোলি পর্দার জগতে সে-ভাবে তাঁকে দেখা না-গেলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি বেশ সক্রিয় এবং হামেশাই ধরা দেন পাপারাৎজির ক্যামেরায়। তাঁর প্রিয় বন্ধুদের তালিকায় রয়েছেন করিনা কাপুর খান এবং করিশ্মা কাপুরের মতো তারকারা। কথা হচ্ছে, অভিনেত্রী অমৃতা অরোরার বিষয়ে। তাঁর আরও একটা পরিচয় রয়েছে। তিনি অভিনেত্রী মালাইকা অরোরার ছোট বোন।
বি-টাউনে অমৃতা অরোরা ২১টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ছবি করার পাশাপাশি রিয়েলিটি শো-তেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। ৪৫ বছর বয়সেও তাঁর রূপের জাদুতে মুগ্ধ ভক্তরা। ২০ বছরের কেরিয়ার অমৃতার, তবে তাঁর জীবনও রুপোলি পর্দার দুনিয়ার থেকে কিছু কম নয়। বিতর্কিত তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও। প্রেম-বিয়ে-সম্পর্কের জেরে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চা হয়েছে বিস্তর। বন্ধুর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। শুনে নেওয়া যাক সেই গল্পই।
১৯৮১ সালের ৩১ জানুয়ারি জন্মেছিলেন অমৃতা অরোরা। মাত্র ২২ বছর বয়সেই নিজের কেরিয়ারে পদার্পণ করেছিলেন তিনি। দিদি মালাইকার পথ অনুসরণ করেই গ্ল্যামার দুনিয়ায় আসা। প্রথমে ভিডিও জকি হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কিতনে দূর কিতনে পাস’ ছবির হাত ধরে দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। যদিও ডেবিউ ফিল্ম তেমন ব্যবসা করতে পারেনি। তবে প্রচারের আলোয় এসেছিলেন অমৃতা।
২০০৯ সালে শাকিল লাদাকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন অভিনেত্রী। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই বিয়ে নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন খোদ শাকিল লাদাকের প্রাক্তন স্ত্রী। তাঁর দাবি ছিল, অমৃতার সঙ্গে শাকিলের সম্পর্কের কারণেই সংসার ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। শোনা যায়, অমৃতা অরোরা এবং শাকিল লাদাক সেই কলেজের সময় থেকেই বন্ধু ছিলেন। শাকিলের স্ত্রী নিশাও অমৃতার বন্ধু ছিলেন। ২০০৫ সালে শাকিলের সঙ্গে অমৃতার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।
যদিও এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০০৪ সালে পাক বংশোদ্ভূত ইংল্যান্ডের ক্রিকেট তারকা উসমানের সঙ্গে অমৃতার প্রণয়ের সূত্রপাত হয়। আসলে সেই সময় একটি ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে ভারতে এসেছিলেন তিনি। তখনই দেখা হয় দু’জনের। এক বার এক সাক্ষাৎকারে অমৃতা স্বীকার করেছিলেন, “আমি উসমানকে ভালবাসতাম। আর তাঁর কারণেই ক্রিকেট আমার দ্বিতীয় প্রেম।” উসমান যখন ভারতে আসতেন, তখন দুজনেই বিভিন্ন হাই প্রোফাইল পার্টিতে যোগ দিতেন। এমনকী উসমানের ভাই বলিউডে জমি খুঁজছিলেন, আর সেই কাজে অমৃতাও তাঁকে সাহায্য করেছিলেন।
তবে ২০০৬ সাল নাগাদ তাঁদের সম্পর্ক নতুন মোড় নেয়। কারণ ওই সময় থেকে বন্ধুর স্বামী শাকিলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তাঁর। সেই কথা জানাজানি হতেই শাকিল এবং নিশার সংসারে অশান্তির ঝড় ওঠে। অবশেষে ২০০৮ সালে নিশার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় শাকিলের। বিচ্ছেদের পর প্রাক্তন স্বামী এবং অমৃতার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন নিশা। শোনা যায়, শাকিলের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন অমৃতা। সেই কারণেই তড়িঘড়ি বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
মুম্বইতে বসেছিল শাকিল ও অমৃতার জমকালো বিয়ের আসর। তিন ধর্ম মতে বিয়ে করেছেন তাঁরা। প্রথমে খ্রিস্টান রীতিতে বিয়ে করেছেন। যেখানে করিনা কাপুর খান এবং অর্পিতা খান ব্রাইডমেড সেজেছিলেন। আর অভিনেত্রীর দিদি মালাইকা ছিলেন মেড অফ অনার। এর পর অমৃতা-শাকিলের বিয়ে হয় মুসলিম রীতি মেনে এবং পরে পঞ্জাবি রীতি মেনেও বিয়ের আচার-অনুষ্ঠান হয়।
আসলে অমৃতার পরিবারে নানা ধর্মের মানুষ রয়েছে। যেমন- অমৃতার মা জয়েস পলিকার্প এক জন মালয়ালি খ্রিস্টান। আবার অমৃতার বাবা অনিল অরোরা পঞ্জাবি পরিবারের। অন্য দিকে আবার, অমৃতার স্বামী শাকিল মুসলিম ধর্মাবলম্বী। প্রসঙ্গত, অমৃতার দিদি মালাইকা অরোরা বিয়ে করেছিলেন আরবাজ খানকে। অবশ্য তাঁদেরও বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে।