গ্রুপ স্টাডি’—পড়াশোনার ট্র্যাকে থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি কৌশল। এর মাধ্যমে একাডেমিক পারফরম্যান্সের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উন্নতি করা সম্ভব। তবে কীভাবে বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ স্টাডিকে একটি কার্যকর সেশনে পরিণত করা যায় সেটা জানা থাকলে এ কাজটি আরও আনন্দদায়ক এবং সহজ হবে।
স্টাডি গ্রুপ তৈরি
সাধারণত একই ক্লাসের চার-পাঁচজন বন্ধু মিলে একটি ‘স্টাডি গ্রুপ’ তৈরি করা যেতে পারে। এটা তোমার দৈনন্দিন পড়াশোনায় নতুন এক মাত্রা যোগ করবে। অথবা নিয়মিত কিংবা সাপ্তাহিক গ্রুপ স্টাডি করে এমন একটি গ্রুপের সঙ্গেও যুক্ত হওয়া যায়। এর মাধ্যমে শেখা, শেখানো এবং জটিল সব প্রশ্নের ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়।
লক্ষ্য নির্ধারণ
যেকোনো ক্ষেত্রেই লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারাটাই মনোযোগ ধরে রাখতে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে। তাই কেন গ্রুপ স্টাডি করছ—তার একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে নাও।
রিসোর্স শেয়ারিং
একসঙ্গে কয়েকজন স্টাডি করলে দেখা যায়—কারও না কারও কাছে বিগত ক্লাস লেকচার, সহায়ক বই, নোট করা থাকে। এ ক্ষেত্রে, একটি ভালো নোট তৈরি করা যায় এবং ফ্রেন্ডদের সঙ্গে পড়ার সময় ভুলত্রুটি সংশোধন করা যায়। এমনও অনেক থিম চলে আসে হয়তো টপিকটিকে তুমি সেই অবস্থায় চিন্তাও করোনি। সঙ্গে করে আনা অন্যের তৈরি নোটগুলো থেকে আরও ভালো রিসোর্স এবং তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়।
কাজ ভাগ করে নাও
ধরো তোমার পাঁচটি বিষয় পড়তে হচ্ছে। এর মধ্যে একজনকে একটি করে পাঁচজনের একটি দলে ভাগ করে নিতে পার। তাহলে একটি বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে এক সপ্তাহে পড়া ও নোট শেষ করে, সপ্তাহ শেষে গ্রুপ স্টাডি সেশনে বাকি বন্ধুদের পড়ানো হবে এবং প্রত্যেকের ভাগ করে নেওয়া পড়া বা মূল কাজগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাবে। এতে করে প্রত্যেকেই গ্রুপে অবদান রাখতে পারবে।
অ্যাসাইনমেন্ট, হোমওয়ার্ক নিয়ে আলোচনা কর
কেবল অধ্যায়ভিত্তিক পড়াশোনায় সীমাবদ্ধ না থেকে ক্লাসের বিভিন্ন অ্যাসাইনমেন্ট, হোমওয়ার্কের প্রশ্ন, অনুশীলনীতে দেওয়া বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পার। এই অভ্যাসটা তোমার পড়ার বিষয়গুলোকে আরও ভালোভাবে বুঝতে এবং অ্যাসাইনমেন্টগুলোতেও সহায়ক হবে। এ ক্ষেত্রে, সবার সঙ্গে কানেক্টেড থাকা, যেকোনো আপডেট দেওয়ার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপগুলো ব্যবহার করতে পার।
একটি সেশনের পর ব্রেক নাও
পড়ার সময় বিরতি নিলে মস্তিষ্ক বিশ্রামের সুযোগ পায়। তাই একটানা এক ঘণ্টার একটি সেশন কমপ্লিট করার পর বিরতি নাও। এতে করে পরবর্তী সময়ে কাজ এগিয়ে নিতে সুবিধা হবে। অন্যথায়, একঘেয়েমি লাগতে পারে।
পড়াশোনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সঠিক গ্রুপ নির্বাচন করতে পারাটাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামগ্রিকভাবে, গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমে একটা কোলাবোরেশন ও ভালো বন্ধন তৈরি হয়, একাডেমিক পড়াশোনার উন্নতি এবং মোটিভেশন ধরে রেখে ট্র্যাকে থাকা যায়, শেখার প্রক্রিয়াটা আরও গতিশীল হয়। সর্বোপরি এটি একটি অনুপ্রেরণার উৎসও বটে।
উপকারিতা
সময়ের পড়া সময়ে গুছিয়ে নিতে পারবে। কঠিন টপিক সহজে আয়ত্ত করতে পারবে। পড়ার সময় একঘেঁয়েমি আসবে না। পড়া বোধগম্য করা, মুখস্থ করা এবং পরীক্ষায় উত্তর দেওয়ার বিভিন্ন কৌশল ও ধারণা বন্ধুদের কাছ থেকে পাবে। ভুল শোধরে নেওয়ার সুযোগ পাবে। নিজের ভুল কিংবা দুর্বলতা নিজের চোখে ধরা পড়ে না। গ্রুপস্টাডি করলে ভুল ও দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। ক্লাসের নোটগুলোরও রিভিউ করে নিতে পারবে একবার। ভুলে কোনো অসংলগ্ন তথ্য লিখে ফেললে কেটে দেওয়ার সুযোগ পাবে। বন্ধুদের মেধার সঙ্গে তোমার মেধার তুলনা করার সুযোগ পাবে। এতে তোমার ভেতর সচেতনতা সৃষ্টি হবে।