কয়েকদিন আগেই রবি ঠাকুরের ‘একলা চলো’ গান নিয়ে ব্যঙ্গ করায় নেটিজেনদের কটাক্ষের মুখে পড়েছিল দ্য কপিল শর্মা শো ও ক্রুষ্ণা অভিষেক। এই নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন ওপার বাংলার কবি ও অভিনেতা শ্রীজাত।
সমালোচনার মুখে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছেন ক্রুষ্ণা অভিষেক। সেই ঘটনার এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই ফের বিপাকে পড়ল দ্য কপিল শর্মা। তবে এবার ক্রুষ্ণা অভিষেক নয়, বরং নেটিজেনদের কটাক্ষের মুখে পড়লেন সুনীল গ্রোভার।
ঘটনা একটু খুলে বলা যাক, সম্প্রতি এই শোতে হাজির হয়েছিলেন তৃপ্তি দিমরি, বিদ্যা বালান এবং কার্তিক আরিয়া। ভুল ভুলাইয়া ৩ ছবির প্রচারেই এই শোয়ে এসেছিলেন তারা।
সেখানেই সুনীল গ্রোভার হাজির হন ডাফলি চরিত্রে। আচমকাই তৃপ্তিকে, সুনীল বলে উঠলেন, ‘অ্যানিম্যাল’ ছবিতে রণবীরের সঙ্গে যে দৃশ্যগুলো করেছেন, সেটা কি রিয়েল লাইফেও হয়?
লজ্জায় তৃপ্তি অবশ্য় এই প্রশ্নের তেমন কোনো উত্তর দেননি। এরপরই হেসে ওঠেন সুনীল। তবে নেটপাড়ার একাংশ মনে করছেন, তৃপ্তির সম্পর্কে এরকম উক্তি মোটেই শোভনীয় নয়। কমেডির নামে সুনীল নারীদের অসম্মান করেছেন।
‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’ দর্শক মহলে বেশ জনপ্রিয়। পেটে খিল ধরা কন্টেন্ট আর কমেডিয়ান কপিল শর্মার সঞ্চালনা দেখে অনুরাগীরাও প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সেই শোয়েই সম্প্রতি রবি ঠাকুরকে অপমান করা হয়!
‘বাংলা ভাষা-সংস্কৃতি কি সবসময়েই খোরাক?’ প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শ্রীজাত। তার কথায়, দিন পাঁচেক আগে নেটফ্লিক্সে ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’-এর একটি নতুন পর্ব সংযোজিত হয়, যেখানে অতিথিদের মধ্যে অভিনেত্রী কাজল ও কৃতী স্যানন উপস্থিত ছিলেন। সেই পর্বের মাঝামাঝি সময়ে কপিলের এক সহকারী শিল্পী বা কৌতুকাভিনেতা ক্রুষ্ণা অভিষেক উপস্থিত হন এবং সম্ভবত কাজলকে বাঙালি বংশোদ্ভুত হিসেবে পেয়েই রবীন্দ্রনাথের একটি গানকে মশকরার সরঞ্জাম হিসেবে বেছে নেন।
শ্রীজাত আরও বলেন, হঠাৎ তো বেছে নেননি, সেভাবেই চিত্রনাট্য সাজানো ছিল। ঠিক কী হয়েছে, কেমনভাবে হয়েছে, এখানে বিস্তারিত বলছি না। কিন্তু ‘একলা চলো রে’ গানটি নিয়ে ক্রুষ্ণা অভিষেক যে ব্যাঙ্গাত্মক অঙ্গভঙ্গি ও কথাবার্তার উদ্রেক করেছেন, তা সম্মান ও শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে বহুদূর চলে গেছে, অন্তত আমার চোখে। পর্বটি যথাস্থানে আছে, কেউ চাইলে দেখে নিতে পারেন, আর যারা ইতিমধ্যেই দেখেছেন, তারা ভালোই জানেন। এই কদর্য উপস্থাপনার বিরুদ্ধে আমি আমার লিখিত অভিযোগ ও আপত্তি জানালাম। যে বা যারা ওই কৌতুকদৃশ্য রচনায়, উপস্থাপনায়, অনুমোদনে ও সম্প্রচারে জড়িত থাকলেন, তাদের সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালাম। স্পষ্ট ভাষায়, দ্ব্যর্থ উচ্চারণে।
ওই পোস্টেই শ্রীজাতর হুঁশিয়ারি, ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’এর পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার দাবিও জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে উল্লিখিত পর্বের ওই অংশটি পুনর্সম্পাদনা করবার দাবিও থাকল। ছেড়ে দিলে দেওয়াই যায়, কিন্তু কতদিন এবং কতদূর ছাড়ব, সেটা ভাবা দরকার। আমি সাতদিন সময়সীমা ধার্য করলাম, বিনীতভাবেই। আর হ্যাঁ, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আইনজীবির সঙ্গে পরামর্শ করেই এই পোস্ট লিখছি, এটাও জানিয়ে গেলাম। আজ থেকে এক সপ্তাহ, অর্থাৎ ৭ নভেম্বর, ২০২৪-এর মধ্যে আমার দাবিগুলি গৃহীত, বিবেচিত এবং পূর্ণ না-হলে আমি আইনের পথে হাঁটব। বাংলা ভাষার একজন শব্দশ্রমিক হিসেবেই হাঁটব।