রোগ প্রতিরোধে জাম্বুরার অনন্য ভূমিকার কথা তো সবাই জানি আমরা। কিন্তু সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণা বলছে, এ ফলটির রয়েছে অ্যান্টি এজিং গুণ।
জাম্বুরায় অ্যান্টি এজিং গুণ
জাম্বুরা আমাদের দেশের এক জনপ্রিয় ফল। আর বলা হয়, এ মৌসুমি ফলটি সর্দিজ্বর প্রতিরোধ করতে পারে। এতে পাওয়া ভিটামিন সি এর কারণেই আসলে এ সিট্রাস ফলটির রোগ প্রতিরোধক্ষমতা রয়েছে। এর আছে নানা স্বাস্থ্যগুণ। এতে ক্যালরি খুব কম বলে ওজন কমাতে সহায়ক। আর সাম্প্রতিক নানা গবেষণা বলছে, জরা ও বার্ধক্য রুখতে পারে জাম্বুরা।
জাম্বুরার পুষ্টিগুণ
জাম্বুরায় প্রচুর ভিটামিন আর মিনারেল আছে। আর সবচেয়ে বেশি আছে ভিটামিন সি। একটি মাঝারি সাইজের (২৩১ গ্রাম) জাম্বুরায় আছে—
ক্যালরি ২৩১
আমিষ ৫ গ্রাম
শর্করা ৫৯ গ্রাম
আঁশ ৬ গ্রাম
দিনের দৈনিক চাহিদার শতকরা হিসাবে
রিবোফ্লাভিন ১২.৬ শতাংশ
থিয়ামিন ১৭.৩ শতাংশ
ভিটামিন সি ৪১২ শতাংশ
কপার ৩২ শতাংশ
পটাশিয়াম ২৮ শতাংশ
এ তথ্য দেখেই বোঝা যাচ্ছে এক দিনেই কয়েক দিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি মিলবে একটি জাম্বুরা খেলে। এ জন্যই আসলে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে জাম্বুরা। ফ্রি রেডিকেলের বিষাক্ত প্রভাব থেকে দেহের কোষগুলোকে রক্ষা করে এর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। এর পটাশিয়াম শরীরে তরলের ভারসাম্য ঠিক রাখে আর রক্তচাপ ঠিক রাখে।
আঁশে ভরপুর জাম্বুরা
একটি জাম্বুরায় আছে ৬ গ্রাম আঁশ। দিনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ২৫ গ্রাম আঁশ গ্রহণ করা উচিত। জাম্বুরার আঁশগুলো অদ্রবণীয় ধরনের। এতে কোষ্ঠ পরিষ্কার থাকে। পেটের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই আঁশ। তাই হজমে সহায়ক জাম্বুরা। বিভিন্ন গবেষণা বলে, ফলের আঁশ বয়সকালে হাঁড় ফাঁপা হয়ে যাওয়া রুখতে পারে।
ওজন কমাতে জাম্বুরা
একটি মাঝারি জাম্বুরায় মাত্র ২৩১ ক্যালরি আছে। এর পরিমাণের তুলনায় এই ক্যালরি খুবই কম। তাই ওজন কমাতে বেশ সহায়ক হতে পারে জাম্বুরা। এর আমিষ ও আঁশ পেট ভরা থাকার অনুভূতি দেয়।
বয়স ধরে রাখার গুণ রয়েছে জাম্বুরায়
জাম্বুরায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। দেহের কোষের সব ধরনের ক্ষয় রোধ করতে ও পূরণ করতে অত্যন্ত কার্যকর এই অ্যান্টি–অক্সিডেন্টগুলো। পরিবেশে আর আমাদের খাদ্যশৃঙ্খলে যে ক্ষতিকর রাসায়নিক ও ফ্রি রেডিকেল থাকে, সেগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে জাম্বুরায় উপস্থিত প্রচুর পরিমাণে থাকা এই অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। তাই দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধ করতে এর জুড়ি নেই। দিনের চাহিদার ৪০০ শতাংশ ভিটামিন সি তো আছেই, জাম্বুরায় আছে আরও কিছু অত্যন্ত কার্যকর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট।
এই সিট্রাস ফলে যে দুটি মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট সবচেয়ে বেশি থাকে, সেগুলো হলো নারিঙ্গেনিন ও নারিঙ্গিন। বলা হয়, যৌবনের মন্ত্র এই দুটিতেই নিহিত। এ ছাড়া
প্রদাহরোধী অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট লাইকোপিন আছে জাম্বুরায় প্রচুর।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/%e0%a6%ab%e0%a7%87%e0%a6%b8%e0%a6%ac%e0%a7%81%e0%a6%95-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ac%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%ab%e0%a7%81%e0%a6%9f%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87/
ভিটামিন সির এই উচ্চ পরিমাণ নিয়মিত গ্রহণ করলে তা ত্বকের ক্ষয় ও বুড়িয়ে যাওয়া রুখে দিতে পারে। এ ছাড়া রক্তে চিনি বেশি থাকলে বা খাদ্যের অব্যবহৃত শর্করা থেকে বিভিন্ন যৌগ তৈরি হওয়া বাধাগ্রস্ত করতে পারে জাম্বুরা৷ এই যৌগগুলোই ত্বকে বয়সের ছাপ ফেলে, শারীরিক গড়নে তারুণ্য কমিয়ে দেয়। ডায়াবেটিসও বাড়ায় এই ক্ষতিকর পদার্থগুলো। এ জন্য গবেষণা বলে, জাম্বুরা বয়স বাড়ার গতি ধীর করে দিতে পারে। তথ্যসূত্র: হেলথলাইন