হয়ে গেল ইংলিশ লিগ কাপের (কারাবাও কাপ) ফাইনাল। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বির দ্বৈরথ দেখলো ফুটবল বিশ্ব। একদিকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে দারুণ ছন্দে থাকা লিভারপুল। অন্যদিকে চিরচেনা জৌলস হারিয়ে শীর্ষ লীগে খোঁড়াতে থাকা চেলসি। কিন্তু, কাপ ফাইনালে এ ব্যবধান বোঝাই গেল না তেমন একটা।
মৌসুমে শিরোপা ছোঁয়ার একমাত্র সুযোগটা কাজে লাগাতে প্রাণপণ লড়ে গেছেন মারিসিও পচেত্তিনোর শিষ্যরা। কিন্তু, বিধি বাম! একেবারে শেষ সময়ে গিয়ে আর গোলবার আগলে পারলেন না চেলসির সার্বিয়ান গোলরক্ষক দোর্দে পেত্রোভিচ। খেলা শেষের দুই মিনিট আগে কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে ট্রেডমার্ক হেডে চেলসির স্বপ্ন গুড়িয়ে দেন ভার্জিল ভ্যান ডাইক। আর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো অল রেড শিবির।
ম্যাচের বেশিরভাগ নিয়ন্ত্রণ ক্লপ শিষ্যদের দখলে থাকলেও খুব একটা পিছিয়ে ছিল না চেলসি। মূহুর্মূহু আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের ভীড়ে উত্তেজনায় ঠাসা এক ম্যাচের সাক্ষী হয়েছে ফুটবল ফ্যানরা। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষে অক্ষত ছিল দুই দলের গোলবারই। নির্ধারিত সময়ের দুই অর্ধে গোলের দেখা অবশ্য পেয়েছিল দুই দলই। কিন্তু দুবারই দুই শিবিরকে হতাশায় পোড়ায় ভিএআর।
ফলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানেও নিজেদের অতিমানবীয় রূপ ধরে রেখেছিলেন কেলেহার ও পেত্রোভিচ। রোমাঞ্চকর টাইব্রেকারের দিকেই এগোচ্ছিল ম্যাচ। কিন্তু, হঠাৎই দৃশ্যপটে ৮৭ মিনিটে মাঠে নামা কন্সটেন্টিনোস সিমিকাস। অতিরিক্ত সময়ে মাত্র ২ মিনিট বাকি থাকতে কর্ণার পায় লিভারপুল। আর ম্যাচের অন্তিম ওই মূহুর্তেই কর্ণার থেকে দূর্দান্ত এক কিক নেন অল রেডদের তরুণ গ্রিক লেফটব্যাক। খুব সহজেই উড়ে আসা সেই বল খুঁজে নেয় ডাচ ডিফেন্ডার ভ্যান ডাইকের মাথা। আর তাতেই বাজিমাত! নিজের দারুণ ট্রেডমার্ক হেডে এবার ফাঁকি দিতে সক্ষম হন চেলসির সার্বিয়ান ওয়ালকে। একইসঙ্গে মৌসুমের প্রথম শিরোপা উপহার দেন বিদায়ী কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপকে।
ফাইনালে নিজেদের আক্রমণভাগের তিন কাণ্ডারি মোহাম্মদ সালাহ, ডিয়েগো জোটা ও ডারউইন নুনেজকে ছাড়াই খেলতে নেমেছিলো লিভারপুর। ইনজুরির কারণে ছিলেন না তারা। ক্লপকে শেষ পর্যন্ত তাদের অভাব বোধ করতে দেয়নি অল রেড শিবির। আর এফএ কাপের এ ফাইনাল হারার সঙ্গে সঙ্গে ধূলিস্মাৎ গেল পচেত্তিনো শিবিরের এ মৌসুমে শিরোপা জেতার একমাত্র বাস্তব সুযোগটাও।
ম্যাচে সব মিলিয়ে ৫৪ শতাংশ বল পসেশন ধরে রেখেছিল লিভারপুল। আর ৪৬ শতাংশ বল পসেশন ছিল চেলসির। যেখানে অল রেড শিবিরের ২১টি ফাউলের বিপরীতে ১৪টি ফাউল করেছে ব্লুজ শিবির। পুরো ম্যাচে সব মিলিয়ে গোলবারের দিকে ২৪টি শট নিয়েছেন ক্লপ শিষ্যরা। এর মধ্যে ১১টি ছিল অন টার্গেট শট, যার ১০টিই পরাস্ত হয়েছে চেলসির সার্বিয়ান ওয়ালের সামনে। আর বিপরীতে প্রতিপক্ষের গোলবারের দিকে ১৯টি শট শানিয়েছেন পচেত্তিনো শিষ্যরা। এর মধ্যে ৯টি ছিল অন টার্গেট শট, যার সবকটি রুখে দিয়েছেন লিভারপুলের আইরিশ গোলরক্ষক কোয়াইমিন কেলেহার।