প্রচণ্ড শীতে কাবু হয়ে পড়ছে মানুষ। রাতে কুয়াশা বৃষ্টি পড়ে। ঘন কুয়াশা আর মৃদু শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জন জীবন। বিভিন্ন এলাকার মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাড়ির বাইরে বেরও হচ্ছে না।
এই শীতে অনেকেই একেবারে জবুথবু হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে পরিবারের বৃদ্ধরা শীতে বেশ কষ্ট পায়। এ ছাড়া কম ওজনের মানুষ হলেও এমন ঘটতে পারে। বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) ১৮ দশমিক ৫ অথবা এর কম হলে শীত বেশি অনুভূত হতে পারে। কারণ, দেহে চর্বির পরিমাণ কম থাকলে গরম কম অনুভূত হয়।
থায়রয়েড হরমোনের ঘাটতি থাকলে সব সময় শীত শীত লাগে। এর সঙ্গে হাইপোথাইরয়েডিজমের রোগীর শীতে অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক সমস্যা সৃষ্টি করে। দেহে আয়রনের ঘাটতি থাকলে শীত ভাব বা কোল্ডনেস বাড়ে। কারণ, এই খনিজটি রক্তের লোহিত কণিকাকে পুরো দেহে অক্সিজেন বয়ে নিতে সহায়তা করে।
ডায়াবেটিসের রোগীদের স্নায়ু আক্রান্ত হলে যে ‘পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি’ হয়, তাতে স্নায়ুতন্ত্রে একধরনের শিরশিরে অনুভূতি হয়। যার কারণে শীত বেশি লাগতে পারে। পা দুটি ঠান্ডা হয়ে থাকে বা জমে যায় বলে মনে হয়। পায়ে রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার কারণেও এমন মনে হয়।
ঠান্ডা হাত-পা উষ্ণ রাখতে যা করবেন—
খালি পায়ে থাকবেন না। বাড়িতেও হাঁটাহাঁটির সময় স্লিপার বা উষ্ণ স্যান্ডেল পরে থাকুন। শীতে পরার উপযোগী কিছু ঢাকা স্লিপার পাওয়া যায়।
পায়ে উলের মোজা পরে থাকুন। গরমকালের জন্য সুতি মোজা ভালো। কারণ, এটি ভেন্টিলেশনে সাহায্য করে। কিন্তু শীতল আবহাওয়ায় উলের মোজা বেশি আরামদায়ক।
দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হলে পা ঝুলিয়ে না বসে একটা টুল বা মোড়ার ওপর পা উঁচু করে বসুন আর গরম কাপড় দিয়ে পা ঢেকে নিন।
রাতে পা ঠান্ডায় জমে যাওয়ার অনুভূতি হলে পাতলা মোজা পরেই ঘুমাতে যান।
মাঝেমধ্যে হাঁটাহাঁটি করুন। সচল থাকুন। এতে পায়ে রক্ত চলাচল বাড়বে।
ঈষদুষ্ণ গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রেখে উঠিয়ে দ্রুত তোয়ালে দিয়ে শুষ্ক করে নিন। এরপর ভালো ময়েশ্চারাইজার মাখুন।
শীতে উষ্ণ থাকতে হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু অতিরিক্ত গরম ব্যাগে পা না পুড়ে যায়, সেদিকে লক্ষ রাখবেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিসের রোগীরা বেশি সতর্ক থাকবেন। কারণ, তাঁদের পায়ের অনুভূতি কম।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। গরম স্যুপ, আদা-চা, গ্রিন-টি ইত্যাদি উষ্ণ থাকতে সাহায্য করবে।