দেশে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন রেলস্টেশনে বসানো হয়েছে টিকিট ভেন্ডিং মেশিন। এতে সহজেই যাত্রীরা কাউন্টার বা অনলাইনে টিকিট কাটার বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পাবে। আগামী সপ্তাহ থেকেই আন্তঃনগর ও স্বল্প দূরত্বের যাত্রীরা ভেন্ডিং মেশিন থেকে কাটতে পারবেন টিকিট। যাত্রীদের দ্রুত টিকিট কাটা নিশ্চিত করতে কমলাপুর, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্টেশনে ১৫টি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশনে অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সেখানকার ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার।
তিনি বলেন, কমলাপুরে অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন দুটি বসানো হয়েছে। মোট চারটি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হবে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ ২১ স্টেশনে ভেন্ডিং মেশিন বসানো হবে।
এর আগে ১৬ এপ্রিল বাংলাদেশ রেলওয়ের টিসি উপপরিচালক মো. আনসার আলী সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে পনেরোটি টিকিট ভেন্ডিং মেশিন, ১০টি সার্ভিস কিয়স্ক পরিসেবা প্রযুক্তি ও ৬০টি জায়ান্ট স্ক্রিন ডিসপ্লে স্থাপন করার বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।
সাত কর্মদিবসের মধ্যে নিম্নোক্ত স্টেশনসমূহে টিকিট ভেন্ডিং মেশিন, সার্ভিস কিয়স্ক পরিসেবা প্রযুক্তি ও জায়ান্ট স্ক্রিন ডিসপ্লে স্থাপন করার পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রম অনুরোধ করা হলো।
জায়ান্ট স্ক্রিন ডিসপ্লে-রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ৩১টি (ঢাকা স্টেশনে ৩টি, ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে-১টি, টঙ্গী, নরসিংদী, ভৈরব বাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া, শায়েস্তাগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, মাইজগাঁও, সিলেট, জয়দেবপুর, ময়মনসিংহ, জামালপুর টাউন, দেওয়ানগঞ্জ বাজার, তারাকান্দি, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, মোহনগঞ্জ, চট্টগ্রাম-২টি, কক্সবাজার-২টি, ফেনী, লাকসাম, কুমিল্লা, নাঙ্গলকোট ও চাঁদপুর) এবং পশ্চিমাঞ্চলে ২৯টি (রাজশাহী-২টি, নাটোর, সান্তাহার, জয়পুহাট, পার্বতীপুর, সৈয়দপুর, চিলাহাটি, টাঙ্গাইল, উল্লাপাড়া, পাবনা, ঈশ্বরদী, পোড়াদহ, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নীলফামারী, মোবারকগঞ্জ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, দিনাজপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া ও কুড়িগ্রাম)।
রেলওয়ে অপারেশন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আধুনিক এ মেশিনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে সহজ ডটকম। এর মাধ্যমে যাত্রীরা সহজেই নিজের টিকিট নিজে কাটতে পারবেন। তবে এজন্য অনলাইনে টিকিট কাটতে যে পরিমাণ চার্জ (২০ টাকা) দিতে হয়, ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটলে একই পরিমাণ চার্জ কাটা হবে। ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারবেন।
এ সেবা চালুর বিষয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী গণমাধ্যমকে বলেছেন, রেলে বিনা টিকিটের যাত্রী রোধ এবং তাৎক্ষণিক ট্রেনে ভ্রমণ করা যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা শুরুতে ১৫টি মেশিন স্থাপন করেছি। পর্যায়ক্রমে দেশের সবকটি অনলাইনভিত্তিক স্টেশনে এ ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হবে।
যাত্রীরা খুব সহজেই নিজের টিকিট নিজেই মেশিন থেকে যাত্রার ১৫ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে কাটতে পারবেন। এ ব্যাপারে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা যাত্রীদের সহযোগিতা করবেন বলেও জানান তিনি।
যাত্রীরা রেলওয়ের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও টিকিট কাটতে অতিরিক্ত ২০ টাকা চার্জ কাটায় যাত্রীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।