শিক্ষাজীবনে নোট তৈরির গুরুত্ব অনেক বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্লাসে শোনা লেকচার সাত থেকে আট ঘণ্টা পর আর মনে থাকে না। তাই নোট থাকলে পড়তে ও বুঝতে অনেক সুবিধা হয়। নোট কীভাবে তৈরি করবে, তা নিয়ে আজকের পরামর্শ।
ব্যাপারটা কেমন হয় যদি আমি বলি যে ‘নোট’ নামক জিনিসটার আসলেই কিছু প্রয়োজনীয়তা রয়েছে? নোট ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের Stereotypical চিন্তা হলো নোট শুধু আঁতেলরাই করে। কিন্তু ঘটনাটা সেরকম না। নোট সবারই করা উচিৎ। তুমি বিশ্বাস করো আর না-ই করো, ইনস্টাগ্রামে #StudyingHard #ExamIsHere ইত্যাদি হ্যাশট্যাগ দিয়ে ছবি আপলোড করা ছাড়াও নোট নামক জিনিসটার কিছু ইউটিলিটি রয়েছে। আর সেটা তখনই, যখন তুমি সুন্দর এবং অর্গানাইজড ভাবে নোট করতে পারছো।
নোটের প্রকারভেদ : নোট দুই ধরনের হতে পারে। এক. ক্লাসে তৈরি করা শর্টকাট নোট। দুই. ক্লাসের পরে লেকচারের আলোকে তৈরি করা বিস্তারিত নোট। নোটের এ দুটি প্রকার একটি আরেকটির পরিপূরক। ক্লাসের নোটকে খবরের শিরোনাম এবং বাড়ির নোটকে বিস্তারিত খবরের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
যেভাবে শুরু করবে : প্রত্যেক সাবজেক্টের জন্য আলাদা খাতা বানিয়ে নেওয়াই ভালো। তবে এত খাতার বোঝা পিঠে তুলে নেওয়া মুশকিল। তাই খাতার পৃষ্ঠাসংখ্যা কম রাখবে। অথবা ফাইল অর্গানাইজার নামে একটি শিক্ষাসামগ্রী বাজারে পাওয়া যায়। সেখানে আলাদা আলাদা পকেটের মতো ভাগ করা থাকে। বিষয়ভিত্তিক লেকচার শিটগুলো সেখানে রাখা যায়। রঙিন কলম, হাইলাইটার তোমার নোটকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।
নোট তৈরির আগ্রহ : শিক্ষক ক্লাস শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই অন্য সব দিক থেকে মনোযোগ ফিরিয়ে লেকচারে মনোযোগ দাও। কে খোঁচা দিল, তা দেখার দরকার নেই। বরং স্যারের পড়ানো সব পয়েন্টই নোট করে নাও। পরীক্ষার সময় খোঁচা দেওয়া বন্ধুরাই তোমার কাছে নোট চাইতে আসবে। লেকচারের ফাঁকে শিক্ষকরা বিভিন্ন সময় বলেন, ‘পরীক্ষায় এটি আসতে পারে’, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ’ বা ‘এটি লিখে রাখতে পারো’ ইত্যাদি। এসব জায়গাগুলো সযতেœ নোট করে নাও। পরীক্ষার সময় কাজে আসবে।
নোট ভালো হবে যেভাবে : ক্লাসে কৌশলে নোট করতে হবে। এমন যেন না হয়, নোট লিখতে লিখতে স্যার কী বলছেন তা-ই খেয়াল করা হয়নি। বরং লেকচারের সারকথাটিই সংক্ষেপে খাতায় তুলে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে তোমরা শব্দ-বাক্য সংক্ষেপে লিখতে পারো। বিভিন্ন প্রতীক বা ছবি ব্যবহার করে অনেক বড় কথার ইঙ্গিত দিয়ে রাখতে পারো। পরে বাড়িতে তা সাজিয়ে তোমার মতো লিখে নেবে।
নিজের হাতে লেখা : ক্লাসের নোট হাতে লিখবেই, বাড়ির নোটও হাতে লিখো। কম্পিউটারে টাইপ করে লিখলে দ্রুত ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা হাতে নোট লেখে, তাদের শোনা ও লেখার দক্ষতা অনেক বেশি। তাই হাতে লেখা-ই উত্তম।