বজ্রপাত একটি আকস্মিক ঘটনা, যা প্রতিরোধ করা অত্যন্ত কঠিন। যদি (বজ্রপাত) হয়ে যায় তাহলে অনেকের মৃত্যু হতে পারে। দেশে প্রতিবছর গড়ে দুই শতাধিক মানুষ বজ্রপাতে মারা যায়। নাসার তথ্য অনুযায়ী, বজ্রপাতের অন্যতম হটস্পট বাংলাদেশ। সিলেট হচ্ছে দেশের অন্যতম বজ্রপাতপ্রবণ অঞ্চল। বজ্রপাত সাধারণত এপ্রিল-মে, বঙ্গাব্দের বৈশাখে সংঘটিত হয়। বজ্রপাতের কারণ হিসাবে বলা যায়, স্থির তড়িৎ বা Static Electricity।
বজ্রপাতের পেছনে একক কোনো কারণ নেই। তবে এ থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতার কথা বলেছে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
১. ঘন কালো মেঘ দেখা দিলে ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না। খুব জরুরি প্রয়াজনে রাবারের জুতা অথবা স্যান্ডেল পড়ে বাইরে যাওয়া যেতে পারে।
২. বৃষ্টি এবং বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা যেমন খোলা মাঠ অথবা উঁচু স্থানে, যেমন বাড়ির ছাদে থাকা যাবে না।
৩. বজ্রপাতের সময় ধানক্ষেত বা খোলা মাঠে থাকলে তাড়াতাড়ি পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকতে হবে।
৪. বৃষ্টি শুরু হলে যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে হবে। টিনের চালের নিচে অবস্থান করা যাবে না।
৫. উঁচু গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, ধাতব খুঁটি, মোবাইল ফোনের টাওয়ার ইত্যাদি থেকে দূরে সরে যেতে হবে।
৬. কালো মেঘ দেখা দিলে নদী, পুকুর, ডোবা কিংবা জলাশয়ে থাকলে সেখান থেকে উঠে যেতে হবে।
৭. বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভেতর অবস্থান করলে, গাড়ির ধাতব অংশের সঙ্গে শরীর স্পর্শ করে রাখা যাবে না। সম্ভব হলে কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে হবে।
৮. বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি ও বারান্দায় থাকা যাবে না।
৯. বজ্রপাতের সময় মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ল্যান্ডফোন, টিভি, ফ্রিজসহ সব বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
১০. বজ্রপাতের সময় ধাতব হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করবে না। জরুরি প্রয়োজনে প্লাস্টিক বা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করা যাবে।
১১. বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠে খেলাধুলা করা যাবে না।
১২. বজ্রপাতের সময় ছাউনিবিহীন নৌকায় ঘোরাঘুরি করা যাবে না।
১৩. বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব পানির কল, সিঁড়ির ধাতব রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করা যাবে না।
১৪. প্রতিটি বাড়িতে বজ্রপাত নিরোধক দণ্ড স্থাপন করতে হবে। তাহলে বজ্রপাত সেই দণ্ডের ওপর পড়বে। কারও ক্ষতি হবে না।
১৫. বজ্রপাতে কেউ আহত হলে বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতো করেই চিকিৎসা করতে হবে। প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসককে ডাকতে হবে বা হাসপাতালে নিতে হবে। বজ্রপাতে আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদস্পন্দন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে।