আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায়ের একেবারে চূড়ান্ত সীমানায় দাঁড়িয়ে আনহেল ডি মারিয়া। কোপা আমেরিকার ফাইনাল দিয়ে তিনি আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের জার্সি তুলে রাখবেন। যে জার্সিতে আলবিসেলেস্তে সমর্থকদের অসংখ্য সুখস্মৃতি উপহার দিয়েছেন ডি মারিয়া। বিদায়বেলায় তাকে বেশ আবেগপ্রবণই দেখা যাচ্ছে, যা এর আগেও জানিয়েছিলেন দীর্ঘ সময়ের বন্ধু ও সতীর্থ লিওনেল মেসি। ফাইনালে নামার আগে ডি মারিয়া আবেগঘন একটি বার্তা দিয়েছেন।
আগামীকাল বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় ফাইনালে মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া। মায়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে হবে কোপার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি। মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতা দিয়ে যে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ইতি টানবেন সেটি আগেই জানিয়েছিলেন ডি মারিয়া। কানাডাকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিতের পর এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সেটি আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তাই তো বিদায়ী ম্যাচের আগে তার হাতে বিশেষ জার্সি তুলে দিয়েছে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন। তাতে পর্তুগিজ ভাষায় লেখা– ‘গ্র্যাসিয়াস ফিদেও’। এর মধ্য দিয়ে আর্জেন্টাইনদের কাছে ফিদেও নামে পরিচিত তারকাকে তার নিবেদনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে।
আর্জেন্টিনার জার্সিতে ১৬ বছর খেলেছেন ডি মারিয়া। যাদের হয়ে তিনটি ফাইনালে তার গোল করারও রেকর্ড আছে। সেই ফাইনালের মঞ্চ দিয়েই তিনি বিদায় নিতে যাচ্ছেন। তার আগে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে মেসির সঙ্গে একটি ছবি স্টোরি দিয়েছেন ডি মারিয়া। আবেগঘন হয়ে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আমি যা চেয়েছি জীবন তার চেয়েও আমাকে অনেক বেশি দিয়েছে।’ একই ছবি মেসিও নিজের স্টোরিতে দিয়েছেন।
জাতীয় দলে প্রায় দেড়যুগ একসঙ্গে খেলেছেন মেসি ও ডি মারিয়া। বিদায়ের আগে সতীর্থের কাছে এবারের ফাইনালেও একটি গোল আশা করেন মেসি। স্বদেশি সংবাদমাধ্যম ডি স্পোর্টসে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘কে জানে, সে হয়তো ফাইনালে আরেকটি গোল করবে, যেমনটা সে আগে খেলা ফাইনাল ম্যাচগুলোতে করেছে। এটি অসাধারণ হবে।’
ফাইনালে শুরুর একাদশে থাকবেন ডি মারিয়া?
কলম্বিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে ডি মারিয়া ম্যাচের শুরু থেকেই একাদশে থাকবেন কি না তা জানতে চাওয়া হয় আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনির কাছে। জবাবে ইতিবাচক ইঙ্গিতই দিয়েছেন তিনি, ‘প্রতিটি ম্যাচের ভিত্তিতে আমরা টিমের সঙ্গে বসে এই সিদ্ধান্ত (একাদশ গঠন) নিই। ইকুয়েডরের বিপক্ষে আনহেল (ডি মারিয়া) খেলেনি, যদিও সেই ম্যাচটি তার জন্য শেষ হতে পারত। আমি জানি না সেটি ভুল নাকি সঠিক, আমরা ভেবেছি তার খেলা উচিৎ হবে না। পরে সবকিছু ভালোই গেল, সে সেমিফাইনালে ফিরেছে এবং একইভাবে ফাইনালেও কেন নয়?’
আবার, ভিন্ন যুক্তিও দেখিয়েছেন স্কালোনি, ‘যদিও আমরা জানি যে এটি তার শেষ ম্যাচ, তবে আমাদের কাছে দলই সবার আগে। যদি সে খেলে, তাহলে সেটি হবে এজন্য যে আমরা মনে করছি তার খেলা দরকার। কোচ হিসেবে আমাদের প্রতিটি দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টা নিয়ে ভাবা গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচে অনেক ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তাই বড় দৃষ্টিতে দেখতে হবে। সবমিলিয়ে আমরা আশা করি সবকিছু ভালোভাবেই শেষ হবে এবং আনহেল সবচেয়ে সেরা উপায়েই অবসর নেবে।’