গান শোনার মাধ্যম হিসেবে ইউটিউব বিশ্বব্যাপী এখন সর্বাধিক জনপ্রিয়। হুট করেই গান শোনার ইচ্ছা জাগলে ইউটিউবে সার্চ করলে মুহূর্তেই হাজির হয়ে যায় পছন্দের গান। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সোশ্যাল ওয়েবসাইট ইউটিউব প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৫ সালে। গত কয়েক বছরে ইউটিউব ব্যবহারকারীর সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, সেটি জিমেইলের মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এমনকি ইউটিউবের জনপ্রিয়তা ফেসবুকের কাছাকাছি চলে এসেছে। এই ইউটিউবে বেশ কিছু গান ইতোমধ্যে শ্রোতাদের করেছে মন্ত্রমুগ্ধ।
১. বেবি শার্ক ডান্স, পিংকফং
ছোটবেলায় ‘বেবি শার্ক ডান্স’ গানটি শোনেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। শিশুদের জন্য বানানো এই গানটি ইউটিউবের মোস্ট ভিউ হওয়া গানের শীর্ষে অবস্থান করছে। শুধু তাই নয়, এটি প্রথম গান, যা ইউটিউবে ১০ বিলিয়নের গণ্ডি অতিক্রম করেছে। গানটির নতুন ভার্সন কোরিয়ান একটি কোম্পানি চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রকাশ করে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গানটি ১২ বিলিয়ন বার দেখা হয়েছে।
২. দেসপাসিতো, লুই ফনসি ও ড্যাডি ইয়াঙ্কি
স্প্যানিশ ভাষায় গাওয়া ‘দেসপাসিতো’ গানের সঙ্গে কোমর দুলিয়েছে সারা দুনিয়ার তরুণরা। ইউটিউবে প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত ৮ বিলিয়নের বেশি ভিউ পেয়েছে গানটি। ৪৭টি দেশে জনপ্রিয়তার মুকুট, ১৬ সপ্তাহ যাবত বিশ্বের প্রধানতম সংগীত বিলবোর্ডগুলোয় মাধুর্যের রাজত্ব। এসবই একটি গানের দিকেই ইঙ্গিত করে, সেটা হলো লুই ফনসি’র দেসপাসিতো। লুই ফনসি’র সঙ্গে অবশ্য কণ্ঠ দিয়েছিলেন ড্যাডি ইয়াঙ্কি। গানের সঙ্গে সঙ্গে এই মিউজিক ভিডিওটিও সমান জনপ্রিয় হয়েছিল। যেটা নিয়ে ফনসি বলেছিলেন যে, এই গানের ভিডিওতে দক্ষিণ আমেরিকার সংস্কৃতি এবং কৃষ্টি ফুটে উঠেছে। ১৯৯৬ সালে অবমুক্ত হওয়া ‘মাকারেনা’ গানটির পরে এই গানটিই স্প্যানিশ সংগীত হিসেবে ইউএসএ-তে প্রথম জনপ্রিয়তার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।
৩. জনি জনি, ইয়েস পাপ্পা, লু লু কিডস
‘জনি জনি, ইয়েস পাপ্পা’ গানটি সবার কাছে বেশ পরিচিত। ছোটদের দিয়ে বানানো গানটি ইউটিউবে বাজানো হয় অসংখ্যবার। অবশ্য সবচেয়ে ভিউ পাওয়া গানের তিনটির মধ্যে দুটি শিশুদের গান দখল করে নেওয়ায় একটি জিনিস অনুমিতভাবেই বলা যায়, মা-বাবারা সন্তানকে গান শোনানোর মাধ্যম হিসেব ইউটিউবকে বেছে নিয়েছেন। ইউটিউবে গানটির ভিউ হয়েছে ৬.৬ বিলিয়ন।
৪. বাথ সং, ককোমেলন নার্সারি ছড়া
এটিও একটি বাচ্চাদের গান, যা তালিকায় চতুর্থ স্থান দখল করে নিয়েছে। বাচ্চাদের গোসল করানোর সময় গানটি বেশি ব্যবহৃত হয়। এটি ইউটিউবে এখন পর্যন্ত ৬ বিলিয়ন বার দেখানো হয়েছে।
৫. শেপ অব ইউ, এড শিরন
মনোদৈহিক প্রেমের উত্তাল আবেগের আলোড়ন তোলা ইংরেজি এই গানটি ২০১৭-তে বের হয় এবং সঙ্গে সঙ্গেই জনপ্রিয়তার তকমাটি গায়ে সেঁটে নেয়। তারপর ৩৪টি দেশের টপ চার্টে টানা এই গানটি অবস্থান করে, যেখানে ইউএস বিলবোর্ড ১০০-এ ১৬ সপ্তাহ এবং ইউকে বিলবোর্ডে অবস্থানে টানা ১৪ সপ্তাহ রাজত্ব করে। এই গানের অ্যালবাম প্রায় ২৬.৬ মিলিয়ন ইউনিট বিক্রি হয় এবং স্পটিফাইয়ের মতো ডিজিটাল মিউজিক প্ল্যাটফর্মে এই গানটি দোর্দণ্ড প্রতাপের সঙ্গে রাজত্ব করে। এই গানটি ইউকে-তে বেস্ট সেলিং ডিজিটাল সং অ্যাওয়ার্ড জিতেছিল। গানটির ভিউ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৫.৯ বিলিয়ন ছুঁয়েছে।
৬. সি ইউ এগেইন, হুইজ খলিফা
হৃদয়ছোঁয়া সুরে গাওয়া ‘সি ইউ এগেইন’ গানটি গেয়েছিলেন হুইজ খলিফা এবং প্রথম এই গানটি ব্যবহার করা হয় ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস ৭’ সিনেমায়— মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত অভিনেতা পল ওয়াকারের স্মৃতির উদ্দেশে। ২০১৭ সালে এই গানটি টানা এক মাস মোস্ট ভিউড লিস্টে ছিল। এটি ইউটিউব ভিউ হয়েছে ৫.৮ বিলিয়ন।
৭. ফনিক্স সং উইথ টু ওয়ার্ডস, চুচু টিভি
মূলত এটি একটি শিক্ষামূলক গান। বাচ্চাদের জন্য বানানো হয়েছে এটি। ইউটিউবে এই প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত দেখা হয়েছে ৫.৬৫ বিলিয়ন বার।
৮. লার্নিং কালারস, মিরসকা টিভি
শীর্ষ দশটি ভিউ পাওয়ার মধ্যে চতুর্থ শিশুদের গান ‘লার্নিং কালারস’। এর মাধ্যমে গানে গানে বাচ্চাদের বিভিন্ন রঙের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। ইউটিউবে এর ভিউ হয়েছে ৫.২৬ বিলিয়ন।
৯. আপটাউন ফাংক, ব্রুনো মার্স
নয় নাম্বারে অবস্থান করছে আপটাউন ফাংক ফিট ব্রুনো মার্স মিউজিক ভিডিওটি। এটি ইউটিউবে সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গানটির ভিউ হয়েছে ৪.৮ বিলিয়ন।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%aa%e0%a6%bf%e0%a6%8f%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%86%e0%a6%b8%e0%a6%9b%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%a8-%e0%a6%a6%e0%a6%b2-%e0%a6%ae%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%ae/
১০. গ্যাংনাম স্টাইল, পিএসওয়াই
সবচেয়ে বেশি ভিউ হওয়া ভিডিওগুলোর মধ্যে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা মিউজিক ভিডিও ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ রয়েছে সপ্তম স্থানে। কোরিয়ান পপ তারকা পিএসওয়াই ২০১২ সালের ১৫ জুলাই গানটি ইউটিউবে অবমুক্ত করেন। গানের কম্পোজিশন থেকে শুরু করে কোরিওগ্রাফি সবখানে ছিল নৈপুণ্য। বিভিন্ন দেশের টপচার্টে গানটি দীর্ঘসময় ধরে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছিল এবং অর্জন করেছিল একাধিক অ্যাওয়ার্ড। এই গানটি প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৪.৬ বিলিয়নের বেশিবার দেখা হয়েছে।