ভিডিও এডিটিং হলো একটি ক্রিয়েটিভ স্কিল। অর্থাৎ কোন ভিডিও কে গল্প এবং অনুভূতিতে রূপান্তরিত করে কনটেন্ট তৈরি করার পদ্ধতি। সহজ ভাবে বলা যায় ভিডিও এডিটিং হচ্ছে গল্পের প্রয়োজনে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ সম্পাদন করে পূর্ণাঙ্গ গল্পে পরিণত করা। ভিডিও এডিট করার স্কিল কর্পোরেট জব থেকে শুরু করে ফ্রিল্যান্সিং সব পর্যায়েই থেকে ইনকাম করা সম্ভব।
কিভাবে ভিডিও এডিটিং শিখবেন
বর্তমানে ভিডিও এডিটিং অনেক বড় একটি সেক্টর। এখানে অনেক বিষয় রয়েছে যার সম্পর্কে বেসিক ধারণা নিয়ে শুরু থেকে শিখতে হবে। এডিটিং সফটওয়্যার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। যত বেশি ফিচার আয়ত্ত করা যাবে, এডিটিং তত সুন্দর হবে।
ভিডিও এডিটিং শিখা কঠিন কাজ না। তবে ধৈর্য এবং আগ্রহ থাকলে সম্পূর্ণ ভাবে মন দিয়ে এই কাজ শিখা সম্ভব। ভিডিও এডিটিং শিখার ক্ষেত্রে প্রথমত কিছু নিয়ম ও ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে।
সঠিক নিয়ম গুলো অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে পারলে আপনি বেসিক থেকে অ্যাডভান্স ভিডিও এডিটিং খুব তাড়াতাড়ি শিখে নেয়া যাবে। তাহলে একজন প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর হতে গেলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কি কি করতে হবে সবটা জেনেনেই।
১. একটি এডিটিং সেটআপ তৈরি করা
যেকোনো নতুন জিনিস শিখার জন্যে প্রথমত একটি সেটআপ থাকাটা অনেক জরুরি। ভিডিও এডিটিং এর কাজ শিখার জন্যে আপনার কাছে কাজ প্রাকটিস করার জন্যে একটি সেটআপ অবশ্যই থাকতে হবে। শেখার পাশাপাশি নিয়মিত প্র্যাকটিস করার জন্য এটি প্রয়োজনীয়।
ভিডিও এডিটিং এর জন্য, সেটআপ এর মধ্যে থাকছে, একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ, সাউন্ড সিস্টেম, হেডফোন এবং ইন্টারনেট কানেক্শন।
২. ফ্রী অথবা পেইড কোর্স এর সাথে যুক্ত হতে হবে
যেকোনো জিনিস শেখার জন্যে একজন দক্ষ ব্যক্তির থেকে জ্ঞান এবং প্রশিক্ষণ নিতেই হবে। তাই ভিডিও এডিটিং এর ক্ষেত্রেও এটি শেখার জন্য অবশ্য একজন দক্ষ ব্যক্তির কাছ থেকে পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
বর্তমানে অনলাইনে ভিডিও এডিটিং সম্পর্কিত বিভিন্ন ফ্রি অথবা পেইড কোর্স রয়েছে।
৩. ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার
যেকোনো ভিডিওকে এডিট করার জন্য একটি ভিডিও এডিটং সফটওয়্যার অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। ইন্টারনেটে প্রচুর ফ্রি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলো শুরুতে কাজ শেখার জন্যে ব্যবহার করা যাবে। তবে,যত ভালো এডিটিং সফটওয়্যার, ভিডিও এডিটিং এর ফলাফল ততটাই দারুন হবে।
ভিডিও এডিটিং করে ইনকাম
আপনি যদি ভিডিও এডিটিং এর কাজ শিখতে পারেন তাহলে এই সেক্টরে টাকা আয় করা খুবই সহজ। বর্তমানে পুরো বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশও ভিডিও এডিটিং এর চাহিদা প্রচুর পরিমাণে বেড়েছে।
ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম থেকে শুরু করে বর্তমানে টিকটক ভিডিও গুলো ভিডিও এডিটর সাহায্য সম্পাদনা করা হয়ে থাকে এবং এর থেকে প্রচুর টাকা আয় করতে পারা যায়।
ভিডিও এডিটিং শিখে ফ্রীল্যানসিং করে আয়
সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি বর্তমানে অনেকগুলো ওয়েবসাইট রয়েছে যার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করে ভিডিও এডিটিং এর কাজ করে টাকা আয় করা যায়। এইসব ওয়েবসাইটগুলোতে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন এডিটরেরা কাজ খুব সহজে করে অনেক টাকা আয় করে থাকে।ভিডিও এডিটিং এর দক্ষতা সম্পন্ন যে কেউ এসব সাইটে এডিটিং এর কাজ করে টাকা আয় করতে পারবে।
সেখানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করার বিনিময়ে টাকা পে করে থাকে। এসব কাজের মধ্যে মুভি, ড্রামা, বিজ্ঞাপন, অনুষ্ঠান, প্রমোট এডস সহ নানা কাজ করে থাকে।
ভিডিও এডিটিং এর ভবিষ্যৎ
দেশে দক্ষ ভিডিও এডিটরের চাহিদা দিন দিন বাড়ছেই।এছাড়াও ভিডিও এডিটিং জানা থাকলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে একজন ট্রেইনার হিসেবে কাজ করতে পারবেন। পাশাপাশি অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সার্ভিস সেল করাসহ ভিডিও এডিটিং নিয়ে আপওয়ার্কে প্রতিদিন অনেক জব পোস্ট হয়। সেখান থেকে কাজ খুজে পাওয়া সম্ভব।
পড়াশোনা ও অন্যান্য পেশার পাশাপাশি ভিডিও এডিটিং শিখে ভিডিও এডিটিং পেশায় নিযুক্ত হয়ে অতিরিক্ত আয়ের উৎস বাড়াতে যায়। বর্তমান সময়ে ভিডিও এডিটরদের প্রসার ও প্রচার দ্রুত গতিতে বাড়ছে। আমরা অনেকেই জানি, ইউটিউব থেকে অনেকেই ইনকাম করে থাকে। ভিডিও এডিটিং দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ভিডিও বানিয়ে ইউটিউব থেকে প্রতিমাসে ইনকাম জেনারেট করা যায়।
ভিডিও এডিটিং শিখতে কত দিন লাগে।
প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪-৫ ঘন্টা করে ভিডিও এডিটিং প্র্যাকটিস করলে দিলে প্রায় ১৮০ দিনের মধ্যেই ভিডিও এডিটিং খুব ভালোভাবে শিখে নেয়া যাবে।
পরিশেষে বলা যায় ভিডিওস এডিটিং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বর্তমানে ঘরে বসে খুব সহজেই উপার্জন করা সম্ভব। তাই আপনিও চাইলে ভিডিও এডিটিং শিখে ঘরে বসে আয় করতে পারবেন।