ঠোটকাঁটা স্বভাবের জন্য বরাবরই আলোচিত অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি। বর্তমান সময়ে অভিনয়ের চেয়ে ব্যক্তিগত বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে বেশি আলোচনায় থাকেন তিনি।
সম্প্রতি একটি নতুন ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন স্বস্তিকা। যেখানে তাকে দেখা গেছে পুলিশের চরিত্রে। সেই চরিত্র নিয়েই কথা বলেছেন আনন্দবাজারের সঙ্গে।
স্বস্তিকা বলেন, প্রথম থেকেই উত্তেজনা ছিল চরিত্রটা নিয়ে। এখানে পুলিশ শুধুই যে অপরাধ দমন করছে এমন নয়। এই চরিত্রটার মধ্যে পুলিশ ও মা পাশাপাশি চলছে। মায়ের জেদ আর পুলিশের দক্ষতা দুটোই এই চরিত্র দাবি করে। খানিকটা সত্য আর অনুভূতির রেষারেষি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এই চরিত্রে। পরিচালককে মাঝেমাঝেই বলতাম, মা কোথাও বেশি হয়ে যাচ্ছে না তো! আজও কোথাও কোথাও তো ধরে নেওয়া হয় মহিলা পুলিশ ততটাও দক্ষ নয় যতটা পুরুষ।
স্বস্তিকার কাছে এরপরই প্রশ্ন রাখা হয়, তাহলে কি বর্তমান সময়েও কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য দেখা যায়? জবাবে অভিনেত্রী বললেন, অবশ্যই। ২০২৫ সালেও কর্মক্ষেত্রে আমাদের মহিলাদের অধিকার নিয়ে লড়াই করতে হয়। কোনও পুরুষের যদি পদোন্নতি হয়, সে ক্ষেত্রে বলা হয় পরিশ্রমের জোরে যোগ্যতা দিয়ে পদোন্নতি হয়েছে। কিন্তু একজন মহিলার ক্ষেত্রে বলা হয়, অনুচিত পন্থায় রফা করেছেন বা তার শরীরের বিনিময়, সৌন্দর্যের নিরিখে পদোন্নতি হয়েছে। সেটা তো রয়েছেই। মহিলাদের দক্ষতা, কাজের প্রতি অনুরাগ উপেক্ষা করা হয় সর্বতোভাবে।
স্বস্তিকা আরও বললেন, আমাদের সমাজ ও দেশের অবস্থা খুব একটা স্বস্তিদায়ক নয়। আরজি করের ঘটনার পরে মনে হয়েছিল কত কিছু বদলাবে! সম্প্রতি মেট্রো স্টেশনে চুমুর ঘটনাটা নিয়েও তো কত কাণ্ড! মানসিকতার যে কোনও রদবদলই হয়নি তা স্পষ্ট। এই পুরো ঘটনায় দোষী একজনই, যিনি চুমু খাওয়ার ভিডিও করেছিলেন আর ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাকে নিয়ে তো কোনও কথাই হলো না। তার অন্যায়টা নিয়ে কেউ কথা বললো না, উল্টো ভালবেসে কেউ কিছু করলে সেটা নিয়ে হইচই করা হয়। মেয়েটি চুমু খেয়ে যত অপরাধ করল!
অভিনেত্রী বলেন, একটা আন্দোলন হয়েছিল, সেটার তো শেষ হবেই। চিকিৎসকেরাও কি এখন চিকিৎসা না করে ধর্মতলায় বসে রয়েছেন? আন্দোলন যদি এক বছর ধরে চলত, তেমনটা হলে আমরাও সেভাবে সময় বের করে যোগ দিতাম। সেটা তো হয়নি।
আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার জন্য কোনও রাজনৈতিক মহল থেকে চাপ এসেছে? স্বস্তিকা বললেন, একেবারেই না। কোনও বার্তাই আসেনি আমার কাছে। আন্দোলনটাই তো ঝিমিয়ে পড়েছে। আমাদের কথা বাদ দিন, আন্দোলন তো অনেক বেশি সাধারণ মানুষদের। তারা কি এখনও পথে নেমে প্রতিবাদ করছেন? তাহলে আমরা কী করব? নিজেরাই কি প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকব প্রত্যেক দিন?