এমন কিছু আগে কেউই দেখেনি। এমন কিছু শেষবার দেখা গিয়েছিল আজ থেকে ৬ দশক আগে। সেসময় যারা দেখেছেন, তাদের প্রায় সবাইই হয়ত এখন অন্যলোকের বাসিন্দা। নিজ দেশের লিগ আর ইউরোপিয়ান ফুটবল দুইয়ে মিলে এমন দাপুটে ফুটবল শেষ উপহার দিয়েছিল বেনফিকা। ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত ইউসেবিও-হোসে আগাস্তোর সেই দলটি অপরাজিত ছিল দীর্ঘ ৪৮ ম্যাচ।
পরের ছয় দশক একইভাবে টিকে ছিল এই রেকর্ড। অনেক ক্লাবই ঘরোয়া লিগে অপরাজিত ছিল। অনেক ক্লাবই ট্রেবল জয় করেছে। কিন্তু বেনফিকার সেই অসামান্য রেকর্ড স্পর্শ করা বা ছাড়িয়ে যাওয়ার নজির দেখাতে পারেনি কেউই। গতকাল রাতে ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে দেখা গেল সেই কীর্তি। রোমার বিপক্ষে ২-২ গোলের অসামান্য এক ড্র-ইয়ে ইউরোপিয়ান ফুটবলের ইতিহাস নতুন করে লিখেছে বায়ার লেভারকুসেন।
চলতি মৌসুমে একাধিকবার শেষ সময়ের গোলে রক্ষা পেয়েছে বায়ার লেভারকুসেন। কামব্যাক করাটা যেন চলতি মৌসুমে রীতিই বানিয়ে ফেলেছে জার্মান দলটি। গতকাল রোমার বিপক্ষেও দেখা গেল তেমন ক্লিছুই। আগের ম্যাচে ২-০ গোলের জয়ে ফাইনালের রাস্তাটা অনেকটাই এগিয়ে রেখেছিল লেভারকুসেন। তবে অপরপ্রান্তে দলটা যে রোমা! ড্যানিয়েল ডি রসি নিজে ছিলেন হার না মানা এক সৈনিক। মৌসুমের মাঝপথে দায়িত্ব নিয়ে দলকেও খেলিয়েছেন তেমন সাহসী ফুটবল।
লিয়ান্দ্রো পারেদেসের ৪৩ ও ৬৬ মিনিটের পেনাল্টি গোলে রোমা এগিয়ে যায় ২-০ ব্যবধানে। অ্যাগ্রিগেটে ২-২ গোলের সমতা। সেখান থেকেই যেন নিজেদের চেনা রূপ দেখাল লেভারকুসেন। ৮২ মিনিটে রোমার জিয়ানলুকা মানচিনির আত্মঘাতী গোলে ম্যাচে ব্যবধান কমায় তারা। অ্যাগ্রিগেটে ৩-২ গোলে এগিয়ে লেভারকুসেন। কিন্তু অপরাজিত থাকার যাত্রা যে সেখানেই থেমে যেত।
কিন্তু এমন এক রাতে ঘরের মাঠে লেভারকুসেন সমর্থকদের হতাশ করেনি। ৯৭ মিনিটে লেভারকুসেনের কাঙ্ক্ষিত সেই গোলটিই এনে দেন জোসিফ স্তানিসিচ। অতিরিক্ত সময়ে এই নিয়ে লেভারকুসেন চলতি মৌসুমে ১৭ বার গোল করল। সেই সঙ্গে ৪-২ অ্যাগ্রিগেটে নিশ্চিত করল ইউরোপা লিগের ফাইনাল।
আগামী ২২ মে ইউরোপা লিগের ফাইনালে ইতালিয়ান ক্লাব আতালান্টার মুখোমুখি হবে লেভারকুসেন। ২৫ মে জার্মান কাপের ফাইনাল আছে কাইজারস্লাটার্নের বিপক্ষে।
একইদিনে ইংলিশ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলাকে হারিয়ে ইউরোপা লিগের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে আতালান্টা। গেল কয়েক মৌসুম ধরে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে আসা জিয়ান গ্যাস্পারিনির দলের জন্য এটাই প্রথম ইউরোপিয়ান ফাইনাল। ২২ তারিখের ফাইনালে তাই দুই দলই নামবে প্রথমবারের মত ইউরোপ সেরা হতে। সেই লক্ষ্যে কারা সফল হবে সেটা অবশ্য সময়ই বলে দেবে।