শরীরের প্রয়োজনেই কিছুটা ফ্যাট থাকা প্রয়োজন, তা না হলে হারিয়ে যাবে শরীরের আর্দ্রতা। সেই সঙ্গে শরীরও শুকনো হয়ে যায়। কিন্তু ফ্যাট যদি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ খানিকটা বেড়ে হাতের নাগালের বাইরে চলে যায় তাহলেই কিন্তু ঘোরতর বিপদ। আর সেই ফ্যাট ঝরাতেও বেশ সময় লাগে। ফ্যাট বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো আমাদের সচেতনতার অভাব। কোনও কিছু যতক্ষণ পর্যন্ত না বিপদ সীমার ওপর দিয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু মানুষ সচেতন হয় না। পেটে মেদ জমলে সেখান থেকে হার্টের সমস্যা আসে, সেই সঙ্গে বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকিও। আর এই ভুঁড়ি যদি ক্রমবর্ধমান হয়, তাহলে তা কিন্তু গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।
আজকাল সকলেই নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন। সেই সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক চাপ উভয়ই ঊর্ধ্বমুখী। ফলে খাওয়ার যেমন নির্দিষ্ট সময় থাকে না তেমনই কিন্তু শরীরচর্চার জন্যেও ধরাবাঁধা কোনও সময় নেই। সময় বাঁচাতে ভরসা সেই পিৎজা, বার্গার ও স্যান্ডউইচ। দিনের পর দিন কোল্ড ড্রিংক, ফাস্টফুড, তেল-মশলাদার খাবার খেলে কিন্তু ওজন বাড়বেই। ওজন কমাতে অনেকেই না খেয়ে থাকেন। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। যত বেশি খালি পেটে থাকবেন, ততই কিন্তু ওজন বাড়বে। ফ্যাট জমবে। সেই সঙ্গে বাড়ে রক্ত শর্করার পরিমাণও। আর তাই সহজ কয়েকটি টিপস দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।
এই টিপস মেনে চলতে পারলে কিন্তু ওজন কমবেই—
মিল স্কিপ নয়: কোনও ভাবেই খাবার বাদ দেবেন না। সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছে বলেই যে কোনও রকমে লাঞ্চ সেরে বেরিয়ে যাবেন এমনটা নয়। ব্রেকফাস্ট অবশ্যই করবেন। ব্রেকফাস্ট স্কিপ করলে সেখান থেকে কিন্তু আসতে পারে একাধিক সমস্যা। এতে রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়ার যেমন সম্ভাবনা থাকে তেমনই কিন্তু বাড়তে পারে কোলেস্টেরলও। তিন থেকে ৪ ঘন্টা অন্তর খাবার খান। সারাদিনের খাবারকে কয়েকটা ভাগে ভাগ করে নিন। সব সময় যে পেটপুরেই খাবার খেতে হবে এমন কিন্তু নয়।
প্রোটিন খান: প্রতিদিনের ডায়েটে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ান। এতে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি থাকে। সেই সঙ্গে একাধিক শারীরিক সমস্যাও কিন্তু দূরে থাকে। খাবারের সঙ্গে আমাদের মেটাবলিজম জড়িয়ে। মেটাবলিজম কমে গেলে কিন্তু ওজন ঝরাতেও অনেক বেশি সময় লাগে। এছাড়াও পেশির গঠনে ভূমিকা রয়েছে প্রোটিনের। সেই সঙ্গে প্রোটিন শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কিন্তু বাড়ায়।
ডিনার হোক হালকা: রাতের বেলায় খুব বেশি ভারী খাবার খাবেন না। হালকা খাবার খান। রাত ৯ টার মধ্যে ডিনার সেরে ফেলুন। সেই সঙ্গে কত ক্যালোরির খাবার খাচ্ছেন সেদিকেও কিন্তু নজর দেওয়া জরুরি। কোনও রকম মশলাদার কিংবা ভাজা খাবার রাতে নয়। এতে ওজন ঝরাতে বেশ সমস্যা হয়।
ক্যালোরি মেপে খান: সারাদিনে কতটা ক্যালোরি খরচ করছেন আর কতটা ক্যালোরির খাবার খাচ্ছেন তা কিন্তু মাপতে ভুলবেন না। এতে যেমন ক্যালোরি কম খাওয়া হয় তেমনই কিন্তু ওজনও কমে তাড়াতাড়ি।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং: ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এখন অন্যতম জনপ্রিয় ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। এই পদ্ধতি মেনে নির্দিষ্ট সময়ের গ্যাপে খাবার খেতে হয়। ১৬ ঘন্টা না খেয়ে আর ৮ ঘন্টা খাওয়া এইভাবে খেতে পারলে কিন্তু ওজনও কমবে। বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা দিয়েছে এইভাবে ডায়েট করলে মেদ ঝরে তাড়াতাড়ি।