যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বিশ্বকাপের মতো মেগা টুর্নামেন্ট আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ক্রিকেটের বাজার আরও বিস্তৃত করা। সে কারণে দেশটিতে খেলাটি অত পরিচিত না হলেও, তোড়জোড় চালিয়ে স্টেডিয়াম বানানো হয় মাত্র পাঁচ মাসে। অনুশীলন সুবিধাও পর্যাপ্ত নয়। নিউইয়র্কের নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের তিনটি ম্যাচ, সে কারণে তাদের অনুশীলন করতে তারই অদূরে ক্যান্টিয়াগ পার্কে। যা নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভারতীয় কোচ রাহুল দ্রাবিড়।
নাসাউ স্টেডিয়ামের জন্য ১০ হাজার মাইলের বেশি দূরত্ব উড়িয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে ড্রপ-ইন পিচ বানিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এমন বিশ্ব আসরের অনুশীলন সুবিধা নিয়ে ভারতীয় অধিনায়ক ও কোচের অসন্তুষ্টির কথা আগেও জানা গিয়েছিল দেশটির সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে। এবার এ নিয়ে দ্রাবিড় সরাসরিই মন্তব্য করলেন, ‘পার্কে অনুশীলন করার বিষয়টি বেশ অদ্ভুত।’ ক্যান্টিয়াগ পার্ক থেকে মূল ম্যাচের ভেন্যুর দূরত্ব পাঁচ মাইল, তবে অনুশীলনের জায়গাটি নিয়ে মোটেও খুশি নন ভারত কোচ।
দ্রাবিড় বলেন, ‘বিশ্বকাপের জন্য আপনার অবশ্যই বড় স্টেডিয়াম আছে, অথবা স্টেডিয়াম থাকাও স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু আপনি জানেন যে আমরা একটি পাবলিক পার্কে অনুশীলন করছি।’ এর আগে দ্রাবিড় ভারতের জার্সিতে তিনটি বিশ্বকাপ খেলেছেন এবং এ নিয়ে ডাগআউটের নেতৃত্বে আছেন তিনটি আইসিসি ইভেন্টে। কিছুটা কৌতুকভরা হাসি নিয়েই অনুশীলন সুবিধা নিয়ে দ্রাবিড় মন্তব্য করেছেন বলে উল্লেখ করেছে ক্রিকবাজ।
বিশ্বকাপের ১৬টি ম্যাচ হবে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে, বাকি ৩৯ ম্যাচ হবে আরেক আয়োজক ওয়েস্ট ইন্ডিজে। এদিকে, ১৬ ম্যাচের মধ্যে ৮টিই আবার হওয়ার কথা রয়েছে নিউইয়র্কের নাসাউতে। যার জন্য আইসিসির বিশেষ প্রজেক্টটা নিয়েও মানুষের আগ্রহ রয়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের একটি ম্যাচ হয়ে গেছে এখানে, যেখানে আগে ব্যাট করা শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাত্র ৭৭ রানেই অলআউট হয়ে যায়। সেই রান পেরোতে সংগ্রাম করতে হয়েছে প্রোটিয়াদেরও। তাই তো এখন নাসাউয়ের পিচ নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।
এর আগে এখানকার পিচ প্রস্তুত করা অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেইড ওভালের প্রধান কিউরেটর ড্যামিয়েন হাউ বলেছিলেন, ‘আমরা নিউইয়র্কে পিচ পৌঁছাতে পেরে বেশ রোমাঞ্চিত। আমাদের পুরো মনোযোগ এখন পিচগুলো নিউইয়র্কের মাঠে স্থাপন এবং সেখান থেকে সবচেয়ে মানসম্মত ফলাফল নিশ্চিত করা।’ গত মাসে আইসিসি বিশেষজ্ঞ এই পিচ কিউরেটরের মন্তব্য বিবৃতি আকারে প্রকাশ করেছিল।
নাসাউতে ভারত ম্যাচ খেলতে নামার আগে পিচ ও দেশটিতে ক্রিকেট রোমাঞ্চ আরও ভালো হবে ধারণা কোচ দ্রাবিড়ের, ‘এটি (পিচ) কিছুটা ভিন্ন, একইসঙ্গে রোমাঞ্চেরও বিষয় যে নতুন একটি দেশ ও নতুন জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে। যে দেশে ক্রিকেট অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, এমন কন্ডিশন ও আবহে খেলাটা কিছুটা ভিন্ন অনুভূতির। তবে আশা করি আমাদের ম্যাচ শুরু হতে হতে এই অবস্থার পরিবর্তন হবে এবং আমরা এখানেও বিশ্বকাপের উন্মাদনা দেখতে পাব।’
উল্লেখ্য, আগামী ৫ জুন বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের মোকাবিলা করবে রোহিত শর্মার দল। পরবর্তীতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ম্যাচটি হবে ৯ জুন। এরপর ১২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ও ১৫ জুন কানাডার সঙ্গে হবে ভারতের গ্রুপপর্বের ম্যাচগুলো। প্রথম তিনটি ম্যাচই হবে নাসাউতে, শেষটির ভেন্যু ফ্লোরিডায়।