ঘুমাতে গেলে অনেকের মাথায় নানা দুশ্চিন্তা মাথায় আসতে থাকে। ফলে সহজে ঘুম আসে না। আবার দুশ্চিন্তাগুলো চাইলেই সরিয়ে রাখা যায় না। সেজন্য দুশ্চিন্তা করার জন্য একটা আলাদা সময় বের করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তারা বলেন, দুশ্চিন্তা করার জন্য দিনের বেলায় একটা আলাদা সময় বের করে নেওয়া ভালো। যেমন— আপনি ঠিক করে নিতে পারেন প্রতিদিন বিকাল পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত দুশ্চিন্তা করবেন। এই অভ্যাসটা যদি রপ্ত করতে পারেন তাহলে দুশ্চিন্তাগুলো রাতে ঘুমানোর সময় বিরক্তির কারণ হবে না। এরপরেও যদি দুশ্চিন্তা আসে তাহলে কী করবেন জেনে নিন।
ডা. তাসনিম জারার পরামর্শ—
ঘুমানোর সময় দুশ্চিন্তা আসলে মনে মনে বলবেন এটা নিয়ে আগামীকাল ভাববেন, এখন ভাবার প্রয়োজন নেই।
চা, কফি, কোমল পানীয় আর এনার্জি ড্রিঙ্কস রাতে পান করবেন না। কারণ এগুলোতে থাকা ক্যাফেইন আপনার ঘুমে ব্যঘাত ঘটাতে পারে। এমনকি ঘুম আসলেও ঘুম গভীর হতে দেবে না।
ঘুমানোর আগে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ পান করতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, লম্বা সময় ধরে ঘুমানোর জন্য সহায়তা করতে পারে এক গ্লাস গরম দুধ।
ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক ঘণ্টা রিল্যাক্স করতে পারেন। এই এক ঘণ্টায় বই পরতে পারেন, ডায়েরি লিখতে পারেন, কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতে পারেন। শ্রুতি মধুর কোনো গানও শুনতে পারেন।
টিভি দেখা, মোবাইল চালানো বন্ধ রাখতে হবে। উজ্জ্বল আলো মস্তিষ্ককে সজাগ করে তুলতে পারে। তাই ঘুমানোর আগে টিভি না দেখাই ভালো।
ঘুম না আসলে বিছানায় জোর করে শুয়ে থাকবেন না। প্রয়োজনে পাশের রুমে কিছু সময় ঘুরাঘুরি করতে পারেন নিজেকে রিল্যাক্স করতে পারেন। এরপর ঘুম আসলে ঘুমাতে যান।
বার বার ঘড়ি দেখে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন না। প্রয়োজনে ঘড়ি উল্টো দিকের দেয়ালে রাখুন।
ঘুমানোর তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন।
যারা ধুমপান করেন তারা ভালোভাবে ঘুমাতে পারেন না। ধুমপান যদি করতেই হয় তাহলে ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগেই শেষ করতে হবে।
নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠার চেষ্টা করুন। তাহলে ওই সময়ের জন্য আপনার শরীর ভালো ঘুম দিতে প্রস্তুত থাকবে।
ছুটির দিনে আমরা একটু দেরি করে জেগে উঠতে পছন্দ করি, এই অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। ঘুম থেকে জেগে ওঠার সময় একই রাখা ভালো।
দিনের বেলায় ঘুমাতে হলে ৪০ মিনিটের বেশি ঘুমাবেন না।
উল্লেখ্য, যে নিয়ম আপনার জন্য প্রযোজ্য শুধু সেই নিয়মটি পালন করবেন। নিজে নিজে ঘুমের ওষুধ খাবেন না। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।