অগ্নিঝরা মার্চের শুরু আজ। বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সাক্ষী এই মাস। এই মাসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’- বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টার এই পঙক্তি বাঙালি জাতিকে ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তায় বলীয়ান করে তোলে। এই মার্চেই বাঙালি বিদায় জানায় পাকিস্তানকে।
১৯৭১ এর ৭ মার্চ সাবেক রেসর্কোস ময়দানে আজকের সোহরাওর্য়াদী উদ্যানে এই ঐতহিাসিক ভাষণের সময় মুহূর্মুহু গর্জনে উত্তাল ছিল জনসমুদ্র। লক্ষ কন্ঠের একই আওয়াজ উচ্চারতি হতে থাকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। ঢাকাসহ গোটা দেশে পত পত করে উড়ছিল সবুজ জমিনের উপর লাল সূর্যের পতাকা।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার দাবিতে যে আগুন জ্বলে উঠেছিল সেই আগুন যেন ছড়িয়ে পড়ে বাংলার সর্বত্র। এরপর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬-এর ছয় দফা এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়ি বেয়ে একাত্তরের মার্চ বাঙালির জীবনে নিয়ে আসে নতুন বারতা।
একাত্তরের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এর আগে ২৫ মার্চ রাত ১টার অল্প পর বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সৈন্যরা গ্রেপ্তার করে তার বাড়ি থেকে।
২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানিরা বাঙালীর কন্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার লক্ষ্যে অপারশেন সার্চলাইট নামে বাঙালি নিধনে নামে। ঢাকার রাস্তায় বেরিয়ে সৈন্যরা নির্বিচারে হাজার হাজার লোককে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষককে হত্যা করে।
এর পরের ঘটনাপ্রবাহ প্রতিরোধের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর আহবানে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা হয়। আবালবৃদ্ধবনিতা যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বের বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে জাতি লাভ করে স্বাধীনতা।
এ মাসেই জাতি পালন করবে মহান স্বাধীনতার ৫৪ বছর। এ উপলক্ষে মাসের প্রথম দিন থেকেই শুরু হবে সভা সমাবেশ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নানা আয়োজনে মুখরিত থাকবে গোটা দেশ।