সম্পর্ক ভাঙার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কেউ সম্পর্ক গড়ে না। প্রেমের শুরুটা তো একটু বেশিই সুন্দর। যখন মনে হয়, একে অন্যের প্রেমে পড়েছে বা যখন থেকে একসঙ্গে পথচলার শুরু হয়, দু’জন মানুষ যেন ঠিক হাওয়ায় উড়তে থাকে। অসংখ্য সুখের স্মৃতি থাকার পরও প্রেম ভেঙে যেতে পারে। আবার কিছু প্রেমের শুরুতেই বোঝা যায় যে তা খুব বেশিদিন স্থায়ী হবে না। যদিও আগেভাগে সবকিছু বলে দেওয়া যায় না, তবে কিছু লক্ষণ দেখে আন্দাজ করা সম্ভব হতে পারে।
কোনও সম্পর্কই নিখুঁত নয়, কিন্তু একটি সুস্থ সম্পর্কের মধ্যে, ভালো জিনিসগুলো খারাপকে ছাপিয়ে যায় অনেক ক্ষেত্রে এবং এই ধরনের সম্পর্কে নিরাপত্তা থাকে না। অন্যদিকে, একটি বিষাক্ত সম্পর্কের মধ্যে, আপনি ক্রমাগত চাপ, ভুল বোঝাবুঝি, মানসিক এবং শারীরিক ব্যথা ভোগ করেন।
কখনও কখনও মানুষ এত চাপের মধ্যে থাকে যে, কীভাবে সঠিক এবং ভুল সম্পর্ক শনাক্ত করতে পারে তা নির্ধারণ করতে অক্ষম হয়। এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যার সাহায্যে আপনি আপনার সম্পর্কের ধরন বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক—
লভ বম্বিং: লভ বম্বিং এমন একটি আচরণ যা প্রায়শই এমন লোকদের মধ্যে দেখা যায় যাদের নার্সিসিস্টিক বা বর্ডারলাইন ব্যক্তিত্বের সমস্যা রয়েছে। প্রথমে এটি আপনার জন্য বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারে। যে, আপনার সঙ্গী আপনার সঙ্গে থাকতে এত আগ্রহী কিন্তু তারপরে জিনিসগুলো অন্যরকম অনুভব করতে শুরু করে। শুরুতে আপনার বিস্ময়কর বোধ হতে পারে। কিন্তু তারপরে হঠাৎ কোথাও একটি লড়াই শুরু হয় এবং পরিস্থিতি আপনার জন্য একেবারে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।
অবিরাম চাপ: সব সম্পর্কেরই কোনও না কোনও সময়ে দ্বন্দ্ব থাকে কিন্তু আপনি যদি ক্রমাগত মানসিক চাপ অনুভব করেন, তাহলে সেটি ভাল লক্ষণ নয়। আপনার মনে হতে পারে যে অন্যদের সঙ্গে এটা নিয়ে আলোচনা করা উচিত নয়। কারণ তারা বুঝতে পারবে না। অথবা আপনি নিজেকে বোঝাতে পারেন যে, আপনি সম্ভবত অতিরিক্ত চিন্তা করছেন, কিন্তু এই চিন্তা ভুল প্রমাণিত হতে পারে এবং এর কারণে আপনাকে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
মতের অনেক বেশি অমিল: দু’জন মানুষের সব মত কখনো এক হবে না। মতের অমিল হওয়াটাই বরং স্বাভাবিক। তবে তা যদি খুব বেশি হয় তাহলে সতর্ক হোন। পুরোপুরি ভিন্ন চিন্তার দু’জন মানুষ কখনো একসঙ্গে বেশি দূর যেতে পারে না। একটা সময় তাদের থেমে যেতেই হয়। কারণ তাদের স্বপ্নের মিল থাকে না, গন্তব্যের মিল থাকে না। তাই গল্প দ্রুত ফুরায়, পথও।
আপনার মতামতের মূল্য নেই: পারস্পরিক শ্রদ্ধা যে কোনো সুস্থ ও দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের ভিত্তি। যেকোনো পরিস্থিতিতেই উভয়ের মতামতকে সমানভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। কিন্তু আপনি যদি মনে করেন যে সে নিজের মতামতকে আপনার চেয়ে বেশি মূল্য দেয় তাহলে আরেকটু ভেবে দেখুন। কারণ এমনটা চললে সেই প্রেম খুব বেশিদিন স্থায়ী হবে না।
অন্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে: আপনার পছন্দের মানুষটি যদি আশেপাশের মানুষ যেমন বিক্রয়কর্মী, রেস্তোরাঁর সার্ভার- এদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে তবে নিশ্চিন্ত হতে পারেন। কারণ এ ধরনের মানুষেরা অন্যকে গুরুত্ব দিতে জানে। খেয়াল করুন, যদি নিজের থেকে নিম্ন পর্যায়ের কারও সঙ্গে তার আচরণ খারাপ হয় তাহলে এই সম্পর্কও বেশিদিন টিকে থাকবে না। কারণ সে অন্যকে অসম্মান করতেই পছন্দ করে।
মিথ্যা কথা: মিথ্যা বলা, বিশেষ করে সম্পর্কের শুরুতে, সম্পর্কের বড় সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। মিথ্যা বলা, কিছু লুকানো এবং বিশ্বাসঘাতকতা আপনাকে পরে সমস্যায় ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন ব্যক্তি অর্থ উপার্জন করে কিন্তু বলে যে, তার কাছে কোনও টাকা নেই, এর মানে হল যে আপনি সেই ব্যক্তির কাছে গুরুত্বপূর্ণ নন।