মানব শরীরের হাড় ও অন্ত্রের জন্য ভিটামিন ডি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এর নানা কার্যকারিতা রয়েছে। ভিটামিন ডি-এর কথা উঠলেই বেশিরভাগ মানুষ সূর্যের আলো গায়ে লাগানোর কথা ভাবেন। কিন্তু যারা শহরে থাকেন তাদের বেশিরভাগেরই সূর্যের আলো গা লাগানোর সুযোগ খুব কম। তাই বলে কি শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি থেকে যাবে? মোটেই না। বেশ কিছু সবজিতে রয়েছে ভিটামিন ডি। যা খেলে আপনি অস্টিওপোরোসিসের মতো সমস্যা, পেশিদৌর্বল্য, রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে যাওয়ার পাশাপাশি শরীরে কিছু নাছোড় অসুখের প্রকোপে পড়বেন না। তাই শরীরে ভিটামিন ডি-র ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।
ভালো থাকার জন্য ভিটামিন ডি কতখানি কার্যকরী, তা করোনা মহামারির সময়ে শিখেছিল মানুষ। কারণ তারা জেনেছিল, এটি এমন একটি ওষুধ, যা বিনামূল্যে পাওয়া যায়। যার জন্য বাড়ির বাইরে বার হতে হয় না। ঘরের লাগোয়া বারান্দা কিংবা ছাদে উঠলেই হয়।
ভিটামিন ডি হল এমন এক ভিটামিন, যার উপর মানুষের শরীর এবং মন দুয়েরই ভালো থাকা নির্ভরশীল। এক দিকে, ভিটামিন ডি হাড়-পেশির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে, আবার মনমেজাজও ভালো রাখতে পারে। ভালো থাকার জন্য তাই শরীরে ভিটামিন ডি-র ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।
দিনের প্রায় পুরোটাই অফিসে বসে কাটে যাদের, তাদের রোদ পোহানোর সময় নেই। সাপ্লিমেন্ট দিয়ে সেই অভাব পূরণ করে যায় ঠিকই, তবে খাবারের মাধ্যমেও পুষ্টি পাওয়া সম্ভব। সাধারণত দুগ্ধজাত খাবার, ডিমের কুসুম, মাখন, তৈলাক্ত মাছে ভিটামিন ডি থাকে। কৃত্রিম ভাবে ভিটামিন ডি মেশানো হয় উদ্ভিজ্জ দুধ, ব্রেকফাস্ট সেরেল, প্যাকেটজাত ফলের রসেও। তা ছাড়া কিছু শাকসবজিও আছে, যা অন্য খাবার থেকে ভিটামিন ডি গ্রহণ করার ক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
১. পালং শাক
পালং শাকের গুণের কমতি নেই। খেতেও ভালো। শীতের বাজারে পাওয়াও যায় অনেক বেশি। পালং শাকে থাকা নানা পুষ্টিগুণ শরীরকে ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে সাহায্য করে।
২. করলা
করলা ভাজা থেকে শুরু করে করলার রস— সবই খাওয়ার চল আছে। যারা খান, তাদের শরীরে অন্যান্য খাবারের থেকে ভিটামিন ডি সংগ্রহের ক্ষমতা বাড়বে।
৩. লাউ
লাউ দিয়ে চিংড়ির ঘণ্ট রাঁধা হয়। আবার রোগা হতে চান যারা, তাদের অনেকে সাতসকালে লাউয়ের রস খান। শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব মেটাতেও লাউ খেতে পারেন।
৪. রাঙা আলু
আলুর সঙ্গে যখন বাংলার পরিচয় হয়নি, তখন এই রাঙা আলুই ছিল বাঙালির ভরসা। পুষ্টিকর এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ রাঙা আলুতে সামান্য পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে।
৫. কুমড়া
কুমড়ো দিয়ে ছক্কাও হাঁকাতে পারে বাঙালি। ছুটির সকালে পরোটা বা লুচির সঙ্গে কুমড়োর ছক্কা থাকলে জমে যায় জলখাবার। কুমড়োও ভিটামিন ডি গ্রহণে সাহায্য করে।
৬. ডাঁটা
ঝোল হোক বা চচ্চড়ি, ডাঁটা চিবোতে ভালোবাসেন অনেক বাঙালি। সেই ডাঁটাতেও রয়েছে অতি সামান্য ভিটামিন ডি।
আরও পড়ুন: বাঁধাকপি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার উপায়
৭. ঝিঙে
ঝিঙে দেখলে অনেকেই নাক সিঁটকোন। তবে ঝিঙেয় থাকা অন্যান্য পুষ্টিগুণের পাশাপাশি ওই সবজি ভিটামিন ডি গ্রহণেও সহায়ক।
৮. মাশরুম
কিছু কিছু মাশরুম আছে, যা রোদে বাড়ে, তাতে সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি থেকে তৈরি হয় ভিটামিন ডি। তবে ছায়ায় বাড়লে, মাশরুমে ভিটামিন ডি তৈরি হয় না।