‘স্ট্রেস’—একটি অতি পরিচিত শব্দ হয়ে উঠেছে অনেকের জীবনে। পরিবর্তনশীল জীবনধারার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে মানসিক চাপ বা উদ্বেগের মতো বিষয়টি। প্রতিদিন এমন অনেক ঘটনা ঘটে যার ফলে আমাদের মানসিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল করে তোলে। ফলে কর্টিসল, অ্যাড্রেনালিনসহ স্ট্রেস হরমোন নিঃসৃত হয় যা রক্তচাপ, ঘুমের ধরন, রক্তে শর্করার মাত্রার পাশাপাশি হৃদস্পন্দনকেও প্রভাবিত করতে পারে। স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকেই কারণগুলো সম্পূর্ণ দূর করতে পারেন না।
শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা যেমন সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না তেমন কর্মক্ষেত্রের সমস্যাও সম্পূর্ণ দূর করা যাবে না। ফলে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়টি অতটা সহজ নয়। এক্ষেত্রে স্ট্রেস কমানোর জন্য কয়েকটি বিষয় বেশ কার্যকর। এগুলো তুলে ধরা হলো—
বই হলো বিপদের বন্ধু
স্ট্রেস কমাতে বই পড়ুন। বইকে নিত্যসঙ্গী করতে পারলে যেমন নিজের জ্ঞানের পরিধি বাড়ে, তেমনি সুস্থ, সুন্দর জীবনযাপন করা যায়। বই হলো প্রকৃত বন্ধু, বই হলো বিপদের বন্ধু- যাকে সবসময় কাছে পাওয়া যায়।
ডিপ ব্রিদিং
ওয়েবএমডি’তে প্রকাশিত একটি আর্টিকেল বলছে, ডিপ ব্রিদিং বা জোরে শ্বাস টানার ফলে আমাদের পেশিগুলো শিথিল হয়। এতে আমাদের মস্তিষ্ক ও শরীর শান্ত হয়। কয়েকবার জোরে শ্বাস টানার পাশাপাশি কুসুম ফরম পানিতে গোসল বা ঘাড় ম্যাসাজেও উপকার মেলে। শরীর ও মনের স্ট্রেস দূর হয়।
পর্যাপ্ত ঘুম
স্ট্রেস কমাতে ভূমিকা রাখে ঘুম। আর তাই প্রতিরাতে আট ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন। এতে আপনার মানসিক চাপ অনেকাংশে কমে আসবে।
হাসুন
যতবার হাসবেন ততবারই আপনার দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়বে। আর এর পাশাপাশি রক্তপ্রবাহও বাড়বে। ফলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ নতুন করে পুষ্টি পাবে। আর স্ট্রেসও কমে যাবে অনেকাংশে।
প্রাণীর পুষুন
পোষা প্রাণীর সঙ্গে থাকলে বা তার সঙ্গে খেলাধুলা করলে স্ট্রেস অনেকাংশে কমে যায়। আর এ কারণে পোষা কুকুর, বিড়াল কিংবা অন্য কোনো প্রাণী আমাদের শুধু আনন্দই দেয় না, তা দেহে হরমোনের মাত্রাতেও পরিবর্তন আনে। আর এতে সেরোটোনিন ও প্রোলেকটিন হরমোন নিঃস্বরণ বাড়ে। ফলে স্ট্রেস কমে যায়।
নীরব স্থানে থাকুন
গোলমালপূর্ণ স্থান স্বাভাবিকভাবেই আপনার মনের চাপ অনেক বাড়িয়ে দেবে। আর এ কারণে আপনার উদ্বেগও বেড়ে যাবে। তাই আপনি যদি মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে চান তাহলে নিরিবিলি স্থান বেছে নিন।
বাড়ির কাজ করুন
আপনার বাড়ির বিভিন্ন ধরনের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। এ কাজগুলো আপনাকে বিমলান্দ দেবে। আর এ কারণে মানসিক চাপও কমে যাবে।
ফলের রস পান করুন
পুষ্টিকর জুস পান করলে মানসিক চাপ কমবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন সি আপনার মানসিক চাপ কমাতে ভূমিকা রাখে। আর এ মানসিক চাপ কমানোর পেছনে কাজ করবে কর্টিসল হরমোন।
গান
আপনার গলার স্মর ভালো কিংবা খারাপ যাই হোক না কেন, গান গাইতে কোনো লজ্জা পাবেন না। কারণ গলা খুলে গান গাইলে তা আপনার মানসিক চাপ অনেকাংশে কমিয়ে দেবে।
হাঁটুন
স্ট্রেস কমানোর অন্যতম একটি উপায় হলো হাঁটা। প্রকৃতির কাছাকাছি হাঁটলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
সুস্থ শরীর
অসুস্থ শরীর স্ট্রেসের কারণ হয়। তাই নিয়মিত শরীরের সুস্থতা নিশ্চিত করুন।
খেলাধুলা ও শারীরিক অনুশীলন
শরীর সুস্থ রাখার জন্য খেলাধুলা ও শারীরিক অনুশীলন খুবই কার্যকর। এগুলো স্ট্রেস থেকেও মুক্ত থাকতে সহায়তা করবে।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/je-sob-bod-obbhas/
আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান
স্ট্রেস কমানোর অন্যতম কার্যকর উপায় এটি। কাজের চাপ ও ডিভাইস নির্ভরতার কারণে উচ্ছল আড্ডাটা আজকাল প্রায় হারিয়েই গেছে আমাদের জীবন থেকে। একটু সময় বের করে তাই আত্মীয়স্বজন ও প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন। সবাই মিলে ঘুরতে যান।