স্মার্টফোন আধুনিক সভ্যতায় বিপ্লব ঘটিয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে সব শ্রেণির মানুষের কাছেই স্মার্ট ফোন অন্যতম সঙ্গী। মোবাইল ফোন ছাড়া যেন অচল। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে স্লো হয়ে পড়ে এই যন্ত্র। তাই স্মার্টফোন ফাস্ট করার উপায় জেনে নেয়া দরকার।
স্মার্টফোন স্লো হলে ফাস্ট করার উপায় জানুন
সিস্টেম আপডেট করা
বেশিরভাগ ফোনই নিয়মিত তাদের সিস্টেম আপডেট দেয়। নিরাপত্তা বাড়াতে ও নতুন ফিচার উপভোগের জন্য এ ধরনের আপডেট দেয়া হয়। তাই ফোন স্লো হয়ে গেলে সিস্টেম আপডেট দিয়ে দেখুন। অবশ্য বেশ কদিন ধরে কিছু কোম্পানির ফোনে সিস্টেম আপডেট দেওয়ার পর নানা সমস্যা পাওয়া গেছে। তাই আগে ফোরামগুলোতে গিয়ে আপডেট সম্পর্কে জেনে নিন। তাতে নিরাপদেই আপডেট দিতে পারবেন।
ব্যাটারির যত্ন নেয়া
মোবাইল সচল রাখার অন্যতম একিট অংশ ব্যাটারি। এই ব্যাটরির যত্ন নিতে হবে। তাই মোবাইল চার্জ দেয়ার সময় ফোন চালানো যাবে না। ফোন ফুল চার্জ করা কিংবা একেবারে চার্জ শেষ করাও ঠিক না। ব্যাটারি উৎপাদনের সময় ঠিক কতবার ফুল চার্জ হওয়ার সক্ষমতা রাখে তা নির্ধারিত থাকে। ঘন ঘন ফুল চার্জ দিলে ব্যাটারির ক্ষতি হয়। সারা রাত ফোন চার্জে রাখবেন না। সচরাচর চার্জ ৯০ শতাংশ হলেই চার্জ থেকে খুলে নিন ও ২০ শতাংশে কমে এলে চার্জে দিন।
অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ না রাখা
মোবাইল রিসেট দেয়ার পর কিংবা নতুন কেনার পর সবসময় কিছু অ্যাপ থাকে যা আপনার কাজে আসে না। এদের বলা হয়- ব্লোটওয়ার। মূলত স্মার্টফোন কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত আয়ের জন্য কিছু গেমস বা অতিরিক্ত অ্যাপ দিয়ে থাকে। কিছু কিছু অ্যাপ আন-ইনস্টল করা যায়, আবার কিছু কিছু অ্যাপ আন-ইনস্টল করাই যায় না। যেগুলো আন-ইনস্টল করা যায়, সেগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলুন। এমনকি মোবাইলে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ রাখারই প্রয়োজন নেই।
সিস্টেম স্টোরেজ ফুল করা যাবে না
মোবাইলের সিস্টেম স্টোরেজ ৯০ শতাংশের বেশি ভরাটা রাখা উচিত না। বিশেষ প্রয়োজনে এসডি কার্ড কিনে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে এসডি কার্ড যেন ভালো মানে হয়। না হয় মোবাইল ফোন স্লো হয়ে যেতে পারে।
অ্যাপ্লিকেশন ক্যাশ পরিষ্কার রাখা
ফোনে ক্যাশ ফাইল জমে থাকে। প্রায় প্রতিটি অ্যাপ বিশেষত গুগলের ইউটিউব, জিমেইল, ফেসবুক ও ভারী গেমের অ্যাপ ক্যাশ জমা করে। এসব অ্যাপ্লিকেশন ক্যাশ ফাইল ফোনকে স্লো করে দেয়। সিস্টেম স্টোরেজে গেলে সহজেই এ ক্যাশ ফাইল দূর করা যায়।
অ্যাপ্লিকেশনের যত্রতত্র পারমিশন বন্ধ করা
ফোনে নতুন অ্যাপ ইনস্টল করার পরই নানা পারমিশন চায়। এতে প্রাইভেসি যেমন ঝুঁকির মধ্যে থাকে, তেমনই ব্যাটারির চার্জও কমে যায়। এছাড়া ফোন স্লো হয়ে পড়ে। তবে এখন এন্ড্রয়েডের নতুন সংস্করণে শুধু অ্যাপ ব্যবহারের সময় পারমিশন কার্যকর হবে, এমন সেটিং চালু আছে। অ্যাপ ইনস্টল করে তাই ভেবেচিন্তে পারমিশন দিতে হবে।
অযথা ডাটা ও ওয়াইফাই চালু না রাখা
ফোনে সবসময় ডাটা বা ওয়াইফাই চালু রাখবেন না। যখন প্রয়োজন হবে, তখনই এদের ব্যবহার করুন। এ ছাড়াও ব্যাকগ্রাউন্ড ডাটা নিষ্ক্রিয় রাখুন। তাতে ফোন স্লো হবে না।
বিজ্ঞাপন দেয় এমন অ্যাপ না রাখা
অনেক কোম্পানির ফোনে বিজ্ঞাপনে ভরে যায় অতিষ্ঠ হওয়ার জো। এই বিজ্ঞাপনগুলো ফোন স্লো করে দেয়। তবে স্মার্টফোন কোম্পানির দেয়া রমে বিজ্ঞাপন পুরোপুরি থামানো না যায় না। তবে অ্যাপের কিছু পারমিশন বন্ধ করলে বিজ্ঞাপন থেকে কিছুটা রেহাই মিলবে। এছাড়াও এমন অ্যাপ ব্যবহার করবেন না যেগুলো প্রচুর বিজ্ঞাপন দেখায়। যদি ফোনের রমে সমস্যা থেকেই থাকে, তাহলে কাস্টম রম বা স্টক এন্ড্রয়েড ব্যবহার করুন।
ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট
ফোন যদি একেবারেই স্লো হয়ে যায় কিংবা ওপরের সব কিছু প্রয়োগের পরও সমাধান না হলে ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট ছাড়া উপায় নেই। এতে ফোন আবার প্রাথমিক অবস্থায় যেমন ছিল, তেমন হয়ে যাবে। ফ্যাক্টরি রিসেটের পর ওপরের টিপসগুলো মেনে চললে ফোন নিয়ে বড় সমস্যায় পড়া লাগবে না। এজন্য নিজেকে সচেতন থাকতে হবে।