২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ রেলওয়ের ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের অপর এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেলের আয় ছিল ১ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা আর ব্যয় ছিল ৩ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। এ অর্থ বছরে রেলের মোট লোকসান হয় ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। তবে এ ব্যয়ের মধ্যে রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ ছাড়া রেলের পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী-আরএনবি, স্কুল, হাসপাতালের ব্যয় বাড়ায় রেলের ব্যয় বেড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, রেলের যাত্রীবাহী ট্রেনের দৈনিক গড় আয় যেখানে সাড়ে তিন লাখ টাকা, সেখানে একটি মালবাহী ট্রেনের গড় আয় প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা। তবে ৩৫০টির অধিক যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করলেও মালবাহী ট্রেন মাত্র ২০-২৫টি চলাচল করে বিধায় রেলের আয় কিছুটা কম হচ্ছে।
জিল্লুল হাকিম বলেন, দেশের মোট ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪৩টি জেলায় রেল সংযোগ রয়েছে। বাকি ২১টি জেলাকে রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করা প্রক্রিয়াধীন।
সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের অপর এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, রেলওয়ে একটি সেবামূলক সংস্থা। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯৯টি নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপিতে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২৫টি বিনিয়োগ প্রকল্প এবং ৩টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প অর্থাৎ মোট ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। গত এক যুগে সরকার দেশে ৯৪৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ৩৪০ দশমিক ১৭ কিলোমিটার মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর, ১ হাজার ৩৯১ দশমিক ৩২ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্বাসন/পুনঃনির্মাণ, ১৪৮টি নতুন স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ, ২৩৮টি স্টেশন বিল্ডিং পুনর্বাসন/পুনঃনির্মাণ, ১ হাজার ৬২টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ, ৭৯৪টি রেলসেতু পুনর্বাসন/পুনঃনির্মাণ, ১৩৭টি স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
তিনি জানান, রেলের সেবা আরও আধুনিক করার জন্য বর্তমান সরকারের পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে রেলের সক্ষমতা বাড়ানো, রেললাইন পুনর্বাসন ও নতুন রেললাইন নির্মাণ, রোলিং স্টক সংকট নিরসন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে নতুন রেলসংযোগ স্থাপন, সিগনালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, নতুন ট্রেন চালু করা, রেল ডিজিটালাইজেশন, এ ছাড়াও ২৮টি নতুন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।