ডিম হলো সহজলভ্য এবং কম-বেশি সবার কাছেই জনপ্রিয় একটি খাবার। এটিকে প্রোটিন এবং পুস্টি উপাদানের পাওয়ার হাউসও বলা হয়। শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি, হাড় শক্ত করতে ও মেধার বিকাশে ডিম খুবই কার্যকর। এতে আরও আছে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করে। আর কুসুমে থাকা ভিটামিন ডি হাড়ের জন্য ভালো। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অপুষ্টি, রক্তাল্পতা ও ডায়াবেটিসের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খাওয়া উচিত।
ডিমের পুষ্টিগুণ নিয়ে কারও মনেই সংশয়ের অবকাশ নেই। তারপরও অনেকেই বুঝতে পারেন না, বয়স চল্লিশ পেরিয়ে গেলে নিয়মিত ডিম খাওয়া ঠিক কি না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘আমাদের খাদ্য তালিকায় উপস্থিত খাদ্যগুলোর মধ্যে ডিম প্রোটিনের অন্যতম সেরা একটি উৎস। একটি সিদ্ধ ডিমে ছয় গ্রামেরও বেশি প্রোটিন থাকে, স্নেহপদার্থ থাকে ৫ গ্রামের একটু বেশি। পাশাপাশি এতে থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি। কোলেস্টেরল থাকে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম।’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডিমের উপকার হরেক রকমের। বিশেষত বয়স্ক মানুষদের পেশীর ক্ষয় পূরণ করতে ডিম অত্যন্ত কার্যকর। দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন না থাকলেই পেশীর গঠনে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে ডিম পূরণ করতে পারে সেই ঘাটতি। তা ছাড়া ডিম সহজপাচ্যও বটে। এতে লিউসিন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা পেশী গঠনে অতি প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি ডিমে থাকে ভিটামিন ডি ও ওমেগা-৩-ফ্যাটি অ্যাসিড।
ডিমের এত উপকারিতা সত্ত্বেও অনেকেই আছেন যারা ৪০ বছর পেরিয়ে গেলে কোলেস্টেরলের কথা ভেবে ডিম খাওয়া বন্ধ করে দেন। এ ব্যাপারে আধুনিক গবেষকদের একাংশ বলছেন, সুস্থ মানুষদের ক্ষেত্রে পরিমিত পরিমাণে ডিম খাওয়া খুব একটা বিপজ্জনক নয়। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, একজন সুস্থ ব্যক্তি খাদ্যের মধ্য দিয়ে মোটামুটি দৈনিক ৩০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল গ্রহণ করতে পারেন। কাজেই রোজ একটি করে ডিম খেলে বিশেষ অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
গবেষকরা বলেন, ৫০ বছর পেরিয়ে গেলে সপ্তাহে তিনটি ডিম খাওয়া যেতে পারে। যারা তবুও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না তারা কুসুম বাদ দিয়ে ডিম খেতে পারেন।
তবে মনে রাখবেন, সকলের শরীর সমান নয়। কাজেই কোনো অসুস্থতার লক্ষণ থাকলে বা পুষ্টি সংক্রান্ত কোনো দ্বিধাবোধ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডিম খাওয়াই বিচক্ষণতার পরিচয়, বলেন গবেষকরা।