বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক (এআই) শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য ১২ কোটি ডলারের তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই। সম্প্রতি জাতিসংঘের ফিউচার সামিটে তিনি এ ঘোষণা দেন। খবর টেকক্র্যাঞ্চ।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিশ্বব্যাপী এআইয়ের ব্যাপক বিস্তার হয়েছে। কিন্তু ব্যবহারকারীদের দক্ষতা সমান না হওয়ায় সব ক্ষেত্রে এআই পরিষেবা পাওয়ার সাফল্য সমান নয়। এমন অবস্থায় বিশ্বজুড়ে ‘এআই বিভাজন’ বাড়ছে।
সম্মেলনে সুন্দর পিচাই বলেন, ‘আমরা বৈশ্বিক এআই বিভাজন এড়াতে চাই। এ লক্ষ্যে ১২ কোটি ডলারের ‘গ্লোবাল এআই অপরচুনিটি ফান্ড’ গঠন করছে গুগল। এর মাধ্যমে স্থানীয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ও এনজিওর সহযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন সম্প্রদায়কে এআই বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।’
এআইকে ‘এযাবতকালের সবচেয়ে রূপান্তরমূলক প্রযুক্তি’ হিসেবে আখ্যা দেন সুন্দর পিচাই। এআই কীভাবে টেকসই উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করেছে তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এ প্রযুক্তি মানুষকে নিজস্ব ভাষায় তথ্যে প্রবেশাধিকার পেতে সহায়তা করছে। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারেও গতি দিয়েছে। এছাড়া জলবায়ু বিপর্যয় শনাক্তকরণ ও সতর্কতা প্রদান এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করছে।’
তবে জলবায়ুর ওপর এআইয়ের প্রভাব নিয়ে আলোচনা না করলেও এর মাধ্যমে সৃষ্ট ঝুঁকির বিষয়টি স্বীকার করেন সুন্দর পিচাই। তিনি বলেন, ‘ডিপফেকের মতো বিষয়গুলো এআইয়ের অগ্রযাত্রার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে।’
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিজস্ব শিল্প ও প্রযুক্তি সুরক্ষায় অন্য দেশের প্রযুক্তি বা পণ্য গ্রহণে সীমাবদ্ধতা আরোপ করছে। সুন্দর পিচাই এ ধরনের সুরক্ষাবাদ নীতির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এ নীতি প্রতিরোধ করা না গেলে সামনের দিন এআই বিভাজন আরো বাড়বে এবং এর সুবিধাগুলো সংকুচিত হয়ে পড়বে।’
তিনি এআইয়ের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস ও বিশ্বজুড়ে সুরক্ষাবাদ নীতি প্রতিহত করতে বুদ্ধিদীপ্ত উপায়ে বাজার নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান।
এদিকে এআই অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ৩ হাজার কোটি ডলারের তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট ও মার্কিন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকরক। এ তহবিলের আওতায় বিশ্বব্যাপী ডাটা সেন্টার ও বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরিতে অর্থায়ন করা হবে।
বিশ্বব্যাপী এআইয়ের উত্থানের কারণে বিদ্যুৎ খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কেননা ডিপ লার্নিং ও বৃহৎ পরিসরের ডাটা প্রসেসিংয়ের জন্য ব্যবহৃত এআই মডেলগুলো প্রচুর কম্পিউটেশনাল শক্তি ব্যবহার করে। এতে বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণও বেড়ে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে মাইক্রোসফট ও ব্ল্যাকরক।
অন্যদিকে প্রয়োজনীয় কম্পিউটিং সক্ষমতা অর্জন করতে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো হাজার হাজার চিপ ক্লাস্টারে যুক্ত করে ডাটা প্রক্রিয়াকরণের ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। ফলে বিশেষায়িত ডাটা সেন্টারের চাহিদাও বেড়েছে।
ব্ল্যাকরক ও মাইক্রোসফট জানিয়েছে, ‘গ্লোবাল এআই ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট পার্টনারশিপ’ নামের এ বিনিয়োগ প্রকল্প এআই সরবরাহ চেইন ও বিদ্যুতের উৎস বাড়াতে কাজ করবে। প্রকল্পের সাধারণ অংশীদার হবে আবুধাবিভিত্তিক বিনিয়োগ কোম্পানি এমজিএক্স। এতে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ প্রদান করবে এআই চিপ সংস্থা এনভিডিয়া।
কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, ঋণ প্রদানসহ এ অংশীদারত্ব মোট ১০ হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ