একেবারে ছোট বয়স থেকে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত যেকোনো সময়ে ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে শিশুদের। প্রথম দিকে অনেক ক্ষেত্রে আসল সমস্যা ধরা পড়ে না। তবে কয়েকটি উপসর্গ জানান দেয় যে, শিশু অ্যালার্জির সমস্যায় আক্রান্ত। সেগুলো কী? শিশুর ত্বকে যদি ধারাবাহিকভাবে ফুসকুড়ি, চুলকানির সমস্যা চলতেই থাকে, তা হলে সতর্ক হতে হবে। এছাড়াও ক্রমাগত হাঁচি বা শ্বাসকষ্ট হলেও সতর্ক থাকতে হবে। বাড়িতে কারো যদি অ্যালার্জি থাকে, তাহলে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়ার সাথে সাথে শিশুকে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
বর্তমানে শিশুকে রোগমুক্ত রাখতে মা-বাবারা বেশি সতর্কতা অবলম্বন করেন। যার ফলে, শিশুদের শরীরে ‘ইমিউনিটি সিস্টেম’ ঠিক মতো কাজই করে না। খুব সহজেই শিশুরা নানা ধরনের অ্যালার্জি অ্যাটাকের শিকার হয়। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা তাদের শরীরে তৈরিই হয় না।
অ্যালার্জির ভিন্নতা রয়েছে। অ্যালার্জির কিছু উৎস ঘরের ভেতরেই রয়েছে, অন্যগুলো বাইরে। সারাবছরই ঘরে জমা ধুলা, কোনো বিশেষ খাবার, আরশোলা জাতীয় প্রাণির সংস্পর্শে অ্যালার্জি আক্রান্ত হতে পারে শিশু। তার প্রিয় পোষা প্রাণির লোম থেকেও ছড়াতে পারে অ্যালার্জি। এছাড়া বাতাসে ভাসমান ফুলের রেণু, ধূলিকণা থেকে অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন খাবার থেকেও শিশুদের অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দুধ, ডিম, বাদাম, চিংড়ি, কাঁকড়ার মতো খাবার থেকে অ্যালার্জি হতে পারে।
অনেকের ধারণা, অ্যালার্জি হলে শুধু ত্বকে র্যাশ বের হয়। এ ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত। চিকিৎসকদের মতে, অ্যালার্জির নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন সর্দিজ্বর আসতে পারে আপনার শিশুর। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে ‘হে ফিভার’। হতে পারে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও। অনেকের সমস্যা দেখা দেয় শুধু চোখে।
তবে সামান্য সতর্ক থাকলে আপনার শিশুকে অ্যালার্জি থেকে বাঁচাতে পারেন আপনিই। জানুন কয়েকটি পদ্ধতি :
বাড়িতে কোনও পোষা প্রাণি থাকলে, শুরু থেকে অবশ্যই তার সাথে খেলতে দিন শিশুদের। এর ফলে শিশুর শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি হবে।
শিশু যেন বিকেলে খোলা মাঠে বেড়ানোর বা দৌড়ঝাঁপ করে খেলার সুযোগ পায়। অযথা তাকে বাড়িতে বসিয়ে রাখবেন না।
ছোট থেকেই সব ধরনের খাবার, ফল ও সব্জি খাওয়ানো অভ্যাস করান শিশুকে। বয়স বাড়লে ফর্মুলা দুধের বদলে গরুর দুধ খাওয়ান তাকে। এর ফলে, খাদ্যজাত অ্যালার্জির হাত থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকবে সে।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মা ভিটামিন ডি সেবন করলে শিশুদের মধ্যে অ্যালার্জির প্রবণতা কম হয়। শিশুদের জন্মের পর থেকেই মায়ের বুকের দুধ অত্যন্ত জরুরি। এর ফলে অনেক ধরনের অ্যালার্জির হারই কমে যায় শিশুদেহে।
শিশুদের কাছাকাছি কোনোভাবেই ধূমপান উচিত নয়। এমনকি, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মাকেও ধূমপান না করার পরামর্শ দেয় চিকিৎসকেরা। বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেলেও অ্যালার্জির সমস্যা হয়।
ছোট থেকেই শিশুকে বেশি করে পানি খাওয়ার অভ্যাস করান। খাবারে আদা, গোলমরিচ, হলুদের মতো মশলার ব্যবহার বেশি করে করুন।