সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তীব্র সংঘর্ষের পর বিদ্রোহী বাহিনী হামা শহরে প্রবেশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে বেসামরিকদের সুরক্ষা এবং নগরযুদ্ধ এড়াতে তাদের বাহিনীকে শহরের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছে। এই ঘটনা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের জন্য আরেকটি বড় আঘাত।
বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, তারা শহরে বিদ্রোহীদের প্রবেশের বিষয়টি স্বীকার করছে এবং বেসামরিকদের জীবন বাঁচাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে, তারা বিদ্রোহীদের শহরে প্রবেশের বিষয়টি অস্বীকার করেছিল।
বিদ্রোহী কমান্ডার হাসান আবদুল ঘানি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, তার যোদ্ধারা মঙ্গলবার থেকে হামা শহর ঘিরে রেখেছিল। বুধবার রাতে তীব্র সংঘর্ষের পর তারা শহরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। এ সংঘর্ষে সিরিয়ান সেনাবাহিনীর পাশাপাশি তাদের পক্ষে রুশ যুদ্ধ বিমান অংশ নেয়।
আল-জাজিরার রিপোর্টার রেসুল সেরদার জানান, হামা দখল বিদ্রোহীদের জন্য একটি বড় অগ্রগতি। তিনি আরও জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে তারা সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পো এবং এখন চতুর্থ বৃহত্তম শহর হামার নিয়ন্ত্রণ নিলো।
উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় নিজেদের অবস্থান থেকে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে বিদ্রোহীরা প্রথমে আলেপ্পো দখল করে। পরে মঙ্গলবার হামার উত্তরে একটি কৌশলগত পাহাড় দখল করে তারা পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে শহরের দিকে অগ্রসর হয়।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, বিদ্রোহীরা হামা শহরকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। বুধবার রাতে বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়। বিশেষ করে হামার উত্তরের জাবাল যায়ন আল-আবিদিন এলাকায় এই সংঘর্ষ সবচেয়ে বেশি হয়।
সংগঠনের প্রধান রামি আবদুর রহমান জানান, সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের অগ্রগতি ঠেকাতে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।
হামা শহরটি আলেপ্পো থেকে দামাস্কাস পর্যন্ত সড়কের এক-তৃতীয়াংশ অংশে অবস্থিত। শহরটি দখল করলে বিদ্রোহীরা হোমস শহরের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে। হোমস একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল যা সিরিয়ার প্রধান অঞ্চলগুলোকে একত্রিত করে।
এছাড়া হামা দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের কাছাকাছি যেগুলোর একটি হলো- খ্রিস্টানদের বাসস্থান মুহরাদা এবং অন্যটি ইসমাইলি মুসলিমদের বাসস্থান সালামিয়া।হামা প্রদেশটি লাতাকিয়া উপকূলীয় অঞ্চল সীমানায় অবস্থিত।
২০১১ সালে শুরু হওয়া বিদ্রোহের পর থেকেই হামা সরকারি নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এই শহর দখল বিদ্রোহীদের পুনরুজ্জীবিত প্রতিরোধের প্রমাণ দিচ্ছে। এটা দামাস্কাস এবং এর মিত্র রাশিয়া ও ইরানের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হতে পারে।