চাঁদপুরের অঙ্গীকার স্মৃতিসৌধ
একদিনের ডে ট্যুর হিসেবে ঢাকা থেকে চাঁদপুর ভ্রমণ বেশ আরামদায়ক ও উপভোগ্য। বিশেষ করে পরিবারের সবাই কিংবা বন্ধুবান্ধব মিলে লঞ্চে করে চাঁদপুর যাওয়ার মজাই আলাদা। নদীর টাটকা ইলিশের স্বাদ নিতে অথবা একটা দিন নিজেদের মতো করে কাটাতে চাইলে চলে যেতে পারেন ঢাকা থেকে মাত্র চার ঘণ্টা দূরত্বে অবস্থিত চাঁদপুরে।
কী কী দেখবেন
পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত চাঁদপুর জেলা। চাঁদপুর যাবেন আর বড়স্টেশন মোলহেড বা তিন নদীর মোহনায় ঘুরতে যাবেন না, তা হতেই পারে না! এ ছাড়াও আছে অঙ্গীকার স্মৃতিসৌধ, রক্তধারা স্মৃতিসৌধ, ইলিশ চত্বর, ডিসির বাংলো। চাঁদপুরের ঐতিহাসিক স্থাপনা দেখতে যেতে পারেন পর্তুগিজ দুর্গ, রূপসা জমিদার বাড়ি, মঠখোলার মঠ কিংবা বোয়ালিয়া জমিদার বাড়ি।
বড়স্টেশনের রক্তধারা স্মৃতিসৌধ
এ ছাড়াও সেখানে আছে জেলা প্রশাসকের বাংলোয় নাগলিঙ্গম গাছ, নয়টি ভাস্কর্য, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন, বোটানিক্যাল গার্ডেন, শিশু পার্ক, মেঘনা-পদ্মার চর, ফাইভ স্টার পার্ক, গুরুর চর ইত্যাদি। এগুলোর কোনোটি দেখতেই আপনার খুব বেশি সময় লাগবে না। তাই একদিনের মধ্যেই মোটামুটি সব জায়গা দেখে ফেলা সম্ভব।
যদি হাতে সময় থাকে ঘুরে আসতে পারেন ‘মিনি কক্সবাজার’ খ্যাত হাইমচর থেকে। বর্তমানে পর্যটকদের আনাগোনায় এই ‘ছোট্ট কক্সবাজার’ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বড়স্টেশনের কাছ থেকে ট্রলারে জনপ্রতি ৮০-১০০ টাকা ভাড়ায় সেখানে যেতে পারবেন।
হাতে কিছুটা সময় থাকলে চাঁদপুর সদর থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত রূপসা জমিদার বাড়ি থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। চাঁদপুর সদর থেকে ৫০০-৬০০ টাকা ভাড়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ করে ঐতিহাসিক এই জমিদারবাড়িতে যেতে পারবেন।
চাঁদপুরের ইলিশের আড়ত
কী খাবেন
চাঁদপুর জেলা বিখ্যাত ইলিশের জন্য। তাই সেখানে গিয়ে টাটকা ইলিশের মচমচে ভাজা খাবেন না, তা কি হয়? ইলিশ খেতে চাইলে চাঁদপুর বড়স্টেশন থেকে ট্রলার বা নৌকায় করে মাত্র ৩০ মিনিটে রাজরাজেশ্বর চর চলে যান। সেখানে খাওয়ার হোটেল সবই ভালো। তবে রাজরাজেশ্বর চরের ঘাট থেকে অল্প দূরে অবস্থিত মনু মিয়ার হোটেলে ইলিশ ভাজা, ইলিশ মাছের ডিম কিংবা ইলিশের তরকারির স্বাদ নিতে ভুলবেন না।
চাঁদপুরের বড়স্টেশনের কাছেই আছে ইলিশ বাজার। তাই বিকেলের সময়টা নদী মোহনায় কাটিয়ে সন্ধ্যায় চলে যান ইলিশ বাজারে। ইলিশ খাওয়ার পাশাপাশি পছন্দমতো রূপালি ইলিশ কিনে সঙ্গে নিয়ে আসার সুব্যবস্থাও আছে সেখানে।
ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরেই তৈরি হয় বিখ্যাত ওয়ান মিনিটের আইসক্রিম। চাঁদপুর শহরের কালীবাড়ি এলাকা সংলগ্ন প্রেসক্লাব সড়কে ‘ওয়ান মিনিট’ নামের মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে এই আইসক্রিম পাওয়া যায়। ইলিশ খাওয়ার পর এই মজাদার আইসক্রিম খেয়ে আসতে ভুলবেন না। শুধু আইসক্রিম নয়, চাঁদপুরের মিষ্টিও খুব সুস্বাদু।
চাঁদপুরের লঞ্চ ঘাট
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে চাঁদপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ ভালো। ঢাকার সদরঘাট থেকে চাঁদপুরগামী লঞ্চে করে খুব সহজেই চাঁদপুর যাওয়া যায়। সবচেয়ে ভালো হয়, রাত ১২টার লঞ্চে করে চাঁদপুর এসে সারাদিন ঘুরে পরের দিন রাত ১২টায় লঞ্চে ঢাকা ফেরত এলে।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/sojne-tea/
এ ছাড়াও সায়েদাবাদ থেকে বাসযোগেও চাঁদপুর যেতে পারবেন। কমলাপুর থেকে ট্রেনে লাকসাম নেমে সেখান থেকেও চাঁদপুরে যাওয়া যায়। তবে সবাই মিলে একদিনের ট্যুরে যেতে লঞ্চে যাওয়াই বেশি মজার। নদীর বুকে ভেসে ভেসে ইলিশের শহর চাঁদপুরে যে কখন পৌঁছে যাবেন, টেরই পাবেন না।