অনেক আগে থেকেই আমাদের দেশে বাল্যবিবাহ প্রচলিত। বর্তমানেও যে এই অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়েছে তাও জোর গলায় বলা যাবে না। জাতিসংঘের সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বেধে দেয়া যে আঁটটি লক্ষ্যমাত্রা(শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাল্যবিবাহ ইত্যাদি) ছিল তার অধিকাংশ লক্ষ্যমাত্রাই বাংলাদেশ অর্জন করতে সমর্থ হয়েছে(অনেক ক্ষেত্রেকিন্তু বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয় নি।
আপাতদৃষ্টিতে মনে ‘হতে পারে যে, শুধুমাত্র নিম্নবিত্ত শ্রেণীর প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষেরাই অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারীদের বিয়ে করে থাকে কিন্তু বিস্ময়কর তথ্য হল অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারীদের বিবাহের হার উচ্চবিত্ত থেকে নিম্ন-মধ্যবিত্ত সর্বত্রই প্রায় সমান।
একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশে ৬৬% মেয়েদের ১৮ বছর হওয়ার হবার পূর্বেই বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়! কিন্তু পুরুষেরা কেন তাদের চেয়ে কম বয়সী মেয়েদের সাথেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তা কি আমরা ভেবে দেখেছি? চলুন খুঁজে বের করি কারনগুলো-
১। আধিপত্য- সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, পুরুষেরা সর্বত্র আধিপত্য বিস্তারে অভ্যস্ত। আর তাদের এই আধিপত্য বিস্তারের যে চর্চা তার বৃত্ত থেকে তাদের পরিবার এবং পরিবারের সদস্যরাও বাদ যান না।
আর আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে স্ত্রীদের উপর স্বামীদের আধিপত্য বিস্তার অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ঘটনা। তাই, অল্প বয়সী মেয়েদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ‘হতেই তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
২। অস্বস্তিবোধ- বিস্ময়কর হলেও সত্যি, পুরুষেরা তার সমবয়সী মেয়েদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে অস্বস্তিবোধ করে। পুরুষের সমযোগ্যতা সম্পন্ন নারীদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না- এই ধারণাই পুরুষকে তার চেয়ে অনেক কম বয়সী নারীকে বিয়ে করতে উদ্বুদ্ধ করে।
৩। কুঁড়িতেই বুড়ি- আমাদের দেশে পুরুষেদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সচ্ছলতা লাভ করতে করতে বয়স প্রায় ৩০ এর কোঠায় গিয়ে পৌঁছে। আর আমাদের সমাজের প্রচলিত ধারণা যে, মেয়েরা কুঁড়িতেই বুড়ি হয়ে যায়।
তাই, স্বাভাবিকভাবেই স্বামী ও স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান আমাদের সমাজে অনেক বেশি।৪। ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা- পুরুষদের একটি বদ্ধমূল ধারণা যে, তারা যখন বৃদ্ধ হয়ে যাবে তখন তাদের পরিচর্যা করবার মত কেউ থাকবে না।
এমনকি সন্তানেরাও তাদের পরিচর্যা করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। তাই, কম বয়সী স্ত্রীই এই সমস্যার সমাধান। তাদের ধারণা স্ত্রী রা তাদের যথাযথ পরিচর্যা করতে কখনই অস্বীকৃতি জানাবে না।