দাঁত শরীরের একটি অপরিহার্য অংশ। নিয়মিত এর যত্ন না নিলে অনেক রোগব্যাধি সৃষ্টি হতে পারে। তাই দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখার কিছু উপায় নিম্নে বলা হলো।
* ফ্লস আগে না দাঁত ব্রাশ আগে : প্রথমে দাঁত ফ্লসিং করে নিলে কার্যকরভাবে দাঁত ব্রাশ করা যায় এবং দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবার সহজেই অপসারণ করা যায়। ফ্লস করার পর দাঁত ব্রাশ করার সময় টুথব্রাশের ব্রিসল গাম লাইনের সঙ্গে ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে স্থাপন করে নিতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে নিয়ম অনুযায়ী দাঁত ব্রাশ করতে হবে। সব শেষে এন্টিব্যাকটেরিয়াল মাউথওয়াশ দিয়ে কুলকুচি করলে মুখের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
* টুথপিক ব্যবহারে যত্নবান হতে হবে : যদি আপনার কাছে ডেন্টাল ফ্লস না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে একটি টুথপিক দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাদ্যকণা পরিষ্কারে সাহায্য করবে। কিন্তু টুথপিক ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। টুথপিকে জোরে চাপ প্রয়োগ করার ফলে মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমনকি আরও খারাপ কিছু হতে পারে। গাম লাইনের নিচে টুথপিক ভেঙে যেতে পারে যা আপনাকে বিভিন্ন ঝুঁকির মুখে ফেলবে। নিয়মিত টুথপিক ব্যবহার করবেন না। শুধু কোন কারণে যদি ডেন্টাল ফ্লস পাওয়া না যায় তবে অতি সাবধানতার সঙ্গে টুথপিক ব্যবহার করতে পারেন।
* টুথব্রাশ পরিবর্তন করতে হবে : টুথব্রাশের ব্রিসলগুলো এক সময় ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে পারে এবং কার্যকর থাকে না। প্রতি ৩ মাস পরপর টুথব্রাশ পরিবর্তন করে নিতে হবে। ইলেকট্রিক টুথব্রাশের ক্ষেত্রে টুথব্রাশের হেড পরিবর্তন করে নিতে হবে।
* সাদা দাঁতের জন্য পনির খেতে পারেন : পনিরে বিদ্যমান কেজিন (কেজিন বা ছানা জাতীয় প্রোটিন) এবং হুই প্রোটিন (ছানা অপসারণের পর অবশিষ্টাংশ ঘোল নামে পরিচিত) দাঁতের এনামেল ভালো রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া পনিরে রয়েছে দাঁতের গঠনকারী উপাদান ক্যালসিয়াম। খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে যা আপনার শরীরকে সাহায্য করে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে। কিছু ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার হলো-দুধ, ডিমের কুসুম এবং মাছ।
* বেকিং সোডা দিয়ে দাগ দূর করুন : যদি আপনি কফি, রেড ওয়াইন অথবা অন্যান্য দাঁতে দাগ সৃষ্টিকারী খাবার এবং পানীয় ভালোবাসেন তাহলে সেক্ষেত্রে বেকিং সোডা দিয়ে এক মাস দাঁত ব্রাশ করতে পারেন। তারপর ভালোভাবে কুলকুচি করতে হবে। যদি বেকিং সোডা সরাসরি ব্যবহার করলে আপনার মাড়িতে প্রদাহ বা জালাপোড়া সৃষ্টি হয় তাহলে বেকিং সোডা সমৃদ্ধ টুথপেস্ট ব্যবহার করতে পারেন অথবা বেকিং সোডা পুরোপুরি পরিহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে বিকল্প পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে।
* কিছু ফল দাঁত উজ্জ্বল করতে পারে : স্টবেরিতে প্রাকৃতিকভাবে দাঁত সাদা করার উপাদান আছে যদিও স্টবেরি লাল রংয়ের। আপেল, পিয়ার্স, গাজর খেতে হবে যা দাঁত ও মুখের জন্য উপকারী। এসব খাবার দাঁত উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
* এসিড রিফ্লাক্স বা বুক জ্বালা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে : যেসব খাবার এবং পানীয় এসিড রিফ্লাক্সকে বাড়িয়ে দিতে পারে সেগুলো হলো-চকলেট, অ্যালকোহল, ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন-সোডা, কফি এবং চা। এ ছাড়া রসুন, পেঁয়াজ, দুগ্ধ জাতীয় খাবার, টমেটো, সাইট্রাস ফল, মিন্ট এবং স্পাইসি, ফ্যাটি অথবা ফ্রাইড খাবার আপনার এসিড রিফ্লাক্স সৃষ্টি করতে পারে অথবা বৃদ্ধি করে থাকে।