বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ডাটা এন্ট্রির বেশ চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও এখনকার মানুষেরা ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার ক্ষেত্রে ডাটা এন্ট্রিকে লাভজনক হিসেবে বেছে নিয়েছে। ডাটা এন্ট্রির কাজ অফলাইন (Offline) অথবা অনলাইন (Online) দুইটি মাধ্যমেই করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে কম্পিউটার ব্যবহার সম্পর্কে সামান্য পরিমাণ জ্ঞান থাকতে হবে।
কারণ, ডাটা এন্ট্রির মূল কাজ হচ্ছে কম্পিউটারের মাধ্যমে ফিজিক্যাল ডাটা (Physical data) গুলোকে ডিজিটালি এন্ট্রি (Digitally entry) করা। বর্তমানে অফলাইন এবং অনলাইন কোম্পানিগুলোতে একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর বাধ্যতামূলক প্রয়োজন হয়। তাই ডাটা এন্ট্রির কাজ করে টাকা ইনকাম করার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। ডাটা এন্ট্রির কাজ আমরা পার্টটাইম বা ফুল টাইম হোক দুইভাবেই করতে পারবো।
এজন্য আমরা আজকে পুরো আর্টিকেল জুড়ে ডাটা এন্ট্রি কি, ডাটা এন্ট্রি কত প্রকারের হয়, ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু করবেন যেভাবে এবং ডাটা এন্টির অপারেটর হবে কিভাবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। আসুন আর দেরি না করে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ডাটা এন্ট্রি কি
ডাটা এন্ট্রি হচ্ছে একটি ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ অথবা মোবাইলের সাহায্যে টাইপিং এর মাধ্যমে যেকোনো হার্ডকপি থেকে সকল ডাটা গুলোকে সফট কপিতে স্থানান্তর করা এবং ডাটা গুলোকে নির্দিষ্ট স্থানে যথাযথভাবে জমা করা। সাধারণত ডাটা গুলোকে একটি কম্পিউটারের সাহায্যে বিশেষ সফটওয়্যার এর মাধ্যমে ডাটাগুলোকে আপডেট করা হয়। এখানে ডাটা (Data) বলতে যেকোনো ডকুমেন্ট হতে পারে, টেক্সট, অডিও ক্লিপ, ভিডিও ক্লিপ, ইমেজ, অবজেক্ট ফাইল ইত্যাদি।
একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে (Data entry operator) দিয়ে এ সকল ডাটা এন্ট্রির কাজ করানো হয়। একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে আপনিও কাজ করতে পারবেন যদি আপনার মধ্যে কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক ধারণা এবং সামান্য টাইপিং দক্ষতা থাকে। ডাটা এন্ট্রি হচ্ছে এমন একটি Industry এখানে কর্মচারী দ্বারা ডাটা গুলোকে Edit , Modify, Add এবং Verify করানো হয়। আশা করছি টাটা এন্ট্রি কি এর সম্পর্কে বেসিক ধারণা পেয়েছেন।
আধুনিক সময়ে যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে কম্পিউটার মাধ্যমের প্রয়োজন হয়। এজন্য দিন দিন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের প্রয়োজন বেড়েই চলেছে। যার ফলে ডাটা এন্ট্রি করে ইনকামের সুযোগও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও সবচেয়ে জনপ্রিয় বা অধিক প্রচলিত ডাটা এন্ট্রির কাজ হচ্ছে মাইক্রোসফট এক্সেল (microsoft excel) সফটওয়্যারে ডাটা এন্ট্রির কাজ। চলুন ডাটা এন্ট্রি কত প্রকার হয় সেটি জেনে নেয়া যাক।
এম এস এক্সেল ডাটা এন্ট্রি (MS-excel data entry): সকল ধরনের কোম্পানির ক্ষেত্রে Customer review, Sales, Purchase, Feedback ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের টাকাগুলোকে এক্সেল সফটওয়্যার এর ব্যবহার করে একটি ডিজিটাল ডাটাবেজ (Digital database) তৈরি করা।কারন, MS-excel এর সাহায্যে ডাটা এন্ট্রির কাজগুলো অনেক সহজতর হয়।
সাধারণ ডাটা এন্ট্রি (General data entry): সাধারণ ডাটা এন্ট্রি বলতে মূলত বিভিন্ন ধরনের ডাটা সোর্স (Data source) ফাইল রয়েছে যেমন কোনো কাগজ বা অন্য কিছু থেকে ডিজিটাল ফরমেটে লিপিবদ্ধ করা। ফিজিকালি ডাটা গুলোকে ডিজিটালি এন্ট্রি করা।
অফলাইন ডাটা এন্ট্রি (Offline data entry): অফলাইন ডাটা এন্ট্রির ক্ষেত্রে যে সকল হার্ডকপি ডাটা রয়েছে সে সকল ডাটা কে ডিজিটাল ফরমেটে রূপান্তর করা হয়। এক্ষেত্রে কোনো ডাটাকে কম্পিউটারের সফটওয়্যারে লিপিবদ্ধ করা হয়।
অনলাইন ডাটা এন্ট্রি (Online data entry): অনলাইন ডাটা এন্ট্রির কাজ হচ্ছে যেসব ডাটা এন্ট্রির কাজ বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বা পোর্টালে কাজ করা হয়। এক্ষেত্রে সাধারণত রিসোর্স ফাইলগুলো (Resource file) থেকে যেকোনো ওয়েবসাইটে তথ্যগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হয়।
একাউন্টিং ডাটা এন্ট্রি (Accounting data entry): বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির অফিসগুলোতে একাউন্টিং সম্পর্কিত তথ্যগুলো বারবার চেক করার প্রয়োজন হয়। এজন্য সেই কোম্পানিগুলো একজন একাউন্টিং ডাটা এন্ট্রি পদে চাকরির নিয়োগ দিয়ে থাকে। এই কাজের জন্য সাধারণত অফিসের সকল তথ্য স্প্রেডশিট (spreadsheet) বা যেকোনো সুবিধাজনক ফরমেটে রূপান্তর করার কাজ করতে হয়।
স্পেলিং চেকিং (Spelling checking): স্পেলিং চেকিং ডাটা এন্ট্রির কাজে বিভিন্ন আর্টিকেল বা অন্যান্য টেক্সট কন্টেন্ট গুলোর বানান, উপন্যাস. শব্দ ইত্যাদি ভালোভাবে চেক করে সেগুলো সঠিক করতে হয়। এই ধরনের ডাটা এন্ট্রির মূল কাজ হচ্ছে লেখাগুলোর মধ্যে যে সকল ভুল রয়েছে সেগুলো খুজে বের করে আবার সেগুলোকে সঠিক করা।
ট্রান্সলেশন (Translation): এ ধরনের ডাটা এন্ট্রি কাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্যান্য যে সকল ভাষায় থাকা voice file রয়েছে সেগুলোকে লোকাল ভাষায় পরিণত করা। ভয়েস ফাইল ছাড়াও ট্রানসলেশন ডাটা এন্ট্রি অনেক কাজ রয়েছে যেমন বিভিন্ন বই এবং আর্টিকেল বা টেক্সট ফাইলগুলোকে অন্য ভাষায় কনভার্ট করা।
ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু করবেন যেভাবে (How to start data entry work)
বর্তমানে ডাটা এন্ট্রির কাজ সব ধরনের মানুষ সহজেই করতে পারবে। ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতে আপনার ভালো ডিগ্রী থাকতে হবে না। শুধু আপনাকে বেসিক কম্পিউটার সম্পর্কে ধারণা এবং কিবোর্ড টাইপিং স্কিল জানতে হবে। তবে বর্তমান সময়ে high quality সম্পন্ন কোম্পানিগুলোতে চাকরি পাওয়ার জন্য গ্র্যাজুয়েট হাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে আপনি দুটি মাধ্যম কে বেছে নিতে পারেন প্রথমটি হচ্ছে Online data entry work এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে Offline data entry work । তোমাদের বর্তমানে এই দুটি মাধ্যমেই আপনি মোটা অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
Online data entry work: বর্তমান আধুনিক যুগে ঘরে বসে অনলাইন প্লাটফর্ম এর সাহায্যে মানুষ প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করছে। অনলাইন প্লাটফর্মের মধ্যে অনলাইন ডাটা এন্ট্রি কাজটি অনেক লাভজনক মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইন্টারনেটে ডাটা এন্ট্রি র কাজ হিসেবে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট রয়েছে যেমন fiverr, upwork, freelancer, guru ইত্যাদি। এ সকল সাইট গুলোতে গিয়ে নিয়ম অনুযায়ী একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে আপনি অনলাইনে ডাটা এন্ট্রির কাজগুলো করতে পারবেন।
Offline data entry work: অফলাইন ডাটা এন্ট্রির কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানি (Company) ফার্ম (Firm) অর্গানাইজেশন (Organization) ইত্যাদির কাছে যেয়ে general emplyee হিসেবে কাজ করতে হবে। এছাড়াও অনলাইনে তুলনাই অফলাইনে ডাটা এন্ট্রির কাজ প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। অনলাইন এবং অফলাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা রয়েছে সেটি হচ্ছে অনেকেই আপনাকে একটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডাটা এন্ট্রির কাজটি শেষ করার চুক্তি করবে। সেই সময় মোতাবেক কাজ শেষ করতে পারলে চুক্তি হিসেবে টাকা দেবে।
ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হবেন কিভাবে
ডাটা এন্ট্রির সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে যে কেউ এ কাজটি শিখে নিজের ইনকামের পথ চাইলেই খুলতে পারবে। কিন্তু ডাটা এন্ট্রির মাধ্যমে থেকে নিজেকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে অবশ্যই দক্ষতার উন্নতি করার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। একজন সুদক্ষ ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হতে হলে নিম্নে দেওয়া বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে।
Increase your computer skills: ডাটাই এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতে প্রথমত কম্পিউটার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। অতি জরুরী কম্পিউটার প্রোগ্রাম কিভাবে ব্যবহৃত হয় সে বিষয়ে জানতে হবে। এজন্য Microsoft Excel, Word, Microsoft Word ইত্যাদি এসকল কম্পিউটার প্রোগ্রাম সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।
A better typist: ডাটা এন্ট্রির সকল কাজ মূলত টাইপিং এর সাথে জড়িত। আপনাকে অবশ্যই কিবোর্ড টাইপিং স্পিডের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য প্রতিনিয়ত আপনাকে নির্ভুলভাবে কিবোর্ড টাইপিং প্র্যাকটিস করাটা অতি গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে টাইপিং প্র্যাকটিস লেশন রয়েছে সেগুলোর সহায়তায় আপনি আপনার নিজের টাইপিং স্পিড অতি দ্রুত করতে পারবেন।
Improve your language skills: পরিশেষে ডাটা এন্ট্রির কাজে ইংরেজি ভাষার অনেক ব্যবহার রয়েছে। এজন্য আপনাকে ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি জরুরী অন্যান্য ভাষার সাথে আপনার ধারণা থাকতে হবে।
ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু করবেন যেভাবে
আমরা ইতিমধ্যে ডাটা এন্ট্রি কি? ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু করবেন যেভাবে এই সম্পর্কে জানা হয়ে গিয়েছে। আশা করছি, এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি এই বিষয়ে অল্প কিছু হলেও ডাটা এন্ট্রি কত প্রকারের হয়? ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু করবেন যেভাবে এই সম্পর্কে জানতে সক্ষম হয়েছেন। যদি এ বিষয়ে আপনাদের মাঝে কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে, তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।
https://bangla-bnb.saturnwp.link/%e0%a6%b8%e0%a7%8b%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%a1%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be-%e0%a6%85%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%89%e0%a6%a8/
ডাটা এন্ট্রি কি? ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু করবেন যেভাবে? এই সম্পর্ক নিয়ে লেখা আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট ও আপনার পরিচিতদের শেয়ার করতে ভুলবেন না। স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।